পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভীর বিবিধ প্রসঙ্গী—স্থাপত্য বিদ্যালয়

  • ήΦα

পরোক্ষভাবে রাজস্ব আদায়, ও দ্বিতীয়, স্বদেশে প্রস্তুত মালের সহিত প্রতিযোগিতায় যাহাতে বিদেশের মাল অল্প মূল্যে বিক্ৰী না হইতে পারে তাহার চেষ্ট অর্থাৎ দেশীয় শিল্প সংরক্ষণ। শুদ্ধ কত দূর অবধি রাজস্বের জন্য এবং কোথায় শুদ্ধবৃদ্ধির ফলে সংরক্ষণ-কাৰ্য্য আরম্ভ হয়, তাহা হঠাৎ বলা চলে না । অবশু শুষ্ক অধিক হারে বসান সত্ত্বেও যদি বিদেশী মাল দেশে আমদানি হইতে থাকে তাহা হইলে সংরক্ষণ-কাৰ্য্য মুসাধিত হইতেছে না বুঝা যায় এবং শুষ্কলন্ধ অর্থকে রাজস্ব হিসাবেই ধরা উচিত। সংরক্ষণমূলক শুল্ক বসাইলে তাহা হইতে রাজস্ব অধিক আসা উচিত নহে ; কারণ মঞ্জস্ব অধিক হওয়ার মানে, যে বিদেশী জিনিষের উপর গুৰু বসান হইয়াছে সেই মাল বেশী পরিমাণে দেশে প্রবেশ করিতেছে ও বিক্ৰী হইতেছে। কাগজের উপর যে শুল্ক আছে তাহ সংরক্ষণের দোহাই দিয়া উচ্চ হারেই আছে । সুতরাং এ কথা অবশ্যমান্য সে ভারতে যে সকল রকমের কাগজ এখনও প্রস্তুত হয় না এবং যেগুলি অদর ভবিষ্যতে প্রস্তুত হইবে বলিয়া বোধ হয় না, সেই সকল রকমের কাগজের উপর শুষ্ক ততটুকুই রাপা উচিত যতটুকু শুধু রাজস্ব বাবদ ক্রেতার নিকট আদায় কর স্বায়সঙ্গত । খবরের কাগজের কাগজ, অর্থাৎ যেমন প্রবাসীর বিজ্ঞাপনে যে-জাতীয় কাগজ ব্যবহৃত হয় এবং তার চেয়ে নিম্ন শ্রেণীর কাগজ, এ দেশে প্রস্থত হয় না। অধিক মূল্যের ছবি ছাপিবার কাগজ, মলাটের বহুবিধ কাগজ ইত্যাদি নান৷ প্রকার কাগজ এ দেশে প্রস্তুত হয় না । যে-ক্ষেত্রে কাগজের ল্যের উপর পুস্তকাদি পাঠের ব্যয় বহু পরিমাণে নির্ভর করে, সে-ক্ষেত্রে, রাজস্বের কিছু ক্ষতি হইলেও, জ্ঞানবিস্তারের জস্থ কাগজের উপর শুদ্ধ কমান উচিত। ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে সাক্ষাৎ লাভ অনেক সময় পরোক্ষ ভাবে তীয় লোকসানে দাড়াইয়া যায়। রাজস্ব এরূপ ভাবে কদাপি সংগ্রহ করা উচিত নয়, যাহাতে জাতীয় উন্নতি কোন প্রকারেও বাধা পায় । o আমাদের দেশে যে-সকল কাগজের কারখান। আছে জহাদের অবস্থা বেশ ভাল । বিদেশী মাল শুদ্ধবর্জিত ভাবে বা অল্প শুষ্ক দিয়া আমদানি হক্টলে ইহার নিজেদের তৈয়ারী কাগজের দাম কিছু কমাইতে বাধ্য হইবে । ইহাদের চালন-কাৰ্য্য যদি কিছু পরিমাণ ব্যয়সংক্ষেপ করিয়া করা হয়, এবং এই সকল কারবারের অংশীদারগণ যদি বর্তমান অপেক্ষা অল্প লাভে সস্তুষ্ট থাকেন, তাহা হইলে আরও অল্প মূল্যে কাগজ বেচিয়াও এই সব কারখানা সচ্ছলতার সহিত চলিতে থাকিৰে। যেখানে দেশের গরিব ক্রেতা পুস্তকাদি অধিক মূল্যে ক্রম্ব করিতে বাধ্য হইতেছে, সেখানে সংরক্ষণনীতির স্থাঙ্গে অধিক লাভ অথবা অধিক ব্যয় করিবার কাহাৰুও কোন কালাত অধিকার নাই। এই সকল বিষয় বিচার করিয়া কাগজের রকমারী গুষ্কের হ্রাস-বৃদ্ধির আলোচন . হওয়া উচিত। ধনিক বণিক ও জনসাধারণ তিনের মধ্যে জনসাধারণের মঙ্গল সৰ্ব্বাগ্রে স্থাপিত হওয় উচিত । ম. *s স্থাপত্য বিদ্যালয় প্রাচীন কালে ভারতীয় স্থাপত্য ভারতের গৌরবের বস্তু ছিল। এখনও আমাদের দেশের পুরাতন মন্দির, মসজিদ, রাজপ্রাসাদ, কেল্লা, কবর প্রভৃতির ভিতর অসাধারণ স্থাপত্য-কৌশলের নিদর্শন পাওয়া যায়। কিন্তু তাজমহল, কোনারক, শ্রীরঙ্গম, দিলওয়ার। আজকাল আর নিৰ্ম্মিত হয় না। কারণ ভারত স্বাধীনতা হারাইবার সঙ্গে সঙ্গে নিজের শিল্পগৌরবও হারাইয়া বসিয়াছিল । বিগত প্রায় দুই শত বৎসর ধরিয়া ভারতবর্ষে যে সকল ইমারত গড়িয়া উঠিয়াছে তাহার মধ্যে প্রায় সবগুলিই নিকৃষ্ট পাশ্চাত্য ধরণের, শিল্পের দিক দিয়া মিশ্রিত- বা অজ্ঞাত- জাতীয় । কারণ, ভারতে ইউরোপীয় প্রভাব বিস্তারের প্রথম শতাধিক বৎসর, ইউরোপের কোন উচু দরের স্থপতি এদেশে আসিয়। কাৰ্য্য করেন নাই । ইংলণ্ডের অতি সাধারণ লোকেরাই আসিয়া এদেশে পাশ্চাত্য শিল্প, বিজ্ঞান, প্রভৃতির ব্যবহার ও চর্চা প্রচার আরম্ভ করেন । শিল্পে আবার ইংলণ্ড ইউরোপে উচ্চ স্থান পায় না। ফলে এ দেশে পাশ্চাত্য স্থাপত্যের ভাল রকম কিছু নমুনা গড়িয়া উঠে নাই। এ অবস্থায় গামাদের নিজেদের শিল্প অনাদরে অৰ্দ্ধমুত অবস্থায় পড়িয়া রহিল । ইংরেজ শিক্ষকও না পাওয়ায়, ভারতীয় সন্তোজাত “কনট্রাকটর”গণ নানা রীতির স্থাপত্যশিল্পের অবাধ মিশ্রণে যে সকল সৰ্ব্বরূপগুণবর্জিত প্রাসাদ আটালিকা ইত্যাদিতে ভারতের নগরগুলি পূর্ণ করিয়া দিতে লাগিলেন, তাহদের যথার্থ কদৰ্য্যতা আমরা মাত্র কিছুদিন হইল সম্যক রূপে উপলব্ধি করিতে পারিতেছি । কারণ বর্তমান শতাব্দীতে ভারতের ঐতিহাসিকগণ আবার নিজেদের নষ্ট শিল্পের গুণাগুণ আলোচনা করিতে আরম্ভ করিয়াছেন। ভারত নুতন করিয়া নিজের শিল্পকলা-সাহিত্য প্রভৃতিতে গৌরব অল্পভব করিতে আরম্ভ করিয়াছে। ইংরেজ প্রণোদিত মেকি-পাশ্চাত্য চিত্র, ভাস্কৰ্য্য, স্থাপত্য ভারতবর্ষ হইতে বিদায় লক্টতে সারস্থ করিয়াছে । স্থাপত্যের ক্ষেত্রে যে-সকল লোক ভারতের লুপ্ত গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করিতে ব্যগ্র হইয়াছেন, শ্ৰীযুক্ত শ্ৰীশচন্দ্র সটোপাধ্যায় তাহদের মধ্যে অন্যতম। অল্পদিন হইল স্থাপত্য বিদ্যালয় সংক্রান্ত একটি সভায় শ্রীশ বাবু বলেন, যে, বিদ্যালয়ে শুধু যে ছাত্রদিগকে শিক্ষা দেওয়া হইবে তাহা নহে। বিদ্যালনের শিক্ষকরা স্থাপত্যের নগ্ন তৈয়ার করিয়া দেওয়া এবং নিৰ্ম্মাণকাৰ্য্য পৰ্য্যবেক্ষণ করা প্রভূতি কাৰ্য্যও গ্রহণ করিবেন। তাহ