পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অণশ্বিন মবেত সঙ্গীতে পাড়াখানি তখন মুখরিত, এমন সময় সে —এবং মজিয়া গেল••• —তুমিই বল তবে,.টিল্পনি কাটুতে খুব ওস্তাদ, ধৈর্ঘ্য যদি থাকে একটুও ! —ক্রটি মার্জনীয়। আচ্ছ, বলতে থাক । তার পর হাস্ত-পরিহাসের ভিতর দিয়া পারুল আনুপূৰ্ব্বিক সমস্তই বলিল, বিধদা’র নিল্পজ্ঞ ব্যবহার সম্বন্ধে তাহার স্বীয় অভিজ্ঞতা এবং পল্টর নিকট অবগত তাহদের গাছপ্তাকাহিনী। উপসংহারে জিজ্ঞাসা করিল-বাবাকে বলে এ বাড়ি ছাড়তে হবে না কি, কালো বেরালে যা তাক কবুছে ? গল্পীর কণ্ঠে নিৰ্ম্মল বলিল—বেরালটার কিন্তু শিকার-জ্ঞান আছে বলতে হবে, ইদুরেই তাক করেছে, ছুচোতে নয়। মূথ ঠাড়ি’ করিয়া পারুল কহিল—তুমি ভাবছ এই সল শুনলে আমি রাগ করব ? মোটেই না । সে মেয়েই নষ্ট আমি । —তার পরিচয় ফোলা গালেই পাচ্ছি, তা শিকারী বেরালের ছানাটিকে অত প্রশ্রয় দিচ্ছ কেন ? বাচ্ছার সন্ধানে সে যে সৰ্ব্বদাই হানা দেবে । তা ছাড ঐটুকু বাচ্ছার দ্বারাও ত দৌত্যকাৰ্য্য স্বসম্পন্ন হবে না ? —দৌত্য না হাতী, তুমি থাম ত ! —আমি থামলেই কি সব দিক থেমে যাবে ? একদিন ছেলেটি এসে যখন বলবে, আজ আমাদের বাড়ি যেতে হবে, তথন ? —ওর বাপের ক্ষমতা, মুখ ভেঙে দেব না ! —আঃ হা, ঐখানেই ভূল করছ পারু। ওর বাপেরই ত ক্ষমতা, ছেলের আবার ক্ষমতা কি ! তা ছাড়া দৃত অবধ্য । অপ্রতিভ পারুল কথাবাৰ্ত্তার মোড় ফিরাইবার চেষ্টায় বলিল—যাও যাও, ও সব নোংরা কথা বাদ দাও! এখন তোমার খবর সব বল। তোমাদের কলেজের মিষ্টার পল দেখছি আজকাল মাসিকের পৃষ্ঠায় খুব ‘ফ্রয়েড ছড়াচ্ছেন. শাস্ত্রী-মশায়ের বিয়ে হয়ে গেল আবার ? আমি ছাই দেখতেও পেলাম না,-ললিতবাবুর কেমন বরাত দেখ, ছেলে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভাইস-প্রিন্সিপাল হ’য়ে গেলেন ।------ শিশুর দেশত্য ግዬግ আমোদিনীর জন্য ধৰ্ম্মতলার ডাক্তারকে ডাক দিবার অঙ্গীকার বিধদা বেমালুম ভুলিয়া গিয়াছে। কিন্তু তাহার শয়নকক্ষখানির পঙ্কোদ্ধার সে মনোযোগ সহকারেই করিয়ছে । যথেষ্ট পরিশ্রম ও যথাসাধ্য অর্থব্যয় করিয়৷ কক্ষথনিকে দর্শনোপযোগী করিয়৷ তুলিবার চেষ্ট। তাহার প্রশংসনীয়। দোকান যাইতে আজকাল তাহার প্রায়ই বিলম্ব হইয়া যায়। সেদিন সকালে দুই-তিনটি ডাক দিবার পর যখন ওবাড়ির জানালা হইতে পণ্ট, মুখ বাড়াইল, তখন বিধ দা’র বিস্ময়ের সীমা রহিল না, এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা অনহভূতপূৰ্ব্ব শিহরণ তাহার সর্বশরীরে থেলিয়া গেল ; বলিল—ও, তুমি যে আজকাল ভারী মাতব্বর লোক হয়েছ দেখছি, বাড়ি ডিঙ্গিয়ে আলাপ করতে শিখেচ্চ ? তা এখন বাড়ি এস, তোমাকে থাষ্টয়ে দিয়ে আমি বেরুব যে ? পণ্ট আসিল। ও-বাড়ি সম্বন্ধে বিধদারও কয়েকটি প্রশ্নের সমাধান হইয়া গেল । ও-বাড়িতে তাহার মাসীমা, মসীমার মা ও বাবা কয়েকটি দাসদাসীসহ বাস করেন। মধ্যে মাত্র দুই দিন আর একটি লোককে সে দেখিয়াছিল, কিন্তু তাহার পরিচয় জানিতে পন্টর কৌতুহল হইলেও সাহস হয় নাই। চশমাপরা লোকটির অবস্থিতিতে পাটুর ও বাড়িতে প্রায়শঃ গতিবিধিও সংযত হইয়া গিয়াছিল। যাহাঁই হউক, পন্টুর মসীমা তাহাকে খুবই ভালবাসে, প্রত্যহ কত লজের দেয়, একটি সিংহী বানাইয়া দিবে বলিয়াও তাহার নিকট অঙ্গীকারবদ্ধ। বিধ দা আরও জানিতে পারিল যে মাসীমা পন্টর নিকট এ বাড়ি সঙ্গন্ধেও দুই-একটি প্রশ্ন মধ্যে মধ্যে করিয়া থাকে, যথা পন্টুর মাতাকে বড় একটা দেখা যায় না কেন, পন্টুর পিতা কি করেন ? - অপরিসীম স্নেহে পণ্টকে ক্রোড়ের নিকট টনিয়া বিধা জিজ্ঞাসাবাদ করিতেছিল, জিজ্ঞাসা করিল—আমি কি করি জিজ্ঞেস করতে তুমি কি বলেছিলে ? —বলেছিলাম বাবার একটা ছাতার--- প্রচণ্ডু ধাক্কায় ক্ষুদ্র শিশুটিকে ঠেলিয়া দিয়া বিধ দা গর্জাইয়া উঠিল—বাঁদর কোথাকার! এত বড় ধিঙ্গী হ’লেন, একটু খবরাখবরও যদি ঠিক ঠিক রাখে । আমার ছাতার দোকান আছে, না ? দশটা পাঁচটা ছাতার দোকান করতে যাই