পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন হিরণ্যকশিপুকে নখ দ্বারা দীর্ণ করিয়া ফেলিলেন। বামন কপটাচারে বলিকে ছলনা করিয়া তাহাকে রসাতলে প্রেরণ করিলেন, কিন্তু বলি যে দুষ্কৃতকারী এমন কথা কোথাও লিখিত নাই। পরশুরাম একবিংশতি বার ধরাতল নিঃক্ষত্রিয় করিয়াছিলেন, সাধুদিগকে পরিত্রাণ করিবার পরিচয় কোথাও পাওয়া যায় না। রামচন্দ্র ৰ্তাহার দর্পহরণ করেন। শ্রীরামচন্দ্র যথার্থ অবতার। কোটি লোকে তাহাকে ঈশ্বর বলিয়া উপাসনা করে, রামলীলায় প্রতি বৎসর তাহার জীবনচরিত অভিনীত হয়। রামরাজ্য স্বৰ্গতুল্য। রাম সাধুকে রক্ষা ও দুষ্টকে দমন করিয়াছিলেন। শ্ৰীকৃষ্ণ ও বলরাম দুই ভাই, যুগপৎ দুই অবতারের আবির্ভাব। হলধরের কীৰ্ত্তির মধ্যে স্মরণ হয় তিনি হলদ্বারা যমুনা নদীকে আকর্ষণ করিয়াছিলেন। বুদ্ধদেবের তুল্য অহেতুকী দয়ার অবতার ভূমণ্ডলে আর কেহ আবিভূত হন নাই। নিজের সম্প্রদায় হইতে তিনি বৈদিক যজ্ঞ ও পশুবলি একেবারে বিদায় করিয়া দিয়াছিলেন । জয়দেবে— নিন্দসি যজ্ঞবিধেরহই শ্রতিজাতম, সদয় হৃদয় দর্শিত পশুঘাতমূ, কেশব ধৃত ৰুদ্ধশরীর জয় জগদীশ হরে। হিন্দু দেবতাদিগের মধ্যে বুদ্ধের আর স্থান নাই, বৌদ্ধ হিন্দুর অস্পৃশ্য। ভবিষ্যতে আর এক অবতার আবিভূত হইবেন । ইহুদী, বৌদ্ধ, খ্ৰীষ্টীয়ান ও মুসলমানদিগের মধ্যেও এইরূপ বিশ্বাস আছে। দশম অবতার কন্ধি, তিনি মেচ্ছসমূহকে নিধন করিবার নিমিত্ত অবতীর্ণ হইবেন — ম্লেচ্ছ নিবহনিধনে কলয়সি করবালমূ, ধুমকেতুমিব কিমপি করাল, কেশব ধৃত কঙ্কিশরীর জয় জগদীশ হরে। ধূমকেতুর স্থায় করাল করবাল—এই তুলনা স্মরণীয়। ztērpi szw Hwt-R Efs–Vengeance is mine, I will repay ভগবদগীতা উপনিষৎ বলিয়া কথিত হইয়াছে। আর্য্য ধৰ্ম্মগ্রন্থাবলীর মধ্যে ইহাই বহুল-প্রচলিত এবং সৰ্ব্বজনবিদিত । বেদ প্রায় নাম মাত্র, কোটি লোকের মধ্যে এক জনের আছে কি না সন্দেহ। উপনিষদসমূহ অত্যন্ত কঠিন ও দুৰ্ব্বোধ, স্ত্রীকৃষ্ণ—সারথি ও শিক্ষণগুরু ግግጬ অতিঅল্পসংখ্যক লোকই পাঠ করিয়া থাকে। পুরাণ বৃহদাকার সহজবোধ্য গ্রন্থাবলী, কিন্তু পুরাণের সংখ্যা অষ্টাদশ । ভগবদগীতা প্রায় প্রত্যেক হিন্দুরই গৃহে আছে এবং উহার শ্লোকসমূহ সৰ্ব্বত্র পঠিত ও ব্যাখ্যাত হয়। ইহা খোরদে অবন্ত, বাইবেল এবং কোরাণের ন্যায়। গীতার বাণী শ্ৰীভগবানের শ্ৰীমুখনিঃস্থত, উহার জ্ঞান গভীর। যে বিচিত্র অবস্থায় গীত কথিত হয় তাহ ব্যতীত স্মরণ করিতে হয় যে উহার প্রথম শ্রোতা এক ব্যক্তি মাত্র এবং একমাত্র উদ্দেশ্যে এই অতুলনীয় শিক্ষা প্রদত্ত হয়। অর্জন বহুসংখ্যক সেনার সেনাপতি, তিনি যুদ্ধ করিতে অসম্মত হইলেন। শ্ৰীকৃষ্ণ র্তাহাকে এই শিক্ষা দিয়া যুদ্ধে প্রবৃত্ত করিলেন। জগতের সকল ধৰ্ম্মে যে-সকল শিক্ষা সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ তাহ প্রথমে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিকেই প্রদত্ত হয়। বুদ্ধদেব কেবল শিষ্যদিগকে শিক্ষা প্রদান করিতেন। অপর লোকের সহিত তিনি আবশ্যকমত বিচারে প্রবৃত্ত হইতেন, কিন্তু তিনি বহুলোকের সমক্ষে ধৰ্ম্ম প্রচার করিতেন না। যীশুখ্ৰীষ্টের সৰ্ব্বোত্তম শিক্ষা The Sermon on the Mount, $fety of fossibiot প্রদত্ত হইয়াছিল। বহুসংখ্যক তাহার অনুবর্তী হইয়াছে এবং বিশাল জনতা দেখিয়া যীশুখ্ৰীষ্ট তাঁহাদের অজ্ঞাতে পৰ্ব্বতে আরোহণ করিলেন। সেখানে তিনি নিশ্চিন্ত হইয়া উপবিষ্ট হইলে এবং দ্বাদশ শিষ্য সমবেত হইলে তিনি তাহাদিগকে সম্ভাষণ করিয়া শিক্ষা দিতে প্রবৃত্ত হইলেন। কিন্তু ভগবদগীত। কথিত হইবার কালে শ্রোতা ও শিষ্য একমাত্র অৰ্জুন। অগণিত সৈন্যদিগের মধ্যে এক ব্যক্তিও এক বর্ণ শুনিতে পায় নাই। এখন কোটি কোটি লোক সেই শিক্ষা আবৃত্তি ও অভ্যাস করিতেছে। কেবল গীতা বিবৃত করিয়া শ্ৰীকৃষ্ণের সারথ ও শিক্ষকতা সমাপ্ত হয় নাই। প্রাচীন আৰ্য্য কবিগণের কল্পনা ও জ্ঞানশক্তি অসীম এবং তাঁহাদের স্বষ্টির তুলনা নাই, কিন্তু র্তাহাদের মানবচরিত্রের অভিজ্ঞতাও অপরিমেয়। র্তাহারা জানিতেন মানুষ সকল অবস্থাতেই মানুষ, স্বয়ং ঈশ্বরও মানবশরীর পরিগ্রহ করিলে মানুষের সহজাত দুৰ্বলতা হইতে নিস্তার পাইবার উপায় নাই। মনুষ্য-আকারে কেহ দোষশূন্ত হইতে পারে এ কথা তাহারা মানিতেন না। রক্তমাংস অস্থি মেদের শরীর নিৰ্ব্বিকার হইতে পারে না। মহাভারতে