পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oمس6aug প্রবাসী NeBR মূৰ্ত্তির সমাগম হইল। তাহারা সকলেই স্বৰ্য্যকাস্তের ভাইভগিনী । আগন্তুক ডাকিল—এস সব, এদিকে এস । আমি তোমাদের কাক হই । লজ্জা তাহার তেমন বেশী করিতেছিল না । আগন্তুকের জাহান শুনিয়া যেটুকু সঙ্কোচের ভাব ছিল তাহাও কাটিয়া গেল । সাহস করিয় রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ করার মত তাহার চটু করিয়া চণ্ডীমণ্ডপে আসিল । আগন্তুক তখন তাহার ক্যাম্বিসের ব্যাগ খুলিয়। তাহার উদরের মধ্য হইতে কতকগুলি লজঞ্চুস ও বিস্কুট বাহির করিয়া সকলকে ভাগ করিয়া দিল । তাহাদিগকে নাম জিজ্ঞাসা করাতে, এক জন বলিল সাবু, অপরে বালি, তৃতীয় শটি। আগন্তুক হাসিয়া বলিল -শিশুখাদ্য আর বড়-একটা বাকী রাখ নি, উপেন ? মেলিন্সফুড, হুরলিক্স ইত্যাদি বুঝি অনাগতদের মধ্যে আছেন ? উপেন বলিল --না, ওঁরা সব শহরের ছেলেমেয়েদের জন্ত । এ সব গ্রামে এখনও ওঁদের প্রবেশ নিষেধ । আগন্তুক একটু চিন্তার ভান করিয়া বলিল—তাহলে ? উপেন বলিল-নামের জন্য আটুকাবে না, ভাই। এখনও এরারুট আছেন। তার পর আছেন কুইনিন—সেও পল্লীগ্রামের এক প্রকার খাদ্যবিশেষ । এ সব নাম কি সাধে রেখেছি ভাই । এরও একটা ইতিহাস আছে। আগন্তুক বলিল –তাই বল। কি ইতিহাস ? উপেন বলিল—বল কেন ভাই, পেট থেকে পড়তেই বড়টিকে ম্যালেরিয়ায় ধরল। ডাক্তার বললেন, শুধু দুধ দেবেন না। সাৰু ধরান, সঙ্গে একটু দুধ মিশাবেন। পাছে এ শিক্ষাটুকু ভুলে যাই, সেজন্য দ্বিতীয়টির নাম সাবুই রাখা গেল এবং তাকে সাবুই খাওয়ানো হতে লাগল। ম্যালেরিয়া থেকে সে সম্পূর্ণ অব্যাহতি পাকু স্নার না পাক, শারীরিক শক্তি থেকে অনেকখানি নিষ্কৃতি পেল। আমার ভায়রাভাই হোমিওপ্যাথ। সে উপদেশ দিলে ছেলেদের বার্লি খাওয়ালে সহজে হজম হবে, বলও পাবে ; ম্যালেরিয়াও হবে না। তারই ফলে হ’ল বালি । তার পর খেয়ালের বশে ঐ ভাবেরই নাম রাখা হতে লাগল। এই হ’ল নামের ইতিহাস। এখন জামা জুতো ছাড়। হাত-মুখ লজ্জা কি ? ধুয়ে জল খাঁও , তার পর দুপুরে আশ মিটিয়ে গুঞ্জ করা যাবে’খন । আগন্তুক বলিল—হাত-মুখ ধোয়াই আছে। এখন একটু চা খাওয়াও ভাই ; রাত জেগে আসছি। খাবার এখন থাক। চা খেয়ে চল একটু গা-টা ঘুরে আসি। হ্যা, ভাল কথা । চা খাও ত ? উপেন। চা খাই নে, তবে জোগাড় ক’রে রাখতে হয় । আগন্তুক তখন স্বৰ্য্যকাস্তের পানে চাহিয়া বলিল—যাও ত স্বৰ্য্যকাস্ত, মায়ের কাছ থেকে চা নিয়ে এস । লজঞ্চুস, বিস্কুট, তার উপর সাধুনাম। স্বৰ্য্যকাস্ত খুব খুশী হইয়াই ভিতরে গেল । মিনিট-দশেক পরে স্বৰ্য্যকান্ত চা লইয়৷ ফিরিল। সঙ্গে সঙ্গে সাবু, টাটুক মুড়ি ও নারিকেলের নাড়ু লইয় আসিল । উপেন বলিল—এই আমাদের বিস্কুট, ভাই। কিছু মনে ক'রো না । এক মুঠা মুড়ি খাইয়৷ চায়ে চুমুক দিয়া আগন্তুক বলিল—এই বিস্কুট খেয়েই যদি দেশে রয়ে যেতাম তোমার মতন, ভাই ! উপেন উদাস হাসির সহিত বলিল---সেই পুরাতন কথা— নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে যত স্বথ আমার বিশ্বাস । চা পান শেষ করিয়া দুই বন্ধু বাহির হইয়া গেল । ૨ আগন্তকের নাম শৈলেন । এই গোপালপুরেই বাস। এখানকার মাইনর-স্কুলে পড়িয়া দুই জনেই দুই ক্রোশ হাটিয়া নৈহাটি গিয়া এন্টান্স স্কুলে ভৰ্ত্তি হয়। উপেন এন্টু দি পাস করিয়া পাঠ সমাপ্ত করে। শৈলেন কলিকাতায় গিয়া বি-এ ও ল পাস করিয়া আত্মীয়ত-স্থত্রে পশ্চিমে দু-এক জায়গায় বসিবার চেষ্টা করিয়া শেষে আবার ওকালতি আরম্ভ করিয়াছে। . শৈলেন আজ দশ বৎসর পরে দেশে আসিয়াছে। দেশে আপনার জন আর কেহ নাই। সামান্ত জমিজম বাহা