পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন ৰঙ্গদেশে ক্ষয়রোগ ՊՆա Տ আমাদের দেশে কোনও কালেই নাই, কিন্তু আমরাই অতিরিক্ত সভ্যতার দ্বার অভাব আনয়ন করিয়াছি । আমাদের এখন সৰ্ব্বক্ষণ বেশবিন্যাস করিয়া থাকিতে হয়, পাছে অসভ্যতা প্রকাশ পায়। বাড়ির ভিতরে খালি গায়ে থাকিতে পারি। কিন্তু কলিকাতার অধিকাংশ বাড়ির অভ্যন্তরে বেশীক্ষণ স্বৰ্য্যালোক প্রবেশ করে না । কিন্তু তাহা করিলেই বা, স্বৰ্য্যালোক উপভোগের পক্ষে মুক্তপ্রাঙ্গণই শ্রেয়। সেই জন্ত ইউরোপে সব বাথ’-এর হুষ্টি । এরা বৎসরে মাত্র তিন মাস গ্রীষ্মকাল পায়। তখন স্কুল, ইউনিভারসিটি প্রভৃতি বন্ধ থাকে এবং কাৰ্য্যকারক বহুলোক অবসর গ্রহণ করে । সবাই বাথ-এ যায়—সকাল হইতে সন্ধ্যা পর্য্যস্ত স্বৰ্য্যালোক ভোগ করে, স্নান করে, আমোদ-প্রমোদ করে, শরীর স্বস্থ রাখে। আমাদের স্নান অন্ধকার কলঘরেই সমাধা হয় । আমাদের গঙ্গা আছে, এতগুলি স্নান করার স্কোয়ার আছে, খুব ভীড় ত দেখা যায় না। পুরুষ কয় জন তবু দেখা যায়, স্ত্রীলোক ত নয়ই। আমাদের দেশে অনেকের পক্ষে স্নান করার সময় ঘটিয়া উঠে না বটে, কিন্তু যাহাদের সময় আছে তাহারাও মুক্ত স্থানে স্নান করেন না শ্লীলতাহানির ভয়ে । পুরুষের সভ্যতাহানির ভয় বোধ হয় আমাদের দেশের বিশেষত্ব এবং সেই জন্যই বোধ হয় ‘লালিমা পাল' পুং-এর উৎপত্তি । এর অতিসভ্য জাত, প্রায় সম্পূর্ণ নগ্ন হইয়াই স্ত্রীপুরুষে স্নান করে ও স্বধ্যালোক উপভোগ করে । আমাদের দেশে গামছা পরিয়া স্নান করিলেই মিস্ মেমোর পুস্তকে অসভ্যতার নিদর্শন রূপে স্থান পায়। আমাদের এখনও অতিসভ্য হওয়ার সময় আসে নাই। তবে সপ্তাহে দু-একবার গঙ্গা: স্নান করা খুবই ভাল । স্ত্রীলোকদের জন্য পৃথক স্বানের স্কোয়ার থাকাও আবশুক । তবে পুরুষমাহুষ হইয়া সভ্যতার অজুহাতে সম্পূর্ণরূপে স্বৰ্য্যালোক উপভোগ করিতে না-পারা ষে কোন সভ্যতার লক্ষণ বুঝিতে পারি না। আমরা সূর্ব্যের দেশে থাকি বটে, কিন্তু তাহার স্ববিধা গ্ৰহণ করি কই ? তৃতীয় আলোচ্য বিষয়, অতিরিক্ত পরিশ্রম । বঙ্গদেশে অতিবিভিন্ন অবস্থার ব্যক্তিবর্গ আছেন। এমন অনেকে আছেন ধাহারা সমস্ত দিন চুপচাপ বসিয়া থাকেন, পূর্বপুরুষার্জিত অর্থ ভোগ করেন.। আবার এমনও অনেকে আছেন ধাহাদের به حساب حومه ها বৃহৎ পরিবারের ভরণপোষণ চালাইতে হয়। সুতরাং ত্যহাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করিতেও হয় । আবার র্যাহাদের অধিক পরিশ্রম করিতে হয়, সাধারণতঃ র্তাহাদের আবার উপযুক্ত খাদ্যাভাব ঘটে। কাজেই এই সব পরিবারেই ব্যাধি হওয়ার অধিক সম্ভাবনা । স্বাস্থ্য-বিষয়ক জ্ঞান ও তত্ত্বাবধান এই সব পরিবারেই বেশী প্রয়োজনীয়। জাৰ্ম্মেনীতে ঠিক এরূপ অবস্থা নাই, কেননা ইহাদের কাহারও বৃহৎ পরিবার থাকে না । একান্নভুক্ত পরিবার ইহাদের অজ্ঞাত । কিন্তু যে-পরিবার বেকার, তাহার সরকার হইতে সাহায্য পায় । আমাদের দেশে এরূপ সাহায্য স্বপ্নবিশেষ । তার পর কোনও ফ্যাক্টরীতে বা অন্য কোথাও কেহ আট ঘণ্টার বেশী কাজ করিতে পারে না । আমাদের দেশে 'সে নিয়ম থাকিলেও অনেকে রাত্রে কাজ করে অর্থের লোভে, যদিও বাঙ্গালী মজুর খুব কম আছে। এই অতিরিক্ত পরিশ্রম বদ্ধ করা খুবই শক্ত। যাহা হউক, ইহা খুব বেশী অনিষ্ট করে বলিয়া भदन श्ध्न न ! পরবর্তী আলোচ্য বিষয়, বিশুদ্ধ বায়ু। বিশুদ্ধ বায়ু কলিকাতার অনেক পুরাতন জনবহুল অঞ্চলে মোটেই নাই। সকালে ও সন্ধ্যায় রন্ধনশালার কয়লার ধোয়া কোনও চিমনি দিয়া সোজা উপরে না উঠিয়া সমস্ত বায়ুতে ছড়াইয়া পড়ে ; রাস্তার পাশ্ববৰ্ত্তী গৃহের আবর্জনায় রাস্তার বায়ু মলিন ; যেখানে-সেখানে মলমূত্র, কাশ, থুথু প্রভৃতি নিক্ষেপ হেতু দুৰ্গদ্ধে বায়ুর প্রতি কণা দুষ্ট হয় এবং সেই বায়ু প্রতি মিনিটে সতের-আঠারো বার করিয়া আমরা শ্বাস-প্রশ্বাসে গ্রহণ করিতেছি । কত যে বিষাক্ত পদার্থ ভিতরে যাইতেছে এবং শরীরে ছড়াইয়া পড়িতেছে তাহার অস্ত নাই । কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, ইহা কাহারও দৃষ্টিপথে পড়ে বলিয়া মনে হয় না । সমস্ত গৃহের রন্ধনশালা সৰ্ব্বোপরি থাকা উচিত বা রন্ধনশালায় উচ্চ চিমনির ব্যবস্থা করা কৰ্ত্তব্য । গৃহকৰ্ত্তার বোঝা প্রয়োজন যে চিমনি গৃহের এক অতি প্রয়োজনীয় অংশ। চিমনিপুন্ত-গৃহ ইউরোপে একটিও দেখিয়াছি বলিয়া মনে হয় না। তার পর রাস্তার আবর্জনা বা মলমূত্র অথবা নিষ্টবন নিক্ষেপ বন্ধ করিতে হইলে জনসাধারণের সাহায্য প্রয়োজন এবং জনসাধারণকে ঐ সব কার্ধ্যের অতি • শোচনীয় পরিণাম সম্বন্ধে জ্ঞানদান