পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অণশ্বিন প্রতিষ্ঠানেই শিশুর পরীক্ষাও চলিতে পারে। কিন্তু সৰ্ব্বদাই সাবধান থাকিতে হইবে, শিশু যেন কখনও ক্ষয়রোগীর সংস্পর্শে না আসে। স্বতরাং ভিন্ন পরীক্ষাগার অতি আবশ্যক । এখানে শিশুকে কোনও ক্রমেই ক্ষয়রোগীর সংস্পর্শে আসিতে দেওয়া হয় না । আর একটি লক্ষ্য করিবার বিষয় ইহাদের সাহস । ÇsRF Tuberkulose Klinik'e efs Çfifçağ এক্স-রে ছবির সাহায্যে বুঝান হয়, তাহার রোগ কিরূপ ভীষণ ও কতদূর অগ্রসর হইয়াছে। ইহারা তাহা হাসিমুগ্নেই শোনে। কিন্তু আমি আমার ব্যবসায়কালে দেখিয়াছি, আমি নিজেও কোন রোগীকে স্পষ্ট বলিতে পারিতাম না যে তাহার ক্ষয়রোগ হইয়াছে, অন্ত ডাক্তারকে বেশী বলিতে শুনি নাই। ইহার একমাত্র কারণ এই যে, আমরা ধারণা করি ক্ষয়রোগ মানেই মৃত্যু। কাজেই কোনও ডাক্তার যখন রোগীকে বলে “তোমার ক্ষয়রোগ হইয়াছে’ আমরা হয়ত সকলেই শুনি বিচারক অপরাধীকে বলিতেছে তোমার ফাসি হইবে । কিন্তু সত্যই ত তাহা নহে। এখানে বহু ক্ষয়রোগী ত ভাল হয়ই, আমাদের দেশেও ত অনেক ভাল হয় । আমাদের দেশে আরোগ্য না হওয়ার প্রধান কারণ রোগ প্রাথমিক নির্ণয় না হওয়া এবং উপযুক্ত স্তানাটোরিয়াম না থাকা । কাজেই ক্ষয়রোগ হইয়াছে শোনার পর হইতেই মৃত্যুর প্রতীক্ষা করা ত ভাল নয়। এই ভীষণ ব্যাধির উপর আবার মানসিক ব্যাধি হইলে চিকিৎসা আরও কঠিন হইয়া পড়ে। আমাদের চিকিৎসব্যবসায়ীদিগের কৰ্ত্তব্য প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করা এবং যথাসম্ভব স্থচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। . গোপন করিয়া লাভ নাই। বরং গোপন করিলেই অন্যান্ত অজ্ঞানী চিকিৎসকেরা রক্তপিত্ত, হাপানি, পুরাতন কাশ প্রভৃতি বহু রকমারি বিশেষণ দিতে প্রয়াস পায়। জনসাধারণের উচিত কোনও সন্দেহ হইলে ডাক্তার দেখান এবং ডাক্তার একটু সন্দেহ করিলে তখনই চিকিৎসা-ব্যবস্থা ৰঙ্গদেশে ক্ষয়রোগ °\කුNO করা। যেহেতু এক ডাক্তার ক্ষরোগ বলিয়া নির্ণয় করিল, আমনই তাহার উপর অসন্তুষ্ট হইয়া অন্ত ডাক্তারের কাছে যাওয়া যুক্তিযুক্ত নহে। ইহাতে চিকিৎসা-বিভ্ৰাট ঘটে। ইহা আমাদের স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে ডাক্তার সর্বজ্ঞ নহে, ভুল হওয়া সম্ভব । কিন্তু যাহার ভূল হয়, তাহার নিজের দ্বারাই সেটা সংশোধিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় কি। চিকিৎসা অনেকটা বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে। যাহার উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে তাহারই আশ্রয় লওয়া উচিত এবং সৰ্ব্বদাই তাহার নির্দেশ অনুযায়ী চলা উচিত। ইহাতেই ভাল ফল হয়। এদেশে ডাক্তার-অন্বেষণ ব্যাপার একেবারেই নাই। সেই জন্য চিকিৎসা-বিভ্ৰাটও হয় না। এখানে চিকিৎসার এক বিশেষ সন্ধান্ত ভাব আছে যাহাতে রোগ নিঃশঙ্ক চিত্তে তাহার সমস্ত ভার ডাক্তারের উপর অর্পণ করিতে পারে। আর আমাদের দেশে সৰ্ব্বদাই শঙ্কা থাকে এই বুঝি ডাক্তার মারিয়া ফেলিল। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া একান্ত আবশ্বক । আমাদের দেশের এখন অতীব দুঃসময় । এই সময়ই ত ব্যাধি আক্রমণ করিবে । কিন্তু আমাদের বদ্ধপরিকর হওয়া উচিত যাহাতে ক্ষয়রোগ আর অগ্রসর না হইতে পারে। জনসাধারণ, চিকিৎসক, মিউনিসিপালিটি, জেলাবোর্ড প্রভৃতি একযোগে চেষ্টা করিলে এই ভয়াবহ রোগের গতিরোধ হইবে নিশ্চয়। যুদ্ধের পর জাৰ্শ্বেনীতে যক্ষ্মা অতি বৃদ্ধি পাইয়াছিল, এখন অনেক কম। ফ্রান্সে ক্ষয়রোগ পূৰ্ব্বাপেক্ষ অনেক কম হইয়াছে। ইতালীও ইহার গতিরোধ করিতে সমর্থ হইয়াছে। বঙ্গদেশে সম্ভব হইবে না কেন ? আমাদের সব সময়ই মনে রাখা কৰ্ত্তব্য যে এ রোগের কোনও প্রতিষেধক বা নিশ্চিত চিকিৎসা এ পর্য্যন্ত আবিষ্কার হয় নাই । কেবল মাত্র দেহের সবিশেষ যত্নদ্বারা এ রোগ হইতে উদ্ধার লাভ করা যায়। দেহকে সৰ্ব্বদা স্বস্থ রাখার চেষ্টা করিলে বহুপ্রকার রোগের আক্রমণ হইতে রক্ষা পাওয়া যায় । আমাদের শাস্ত্রেও আছে "শরীরমাদ্যং খলু ধৰ্ম্মসাধনং’ ।