পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b=్పరి প্রবাসী SNご8ー শীতকালে কিন্তু বিলের এক্ট অগাধ জলরাশি শুকাইয়। যাইত । শুধু, পাহাড়ে নদী পঢ়িলি চকৃচকে রূপালী ছুরির মত শুষ্ক নিশুতির বুক চিরিয়া কলকল রবে সোমাই নদীতে ঝাপাইয়৷ পড়িত। পাটুলির দুষ্ট পাড় জুড়িয়া তপন বহুদূর বিস্তৃত দুৰ্ব্বাঘাস পথিকের নয়নের সম্মুখে সবুজ পদ। টানিয় রাথিত । _ পরিপূর্ণ বর্ষায় নিশুতি বিল যাহার দোহাই মানে বলিয়া সে-অঞ্চলের লোকের বিশ্বাস, তিমি হিন্দুর কোন দেবতা ব৷ সাধু-সন্ন্যাসী নহেন মুসলমান পীর শহীদ বাদশা। বাদশাজী কবে যে নিশুতি বিলের উপর আধিপত্য করিয়াছিলেন, ইতিহাসে তাঙ্কার কোনও নিদর্শন খুজিয়া পাওয়া যায় না । কিন্তু আধিপত্য এমনই . প্রবল ছিল যে এতকাল পরও নিশুতির তীরে অবস্থিত বাদশার মোকামে কাপড়-ঢাকা কবর সেলাম ন-করিয়া সে-বিলে কেউ নৌকা চালায় না বাঁচ গেলে না। সৰ্ব্বাগে, ‘জয় লাব। শাঙ্গদ বাদশার জয় ধ্বনি উচ্চারণ করিয়৷ তবে নেয়ের বিলে পাড়ি জমাইতে সাহস করে। মোকামের পাশেই নৃপুর কৈবৰ্ত্তের স্থাপিত জেলেদের অধিষ্ঠাত্রী দেবত কালীর একগান গড়ে চাল-ঘর। কালী বলিতে যে সিদর-মাপানে পাথর ছিল, কীৰ্ত্তন গাহিয় তাহার চারিদিক প্রদক্ষিণ না-করিয়া জেলের নিশুতি বিলে জাল ফেলিত না । ‘সায়রে ফেলিক্স জাল এ জাল যেন ছেড়ে ন! পাগল হাওয়া রুপে দাড় পাগলী মা ! .. কালী-বাড়ির প্রাঙ্গণে এক হাত ব্যাসবিশিষ্ট বিশ-পচিশ জোড় কাসার করতাল, খোল সহযোগে ভাবোচ্ছাসে অল্পপ্রাণ বর্ণগুলি মহাপ্রাণ লাভ করিয়া গায়কদের মুখ দিয়া যখন বাহির হইতে থাকিত তখন পাঘ লী-মায়ের রুপায় জাল ন। ছিড়িলেও অনভিজ্ঞ শ্রোতার কর্ণ-পটহ ছিন্ন হইয়া যাইত । এই নিশুতি বিলের তীরে কোন যুগের তৈরি ইটের ভাঙা দেওয়াল ও টিনে-ছাওয়া কাছারী-ঘরটাই হরিবিলাস নিজ শয়নকক্ষে পরিণত করিলেন। সাজপাঙ্গ, চাকরবেয়ারা ইত্যাদির জন্ত সারি সারি খড়ের ঘর নিৰ্ম্মিত হইয় কাছারী-বাড়িটা একটি হাটের চেহারা ধরিল। জমিদারীতে পদার্পণ করিয়াই হরিবিলাস পরম উৎসাহে নানাবিধ ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম, যাগ-যজ্ঞে মাতিয়া উঠিলেন। অর্থাৎ, স্ববৃহৎ ডিরেক্টরী পাজি দেখিয়৷ শ্ৰীশ্ৰীগরুড়গোবিন্দ ঠাকুরের আবির্ভাব হইতে আরম্ভ করিয়া দুর্গোৎসব পর্য্যন্ত প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানই বিশেষ জাকজমকের সহিত সম্পন্ন করিতে লাগিলেন । এক উদ্দেশু। --র্তার ঐশ্বৰ্য্যের বহর দেপিন্ন প্রজাদের তাকৃ লাগিয়া যাউক ; অপর উদ্দেশ্য এত সব দেব-দেবীকে খুশী রাপিতে পারিলে পুণ্যের পুজি ডিপোজিটে থাকিয় একদিন-ন-একদিন বরাতের উপর দৈব-পনের চেক কটিয়া দিতে পারে । নুপুর কৈবৰ্ত্তের প্রপৌত্র অশীতিপর বুদ্ধ দয়াল মাঝি ছিল সেই চকের একটা অঞ্চলের মোড়ল । ‘গুণী বলিয়। সমাজে সে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করিয়াছিল। লোকটি “চাউল-পড়া' * জানে ; চোরাই মাল বাহির করিতে ‘বাটি-চালানোয় 1 সিদ্ধহস্ত, বিলের জল দেখিয়াই বলিয়৷ দিতে পারিত নীচে কি পরিমাণ মাছ আছে। ঝাড়ফুক, মস্থত, প্রেত-পরী, ডাক-ডাকিনীর উপর ছিল তার অসাধারণ প্রতিপত্তি। কিন্তু এই সব ছাপাইয়াও তার যশ ছিল মনসার ভাসান-কীৰ্ত্তনে। গ্রামের বৃদ্ধের বলিয়াছে ধে বহুকাল আগে কেবল নমশদ্রের বাড়িতে মোড়শোপচারে নৌকা-পজ হইয়াছিল। তেত্রিশ কোটির মধ্যে নন্দী-ভৃঙ্গী ইত্যাদি লষ্টয় প্রায় এক শত দেবতার মূৰ্ত্তি বিশাল মনসা প্রতিমার চতুদিকে গড়িয়া নৌকা-পূজা’র প্রকাণ্ড কাঠামে তৈরি হইয়াছিল। তিন দিন ব্যাপিয় পূজা চলিবে । মহিষ হইতে আরম্ভ করিয়া পাতি-নেবু, পৰ্য্যস্ত বলির ব্যবস্থা ! দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টাই ভাসান-গান চলিয়াছে। দূর দেশ হইতে পাচ দল কীৰ্ত্তনীয়াকে বায়ন করিয়া আন হইয়াছে। কাঠামোর সম্মুখে সুবৃহৎ আসরে তাহদের কীৰ্ত্তন চলিয়াছে। দয়ালের বয়স তখন মাত্র বিশ বছর । তাহার

  • চোর-নির্ণয়ের জন্ত সন্দেহজনক ব্যক্তিদিগকে মন্ত্ৰ পড়িয় চাউল থাইতে দিলে যে সত্য চোর তারই গলায় সে-চাউল আটকাইয় যায় বলিয়। একট; সংস্কর অাছে ।

+ চোরাই মাল বাহির করিবার জন্ত কোনও একটা বিশে দিনে একট: বিশেষ রশি নক্ষত্রযুক্ত লোক কঁসির বাটিতে হ৷ ” ষ্টোয়াইয়। রাখিলে বাটিটা নাকি মন্ত্রবলে আপন হইতে চলিয়া যেখাrে চোরাই মলি লুকান আছে সেখানে গিয়া পামিয়া যায়—এইরূপ একট অন্ধ বিশ্বাস প্রচলিত আছে ।