পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tూs* প্রবাসী SNలీ8= হরিবিলাস এক জন বেয়ারাকে বলিলেন, “দেখা না জগু, ঐ যে তাদেরই একখানা চিঠি পড়ে রয়েছে। শুধু কি ঐ একখানা ? চিঠির পর চিঠি টেলির উপর টেলি ঝেড়ে আমায় অতিষ্ঠ ক'রে তুলেছে । ভাবছি পূজার পরই কলকাতা গিয়ে ওদের সঙ্গে কথা পাকাপাকি করে আসব। নায়েব-গোমস্ত সবই বাংল-নবীশ । প্রজারাও ইংরেজী জানে না। চিঠিতে কি লেখা আছে জানিতে পারিল না। তবে জমিদারের কথাতেই বুঝিতে পারিল যে তাহদের সৰ্ব্বনাশ উপস্থিত ! জোত-জমা বসত-বাড়ি সব যদি ঈগল কোম্পানী বন্দোবস্ত নেয় তবে নানা ফন্দি-ফিকিরে তাহাদিগকে উদবাস্তু করিবে। তাহারা তখন মাথা রাখিবার ঠাই পাইবে না। পানের সবুজ মাঠে বসাইবে রেল-লাইন, পাহাড়ের মাথায় চড়িবে ক্রেন টিউব । ছায়াশীতল নির্জন পল্লীগুলি কুলিমজুরের কোলাহল, কলের আওয়াজ আর ধোয়ায় আচ্ছন্ন হষ্টয়া উঠিবে। তার চেয়ে পার-কঞ্জ করিয়াও জমিদারকে আরও টাকা দিয়া হাতে পায়ে ধরিলে হয়ত তার মত পরিবর্তন হইতে পারে। কিন্তু আগেই এ-সম্বন্ধে নায়েব বাবুদের সহিত একটু সলা পরামর্শ দরকার। উপস্থিত নায়েবগোমস্তাদের চোখের ইঙ্গিতে একটু দূরে লইয়া গিয়া প্রজারা এই আগু বিপদ হইতে উদ্ধারের পরামর্শ আঁটিতে লাগিল । জমিদারের কাছে বসিয়া রহিল শুধু দয়াল। হরিবিলাসের কথা শুনিয় তাহারও মাথা ঘুরিয়া গিয়াছে। আশী বছরের পরিচিত এই নিশুতি বিল, পূৰ্ব্বপুরুষের ভিট, অসীম প্রতিপত্তি সব ছাড়িয়া এই বুদ্ধবয়সে সে যাইবে কোথায় ? ভাবিতে ভাবিতে একটা কথা তাহীর মনে পড়িল। একদিন সে-কথাটা জমিদারের কানে না তুলিয়৷ কি বোকামিই না সে করিয়াছে ! হরিবিলাসকে এক পাইয়া দয়াল এখন সেই কথা পাড়িল । - “কাজ কি হজুর, এ সব ফেসাদে ! এই নিগুতি বিলে যা ধন আছে, মালিক ইচ্ছা করলে সেই দিয়েই অমন দু-দশটা তেল-কোম্পানী নিজে কিনে নিতে পারেন।" হরিবিলাস তাকিয়া ছাড়িয়া সোজা হইয়া বসিলেন— "বলিল কি দয়াল নিশুতিতে আবার টাকা কোথায় ? —খালি ত জল :- es দয়াল চারি দিকে চোখ ফিরাইয় একবার ভালরক্ষন দেখিয়া নিল, নিকটে আর কেউ আছে কিনা। তার পর হরিবিলাসের প্রায় কানের কাছে মুখ লইয়া চুপি চুপি বলিল, “বললে হয়ত বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু এই নিশুতিতেই ম-মনসার অগাধ ধন লুকানো আছে!” মনসার ধন ?—হরিবিলাস একবার অবিশ্বাসের হাসি হাসিলেন। কিন্তু যতই চিস্ত করিতে লাগিলেন ততই মনে হইতে লাগিল যেন দৈব-ধন প্রাপ্তির সময় তার নিকটবৰ্ত্ত হইয়া আসিতেছে। দেব-ক্রিয়, পূজা-অৰ্চনায় কোণমি তিনি এতটুকু কস্বর করেন নাই। দেবতারা নিশ্চয়ই ক্লার প্রতি প্রসন্ন। এর উপর আবার ‘মনসার ধন-প্রাপ্তিটা ৪ নিতান্ত আকাশ-কুসুম বলিয় মনে হইল না। মনসার ধনে কত লোক রাজা হওয়ার গল্প তিনি ছেলেবেলা হইতে মুখে মুখে শুনিয়া মাসিতেছেন। আবার ঐ কঁচি-থেকে দেবতার কোপে পড়িয়াও কত ধনী সৰ্ব্বস্বাস্ত হইয়াছে। —মনম্বর শেখ মুসলমান বটে, কিন্তু তার প্রতিও নাকি মনসাদেবীর অসীম কৃপা ছিল। একদিন নদীর পাড়ে মনক্ষর গরু চরাইতেছিল। এমন সময় দেখে নদী দিয় মস্তবড় একপান নৌকা চলিতেছে। নৌকা হইহে পরমাসুন্দরী এক রমণী তাহাকে ডাকিয়া বলিল-- “মনম্বর, যদি টাকা নিবি ত যা কাছে আছে তাঙ্ক নিয়ে নদীর আরও কিনারে এগিয়ে আয়। মনস্তরের কাছে তখন আর কি থাকিবে ? মাথায় একটা ট্রপ আর ছোটখাটো একটা বঁাশের ছাত। নদীর কিনারে গিয়া তাই পাতিয়া পরিল। নৌকা ভিড়াইয় রমণী তথম সোনার মোহর আর টাকায় সে-দুটি ভবৃতি করিয়া দিলেন । লোভ বাড়িয় যাওয়ায় মনম্বর বাড়ি হইতে গোটাকয় ঝুড়ি আনিয়া টাকা লইবার জন্ত ছুটিল। কিন্তু ফিরিয়া আসি, দেখে রমণী জার নৌকা দুই-ই অন্তধান হইয়াছে। –টাকা-কড়িতে রামধন চক্রবর্তীর সংসার জমৃজম্‌ কি? সে-বার শ্রাবণ মাসে মনসাপূজায় পদ্মফুল দিতে ভুলির গেলেন। প্রথমে বলির পাঠা জাটুকাইয়া গেল। তার প" দুই মাস যাইতে না-বাইতেই একদিন ছুপুর রাতে চক্ৰবৰ্ত্তাপ ঘরের মেঝের নীচে একটা জীষণ শব্দ শোনা গেল। প্রভা১ে মেঝে খুড়িয়া দেখা যায় প্রকাও একটা সুড়ঙ্গ ঘরে: