পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অণশ্বিন গ্রন্থাগার-পরিচালনায় নব পস্থা y^ON9 সনাতন-পন্থী। পূৰ্ব্বোক্ত ব্যবস্থাসমূহ যে খুব ব্যয়সাপেক্ষ তাহাও নহে, অথচ উহাদের সাহায্যে অতি সুশৃঙ্খল ভাবে গ্রন্থাগারের কার্য্য পরিচালনা করা যায়। কিন্তু এই সব ব্যবস্থার বিষয় জানিতে কিংবা তদনুসারে কার্য্য করিতে আমাদের কোন আগ্রহ নাই। ইউরোপ ও আমেরিকায় লাইব্রেরীগুলি সাধারণতঃ গবর্ণমেণ্টের ব্যয়ে, মিউনিসিপালিটির খরচে, অথবা ব্যক্তিবিশেষের অর্থানুকূল্যে স্থাপিত হইয়াছে। জনসাধারণের তাহাতে অবাধ গতি। কাহারও কাহারও এক জন জামিনের দরকার হয় মাত্র। কলিকাতার ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরী ও বড়োদার সেনট্রাল লাইব্রেরীর বই পড়িতেও কোনরূপ চাদ দিতে হয় না। ইউরোপ ও আমেরিকার সর্বত্র খোলা তাকে বই রাখার পদ্ধতি (open access system) প্রচলিত। এই ব্যবস্থায়যায়ী বইগুলি বন্ধ আলমারীতে না রাখিয়া খোলা তাকে রাখা হয় এবং পাঠকদের অবাধে শেলফের নিকট গিয়া ইচ্ছামত পুস্তক বাছিয়া আনিবার অধিকার দেওয়া হয়। ইহাতে পুস্তকনিৰ্ব্বাচনে কিরূপ সহায়ত হয় তাহ সহজেই অল্পমেয়। ইহার . ফলে কত অপঠিত, অজ্ঞাত গ্রন্থের পাঠক জুটিয়া যায়, কত অব্যবহৃত গ্রন্থের শেলফ-কার হইতে মুক্তি ঘটে। খোলা তাকে বই রাখার প্রথা প্ৰবৰ্ত্তন করিতে হইলে গ্রন্থাগারনিৰ্ম্মাণে কিছু বিশেষত্ব থাকা দরকার। সাধারণতঃ লাইব্রেরীঘর কতকগুলি কামরায় বিভক্ত না-করিয়া একটি বড় হল-ঘর নিৰ্মাণ করা হয়। বইয়ের শেলফগুলি ঘরের চারিদিকে দেওয়াল ঘেষিয়া সাজান থাকে। পাঠকগণ যাহাতে মেঝের উপর দাড়াইয়া মইয়ের সাহায্য না লইয়া বই নামাইতে ‘ পারেন, সেই উদ্দেশ্বে শেলফগুলি সাড়ে সাত ফুটের বেশী উচু করা হয় না। শেলফ ছাড়াইয়া দেওয়ালের উপরেরদিকে বড় বড় জানাল করা হয় ; তাহাতে আলো-বাতাস আসিবার অস্ববিধ হয় না। বইগুলি খোলা আলমারীতে রাখিলে যে কেবল পাঠকদের স্ববিধা হয়, তাহা নহে—বইগুলিও ভাল থাকে। লাইব্রেরী হইতে বাহির হইবার জন্ত একটি দরজা রাখা হয় এবং সেই দরজার নিকট চার্জিং ডেস্ক' থাকে। সেইখান হইতে বই বিলি করা হয়। পাঠকদের পড়িবার টেবিল লাইব্রেরীর মাঝখানে রাখা হয় এবং গ্রন্থাগারিক এইরূপ স্থানে বসেন যেখান হইতে লাইব্রেরী-ঘরের সৰ্ব্বত্র দৃষ্টিগোচর হয়। লাইব্রেরী হইতে বাহির হইবার to “sixth &o co" (Lambert's Wicket date ) নামে এক বিশেষ গেটের স্বষ্টি হইয়াছে। খোলা তাকে বই রাখার প্রচলন সম্বন্ধে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করিতে পারেন। এই প্রসঙ্গে ইহাই বলিতে চাই যে, পাশ্চাত্য দেশসমূহে এই প্রথা প্রবর্তনে ফল খারাপ হয় নাই। আমাদের দেশেও কয়েকটি লাইব্রেরীতে এই প্রথা প্রচলিত আছে । এই ত গেল লাইব্রেরী-গৃহ পরিকল্পনার কথা। কিন্তু গ্রন্থই হইল গ্রন্থালয়ের প্রাণস্বরূপ। গ্রন্থের উপযুক্ত ব্যবহারের উপরই গ্রন্থাগারের কার্য্যকারিত নির্ভর করে। এই জন্য গ্রন্থগুলি স্বনির্বাচিত হওয়া দরকার এবং এরূপ ভাবে সাজান থাকা উচিত যাহাতে পাঠকগণ অনায়াসে পুস্তক খুজিয়া বাহির করিতে পারেন। এই উদ্দেন্তে স্বচারুভাবে পুস্তকের fosis ( classification ) ori Wool: 1 আমাদের দেশে পুস্তক-বিভাগের বিশেষ কোন রীতি নাই। অনেক স্থলে পুস্তকের কোন বিভাগ না-করিয়া পুস্তক ক্রয় অনুসারে ক্রমিক নম্বর দেওয়া হইয়া থাকে। ইহাতে সব বিষয়ের বই একসঙ্গে থাকে। কোন কোন লাইব্রেরীর কর্তৃপক্ষ হয়ত সাহিত্য, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি মোটামুটি কয়েকটি বিষয়ে ভাগ করিয়া ক্ষান্ত হন এবং বই কেনা হইলে উপরিউক্ত বিভাগসমূহে ফেলিয়া বইয়ের নম্বর দিয়া থাকেন। প্রত্যেক বিষয়ের যে বিভাগ ও উপবিভাগ আছে সে-বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া হয় না। উপরিউক্ত কোন প্রথাই বিজ্ঞান-সন্মত নহে। বইগুলি এরূপ ভাবে রাখা দরকার যাহাতে প্রত্যেক বিষয়ের বিভাগ এবং উপবিভাগের বইগুলি পৰ্য্যন্ত একসঙ্গে সাজান থাকে। একটি দৃষ্টান্ত লওয়া যাউক । বিজ্ঞান একটি বিষয় (class), ইহার নানা বিভাগ আছে ; যেমন গণিত, রসায়ন, পদার্থবিদ্য, ভূতত্ত্ব প্রভৃতি । আবার প্রত্যেক বিভাগের উপবিভাগ ( sub-division ) আছে। গণিতের মধ্যে আছে,পাটীগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি ইত্যাদি, কিন্তু শাখা, উপশাখা অনুসারে বিভাগ মা করিয়া বিজ্ঞানের কেবল মোটামুটি একটি ভাগ করিলে গণিত রসায়ন, ভূতত্ত্ব প্রভৃতির বই একসঙ্গে রাখিতে হয়। ইহাতে সহজে