পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوارق سوا ইংরেজীর ক্লাসে অরুণের একদিকে পসে শিশির সেন. অপরদিকে দ্বিজেন মিত্র। দুই জনেই স্কলারশিপ পাওয়া ভাল ছেলে । শিশির সেন অনর্গল বইপড়ার গল্প করে। টেনিসন সম্বন্ধে ব্রাডলে কি লিখিয়াছেন, শেলীর কতগুলি জীবনী সে পড়িয়াছে, ম্যাথু আর্ণল্ডের কোন মতের সহিত সে একমত হঠতে পারে না ইত্যাদি । শিশিরের আর লাজুকতা নাই, এখন তাহার প্রগ লভতায় ক্লাসের সকলে অস্তির, নিলক্তিভাবে সে আপন বিদ্যা জাহির করে ; দ্বিজেন চুপচাপ থাকে, মাঝে মাঝে বিদ্রপাত্মক টিপ্পনি দেয়, পড়াশোনায় সে শিশির অপেক্ষ কিছু কম নয়। এই দুষ্ট জনের মধ্যে বসিয়া অরুণ ষ্টাপাষ্টয়া ওঠে ; ইংরেজীর ক্লাসগুলি তাহার ভাল লাগে না । একদিন অরুণ নিজের ক্লাসে না গিয়া, থার্ড ইয়ারের ছাত্রদের দলে মিশিয়। কবি মনোমোহন ঘোষের ইংরেজী ক্লাসে প্রবেশ করিল। ছাই রঙের লুট-পর, শুঠাম দীঘ দেহ, স্যামল শীর্ণ মুপ রাত্রির মত রহস্যময়, রেখাঙ্কিত প্রশস্ত ললাট, বিরল কুঞ্চিত কেশ, স্বপ্নছায়াঘন ক্লাস্তিময় চোখ দুইটি অদ্ভূত, মনোমোহন ঘোষ যপন ক্লাসে আসিয়া চেয়ারে বসিলেন, সকলে স্তন্ধ মম্বমুগ্ধ, এ যেন কোন সৌন্দর্য্যস্বৰ্গচ্যত অভিশপ কবি মলিন পৃথিবীর বাস্তবতায় ব্যথিত, বিচ্ছিন্ন, একাকী, গষ্ঠীর মহিমায় বসিয়া আছেন । কবিতা পড়িতে পড়িতে তাঙ্গার শ্রাস্ত বিমঃ চোপ জুইটি জলিয় ওঠে, বুঝি হৃতসৌন্দর্য্যলোকের কোন আনন্দ-ছবি ক্ষণিকের জন্য ভাসিয়া ওঠে । হৃদয়শতদলবাসিনী কবিতালক্ষ্মী সাধকের নয়নে মুষ্টি পরিয়৷ অরুণের মানসনয়নে সেই জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর আনন্দরূপ একটু ঝলসিয়া যায় । কাঁটুসের কবিতা । “Yes, I will be the priest, and build a fame &J, In some untrodden region of my mind, Where branched thoughts, new grown with pleasant pain Instead of pines shall murmur in the wind.” অরুণ হইবে সৌন্দৰ্য্যলক্ষ্মীর পুরোহিত, দুঃখময় পৃথিবীতে সে রচনা করিবে মানবাত্মার জয়গান। মনোমোহন ঘোষের ক্লাস স্বপ্নের মত শেষ হইয়া যায়। তার পরাজিকের ক্লাস বা ইতিহাসের ক্লাস । মধ্যে এক ঘণ্টা চুটি থাকিলে অরুণ কমনরুমে গিয়া প্রবাসী 哆 ১৬৪২ বসে । লাইব্রেরীতে সারাক্ষণ পড়িতে ভাল লাগে না । জয়ন্থ তাহাকে দেখিতে পাইলেই নিভৃতে ডাকিয়া লইয়া যায়, তাহার নানা পারিবারিক দুঃসংবাদ বলে। জয়স্তের পিত হরিদ্বার হইতে পত্ৰ দিয়াছেন, সেখানে তিনি কোন মঠে পীড়িত। পীতাম্বর কিছু টাকা পাঠাইয়াছেন বটে, কিন্তু চি. দিন তিনি অত্যন্ত কঞ্জস হইয়। যাইতেছেন, অবশ্য জয়ন্থের সকল খরচের টাকা তিনি চাহিলেই দেন, কিন্তু সানন্দচিত্তে দেন ন। এদিকে দোকানের কিছুই ব্যবস্থ হইতেছে না, পীতাম্বর তাহাদিগকে যে-কোন দিন তাড়াইয়া দিতে পারেন । ত বৰ্ণ নীরবে জয়স্তের দীর্ণ কাহিনী শোনে, সমবেদন প্রকাশ করে । জয়স্তের প্রতি তাঙ্গর সপ্রেম করুণ জাগে ৷ পাশের বাড়ির মেয়েটির বিবাহ হইয়া ধাওয়াতে জয়স্ত মুখড়াইয় পড়িয়াছে । তাহার মত তরুণ কবিপ্ররূতির যুবক কোন-ন, কোন মেয়েকে মনে মনে ভাল না-বাসিয়৷ পারে না । কলেজে তুষ্ট ঘণ্টা ছুটি থাকিলে ব শীঘ্ৰ কলেজ ছুটি হঠয় গেলে, সকলে দল বাধিয়া হিন্দু হোষ্টেলে শিশির সেনের ছোট ঘরে যায়। শিশির দোতলায় একটি ছোট ঘর পাইয়াছে । অন্ধকার ঘর, পূৰ্ব্বদিকে একটি জানাল, সেদিকে দ্বারভাঙ্গ বিষ্টি অতিকায় দৈত্যের মত অন্ধকার ছায়া ফেলিয়া দাড়াইয়৷ দুই দিকে কাঠের দেওয়াল ; পশ্চিম দিকের দরজা অন্ধকার করিডরের ওপর। এই ঘরটি নেশার মত সকলকে টানে। এ নেশা গল্প করিবার, তর্ক করিবার, অবিশ্রাম ধূমপান ও চা পান করিবার নেশা ও হল্লা করিয়া উচ্ছসিত হস্ত করিয়া প্রফেসারগণেশ সম্বন্ধে নানা মন্তব্য করিবার নেশা । সকলে জমাট হইম গল্প চীৎকার করিবার সুবিধা কলেজে নাই। অরুণ বাণেশ্বরকে টানিয়া লইয়া যায়, জয়ন্ত দ্বিজেন স্নহাসও আসে। শিশিরের ইচ্ছা কেবলমাত্র অরুণ তাহার ঘরে গিয়া তাহার বক্তৃতা শোনে, কিন্তু অন্য সকলে আসিলে আপত্তি করিতে পারে না, সকলে ৩াহার ঘরে আসিয় গল্প করিতেছে ভাবিয়া গৰ্ব্বও অনুভব করে । কোন বিষয়ে তুর্ক স্বরু হইলে আর থামিতে চায় না বাণেশ্বর তর্কনিপুণ, শ্লেষবাণসিদ্ধ শিশিরেরই শেষে হাং হয়, রাগিয়া সে উল্টাপাট কথা বলিতে আরম্ভ করে থাকিলে