পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্ফীংস ভেতরে খানিক ক্ষণ থাকলে বাইরের গরম অনুভব কর। যায় না। ডেকে খানিকট হেঁটে বেড়াল মনে করলুম, কিন্তু মাথাটা ঘুরতে লাগলে ; বিরক্ত হয়ে ড্রয়িং-রুমে এসে একটা গীওয়াল চেয়ারে বসে রইলুম। ষ্টুয়ার্ড সামনে কফির পেয়াল এনে হাজির ৷ তাকে বলে দিলুম আমার ওসবে দরকার নেই। সে চলে গেল। যাবার সময় দু-বার ফিরে ফিরে আমায় দেখে গেল। বিরক্ত হলুম, আ ম'লে ঘ, আমি একটা হাতী ন ঘোড়া ? এত দেখবার কি আছে রে বাপু । মরছি নিজের জালায়। একটু পরেই দেথি যে তার কফির ট্রে রেখে একটা প্লেটে ক'রে কয়েকটি পাতিলেবু ও বরফের টুকরো নিয়ে এসে আমার সামনে রেখে গেল ও এবারে ফিরে যাবার সময় সামনের জানালাটা ভাল ক'রে খুলে পর্দা সরিয়ে দিয়ে গেল যাতে মুখে বেশ হাওয়া লাগে আর বরফের কুচি মুখে রাখবার জন্তে বলে গেল। তখন বুঝতে পার্লুম আমার যে গ প্রবাসী SN°8史 বমি-বমি করছে, সেটা ও আগেই টের পেয়েছিল, কাজেই যাবার সময় অত দেখছিল। এ-সব কাজে এরা খুব তৎপর। এই ধরণের অস্থণে জাহাজে মোটামুটি সেবা মন্দ হয় না। বসে থাকৃতেও কষ্ট হতে লাগল, শেষকালে আমাদের দুৰ্ব্বদ্ধি হ’ল গোটা জাহাজখানা এইবেলা ঘুরে দেখে বেড়াই না? মনটাও অন্য দিকে যাবে, আর তা হ’লে গা-বমিও করবে না। এক টুকরো বরফ মুথে পূরে সিড়ি-বেয়ে টলমল ক’রে নেমে দোতলায় ত এলুম, ওমা ! চতুৰ্দ্দিকে তখন ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেছে, মনে জোর করে দ্বার্ডকে জিজ্ঞাসা করুলু, থার্ড ক্লাসের রাস্তাটা দেখিয়ে দাও ত, আমি একবার ওদিকটা দেখব। ষ্টুয়ার্ড দেখিয়ে দিতেই সিড়ি দিয়ে নেমে এসে আবার একটা সিড়ি দিয়ে উঠে থার্ড ক্লাসের ডেকের উপর এসে পৌছলুম। বেশী দূর যেতে হ’ল না, সাম্নেই একটা চেয়ার ছিল তার উপর ধপাস ক'রে বসে পড়তেই বমি স্বরু হয়ে গেল। খাবার সময় যা-যা জিনিষ থেয়েছিলুম, সমস্তই পরের পর সাজিয়ে বেরিয়ে গেল। একটু পরে আশপাশে নজর পড়তেই দেখি সকলেরই আমার মত অবস্থা । সকলের হাতে এক গ্লাস ক’রে জল ও একথান: ক'রে তোয়ালে, আর সবাই ডেকের দু-ধারের নদমার ধারেই চেয়ার টেনে নিয়ে বসে গেছে । চারিদিকে খালি বমির দুৰ্গন্ধ, খালাসীরা অনবরত জল দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছে। গতিক বড় হুবিধার নয় বুঝে আমরা দু-জন স্থার্ডের হাত ধরে টলতে টল্‌তে কোন রকমে নিজেদের ক্যাবিনের ভিতর এসে রামেশিসের মুপ্তি বিছানার ওপর সটান শুয়ে পড়লুম। বিছানার পাশের দেওয়ালে বোতাম টিপতেই ষ্টুঘার্ট ও ইয়ার্ডেস এসে আমাদের ছু-জনের কাপড় ছাড়িয়ে মুখ ধুয়ে দিয়ে চলে গেল।