পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কহেছিল তা'রে—‘ভদ্ৰে, অভীষ্ট তোমার নয়নাভিরাম রাম, মহা তপস্তার মাঝে পাইবে তাহারে । চেতনা গহনে নীরবে করিও ধ্যান’ । বাজিল স্মরণে সেই স্বগভীর বাণী । তাপসী শবরী সস্তুপশে ধীরে সপ্তপর্ণ শাখা ধরি চাহিল সম্মুখে—কোথায় আরাধ্য তার ! বহু বর্ষ চলে যায় নৈরাশু-সাধার শুধু জাগে চারিডিতে। ব্যর্থতা-পীড়নে কাদিল আস্তর, অশ্রবারি ছু-নয়নে পড়িল ঝরিয়া । • অটবী-শয়ন পরে স্বগভীর অন্ধকার নামে স্তরে স্তরে স্তবকে স্তবকে । সকরুণ ঝিল্পীস্বরে দিম্বধু কাদিছে কোথা দুর-দিগন্তরে। নীরব পাষাণ মূৰ্ত্তি বিজন আঁধারে ধেয়ান-নিশ্চল তন্থ, তপস্তা মাঝারে পাষাণী অহল্য। কিগো আজো নিমগন । আজও কি আসে নি তার আরাধ্য-রতন রাম। ধীরে অতি ধীরে স্বযুপ্তি সাগরে ডুবে গেল প্রাস্ত তন্থ । রুক্ষ ভূমি পরে লুটাল তাপসী । নিবিড় সে-নিজ ভরি নামিল অপূৰ্ব্ব স্বপ্ন—বৰ্ষ বর্ধ ধরি নিভূত অরণ্য-পথে নিমীল নয়নে কে রমণী ছুটে চলে অভ্রান্ত চরণে। তপঃক্লিষ্ট শীর্ণ তছু নিদ্র-তন্দ্র-হারা নিরস্তর বেগে ধায় উন্মাদিনী-পার। さNご8ー。 অরণ্য-মেঘের মাঝে পত্রচ্ছেদ-ফাকে নীলিমা-বিদ্যুৎ হানি নীলাকাশ ডাকে তারে অস্তহীন পথে। বৈরাগিণী স্বরে তা’র নিত্য গৃহ-হারা অজানিত দূরে চলিয়াছে নীল-অভিসারে । সন্ধ্য আসে নিবিড় বনানী ঘেরি’ বিষঃ বাতাসে মর্শ্বরিয়া কাদে রাত্রি ; আকাশ ভরিয়া নামে দুর্ভেদ্য অর্ণধার। রমণী ছুটিয়া চলে অন্ধ দিশাহারা ; বনে বনাস্তরে রোদনের প্রতিধ্বনি ব্যথা-ক্লাস্ত স্বরে গুমরি’ কাদিয়া মরে । দীর্ঘ পথ-শেষে বিক্ষত চরণে উভরিল অবশেষে মুক্ত নীলাম্বর তলে । অন্তহীন নীল নীরবে ভরিয়া দিল সমগ্র নিখিল । নিম্পলক নেত্রে নারী রহিল চাহিয়া, ধীরে ধীরে নীলমায়া উঠিল দুলিয়া ; ধীরে তা’র অপরূপ হ’ল রূপান্তর। অপূৰ্ব্ব-শোভন-কাস্তি আরাধ্য-স্বন্দর রাম দিল দেখা অনন্ত নীলিমা ভরি ; তাপসী শবর-বাল উঠিল শিহরি আনন্দ-জাগ্রত-তনু । সম্মুখে ঐরাম স্বনীল নীরদ-রূপ নয়নাভিরাম । তপস্যা সার্থক আজি । ধীরে অতি ধীরে তখন জাগিছে উষা পুণ্য পম্পী-তীরে।