পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন কোন বলিই দেয় না, তাহাদের এ বিষয়ে শাস্ত্রীয় বিধিনিষেধ জানিয়া তাহার অনুসরণ করিবার আবগুক নাই। কিন্তু শক্তিপূজক বলিদাতাদের তাহ জানা আবশুক। এ বিষয়ে হিন্দুশাস্ত্রামুসরণকারী সকলের একমত হইবার সম্ভাবনা নাই। কারণ হিন্দুর শাস্ত্র একটি নহে, শ্রতিস্থতিপুরাণউপপুরাণভেদে অনেক, এবং সকল শাস্ত্রের মত এক নহে। কিন্তু ইহাও নিশ্চিত, যে, পশুবলি দিতেই হইবে সকল শাস্ত্রের শক্তিপূজাবিধি এরূপ নহে। ইহা আমরা সৰ্ব্বশাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়া বলিতেছি না। স্বৰ্গীয়া রাণী রাসমণির দৌহিত্র কলিকাতা ইটালীর জমিদার ঐযুক্ত বলরাম দাস ১৮৩২ শকাব্দে ষে ব্যবস্থাপত্র অনুসারে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে র্তাহার নিজ দেবসেবার সময় পশুবলি উঠাইয়া দিয়াছিলেন, তাহাতেই ইহা লিখিত আছে। এই ব্যবস্থাপত্র সংস্কৃতে লিখিত এবং তাহার বাংলা অনুবাদও আছে। বাংলা অম্বুবাদের শেষ এইরূপ :– “বৈধহিংসা কৰ্ত্তব্য নহে, বৈধহিংসাও রজোগুণের কার্য্য" এই প্রকার শ্রদ্ধবিৰেক টীকাকার গোবিন্দানন্দধূত বৃহন্মমুবচনম্বারা বৈধহিংসাও রজোগুণের কার্ধ্য, অতএব সাত্ত্বিকাধিকারীদিগের পক্ষে নিষিদ্ধ প্রতিপন্ন হওয়ায় বিষ্ণুমন্ত্রোপাসক এবং শক্তিমন্ত্রোপাসক সাত্ত্বিকাধিকারীদিগের পূর্বপুরুষ প্রতিষ্ঠিত কালিকামূৰ্ত্তি পূজা ছাগাদি পশুঘাত পূর্বক বলিদান বৃ্যতীত করিলে কোনই পাপ হয় না, পক্ষান্তরে পূর্বপ্রদর্শিত পঙ্কোত্তরին পাৰ্ব্বতীর বচনসমূহ দ্বারা ছাগাদিপশুঘাত পূর্বক বলিদানের দছিত দেবতার অর্চনা করিলে অর্চনাকারীদের নরকজনক পাপ হয়, এইরূপ অবগত হওয়ায় তাহদের কখনও ছাগাদিপশুঘাত পূৰ্ব্বক বলিদানের সহিত পূর্বপুরুষ প্রতিষ্ঠাপিত কালিকামূৰ্ত্তির পূজা কৰ্ত্তব্য নহে, ইহাং ধৰ্ম্মশাস্ত্রৰিৎ পণ্ডিতগণের উত্তর । শকাব্য। ১৮৩২, ৭ই জ্যৈষ্ঠ । এই ব্যবস্থাপত্রে কলিকাতার ত্রিশ, নবদ্বীপের সতর, ভট্টপল্লীর দশ, কাশীর নয়, এবং হরিদ্ধারের তিন, মোট উনসত্তর জন শাস্ত্রজ্ঞ ও শাস্ত্রীয় আচারনিষ্ঠ পণ্ডিতের স্বাক্ষর আছে। ইহাদের মধ্যে মহামহোপাধ্যায় কামাখ্যানাথ তর্কবাগীশ এবং মহামহোপাধ্যায় প্রমথনাথ তর্কভূষণ প্রমুখ চৌদ্দ জন সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। তভিন্ন মহামহোপাধ্যায় ঐদুর্গাচরণ সাংখ্যবোস্তুতীর্থ, নবদ্বীপের প্রধান নৈয়াল্লিক' মহামহোপাধ্যায় হীরাজকৃষ্ণ তর্কপঞ্চানন, মহামহোপাধ্যায় অজিতনাথ স্থায়রত্ন কবিভূষণ, মহামহোপাধ্যায় শ্ৰষন্ত্রনাথ সাৰ্ব্বভৌম, মহামহোপাধ্যায় ঐশিবচন্দ্র সাৰ্ব্বভৌম, মহামহোপাধ্য রাখালদাস ফায়রন্থ, মহামহোপাধ্যায় বিবিধ প্রসঙ্গ—শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ bూమపా ঐভাগবতাচাৰ্য স্বামী প্রভৃতি এই ব্যবস্থাপত্র স্বাক্ষর করিয়াছিলেন। স্বৰ্গীয় অধ্যাপক পণ্ডিত শরচ্চন্দ্র শাস্ত্রী ইহা ১৩২০ সালের আশ্বিনের প্রবাসীতে পুনমুদ্রিত করাইয়াছিলেন । শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ গত ২৫শে আগষ্ট বাংলা-গবন্মেন্টের শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তর হইতে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হইয়াছে, খবরের কাগজে তাহা দেখিয়াছি। তাহতে মন্ত্রী মহাশয় এরূপ আলোচনা চাহিয়াছেন যাহাতে গবক্সেণ্ট কৰ্ত্তব্যনির্ণয় করিতে পারেন। কিসে সরকার বাহাদুরের স্ববিধা হইবে তাহা আমরা জানি না। তবে আমাদের দু-চারটা মত জানাইতেছি। গবশ্লেষ্ট আগে ১লা আগষ্টের বিবৃতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬,• • • করিবেন লেখেন। সমালোচনার প্রভাবে ২৫শে আগষ্টের বিজ্ঞপ্তিতে তাহা ডালপালা লইয়া ৪৮,••• হাজারে দাড়াইয়াছে। আমরা বলি, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাবিভাগ একটা কোন সংখ্যার দাস হইবেন না ; প্রাথমিক বিদ্যালয় এতগুলি, মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয় এতগুলি, মধ্যবাংলা বিদ্যালয় এতগুলি, উচ্চ বিদ্যালয় এতগুলি, আগে হইতে এরূপ এক একটা সংখ্যা নির্দেশ করিয়া অটল আচল হইবেন না। সরকারের টাকায় যতটা কুলায় ততগুলি প্রাথমিক, মধ্য ও উচ্চ আদর্শ বিদ্যালয় তাহারা স্থাপন করুন ও চালান, কিন্তু বেসরকারী লোকদিগকে নিরুৎসাহ না করিয়া, দ্বসমন না ভাবিয়া, তাহাদিগকেও বিদ্যালয় স্থাপনে উৎসাহিত করুন। কতকগুলি বিদ্যালয় উঠাইয়া দিতেই হইবে, গবয়েন্ট এরূপ সিদ্ধাস্ত ও প্রতিজ্ঞ পরিত্যাগ করুন। যেখানে একটি বিদ্যালয় উঠাইয়া দিবেন, সেখানে তাহার জায়গায় একটি উৎকৃষ্টতর বিদ্যালয় স্থাপন করুন, কিংবা স্থানীয় অন্ত বিদ্যালয়ে তাহার ছাত্রেরা নিশ্চয় পড়িতে পরিবে, এরূপ বিশ্বাসযোগ্য জাখাল ও প্রমাণ প্রদান করুন। আমরা ভাজ মাসের প্রবাসীতে দেখাইয়াছি, যে, বঙ্গে সওয়া লক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয় হইলে তবে এই দেশের লিখন পঠনক্ষমত্ত্বের বিস্তার ও পরিমাণ কোম্পানীর আমলের আগেকার সমান হইবে। _