পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ, ৭ম সংখ্যা । ] গুলি প্রস্তরখণ্ড সংগৃহীত হইয়াছে, যাহাতে মামুষের কারুকার্য্য দেখিতে পাওয়া যায়। সোমনদী যে উপত্যকার ভিতর দিয়া প্রবাহিত, সেখানে কতকগুলি গৰ্ত্তে এই সকল প্রস্তরখণ্ড পাওয়া যায়। সে গুলি চকমকি পাশয়ের টুকরা, কিন্তু প্রত্যেকটি এমন করিয়া ভাঙ্গ যে তাহা একটা বিশেষ আকৃতি ধারণ করিয়াছে, অস্ত্ররূপে ব্যবহারোপযোগী হইয়াছে । এই সকল শিলাখণ্ডের সন্নিকটে সেইরূপই মৃত্তিকা ও বালুকায় প্রোথিত অতিকায় হস্তী, অতিকায়গণ্ডার, এবং অন্যান্ত লপ জন্তুর অস্তি পাওয়া যায় । ইহা দেখিয়৷ পৰ্থ সাহেব স্থির করেন যে, ঐ সকল শিলাস্ত্র অতিকায় হস্তীর সমসাময়িক মানবে প্রস্তুত করিয়া থাকিৰে । এই বিময় লইয়। অনেক তর্ক ও বাদামুবাদ হয় ; কারণ পণ্ডিতমণ্ডলী স্বভাবতঃ স্তন আবিষ্কার বিষয়ে অবিশ্বাসী হইয় থাকেন। প্রায় বিংশতি ৭ংসর পরে প্রত্নতত্ত্ব ও ভূতত্ত্ববিদের সোমনদীতট পুনঃ পরীক্ষা করিয়৷ পথ, সাহেবের সিদ্ধান্ত গ্রাহ্য করেন । পথ, সাহেবের আবিষ্কারের পূর্ণ অৰ্থ বুঝিবার জন্য কতক গুলি তথা জানা দরকার। প্রথম, পূৰ্ব্বে, বহুকাল পূৰ্ব্বে, পুথিবীতে এরূপ নানা জ ন্তু ছিল, যাহাদিগকে এখন আর দেখিতে পাওয়া যায় না। ভূতত্ত্ববিদের গভীর গৱেষণা দ্বারা অনেকটা স্থির করিয়াছেন যে, কতকাল পূৰ্ব্বে কোন জন্তু পৃথিবীর কোন অংশে পাওয়া যাহত । এই জন্য, কোন স্তানে কোন ও জস্থর কঙ্কাল প্রাপ্ত হইলে আমরা কতকাল পূর্কের ভূস্তর পর্যবেক্ষণ করিতেছি, তাহা স্কুলতঃ নিৰ্ণয় করিতে পারি । এই মনে করুন, এটা স্থির যে, অতিকায় হস্তী তুষারযুগের একটি বৃহৎ লোমশ জন্তু । তখন পৃথিবীর অধিকাংশ বরফে আচ্ছন্ন ছিল, আকাশ জলীয় বাষ্প পূর্ণ ছিল, মধ্য যুরোপে চরিষ্ণুনীহারপুঞ্জ (glacier) বিদ্যমান ছিল। পৃথিবীজীবনে এই তুষারযুগ প্রায় ৮০,• • • বৎসর হইল শেষ হইয়াছে, ২,৪•,••• বৎসর পূৰ্ব্বে বোধ হয় আরম্ভ হইয়াছিল । ক্রমশঃ যখন শীত কমিয়া গেল, হিমরাশি উত্তরের দিকে সরিয়া গেল, তখন শীতপ্রিয় জন্তু সকল ও উত্তরে চলিয়া গেল। কোন সময় ছিল, যখন (rein-deer) রেন্‌ হরিণ ফালে ৰিচয়ণ করিত। এখন সে হরিণ গ্ৰীণলেণ্ড ও প্রবাসী । १8१ ও ল্যাপ লণ্ডের দক্ষিণে পাওয়া ষায় না । এ সকল কতদিনের কথা, যদি জিজ্ঞাস করেন, ত ঠিক উত্তর হয় ত, কোন বৈজ্ঞানিকই দিতে পারিকেন ম৷ ৷ তৰে, ভাস্থার পর যে লক্ষাধিক বৎসর অতীত হইয়। গিয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই । দ্বিতীয় কথা যাহা জানা উচিত, তাহ। এই যে নদীগঙ কালে গভীরতর হইয়া যায়। বিস্তৃত নদীতটে ক্রমশঃ জলের গতিহীনতাবশতঃ চড়া পড়িয়া আসে, স্থল জাগিয়া উঠে, জল নামিয়া যায় । কোন সময় ছিল, যখন যুরোপে উত্তরসাগর ও ইংলিশ প্রণালার স্থানে এক প্রকা গু নদী প্রবাহিত ছিল, এবং তাহার শাখাসরিৎ রাইন, এলব, টেম্স, ছম্বর, টাইন প্রভৃতি সেই অস্বরাশির মধ্যে নিজ সলিলকর অপণ করিত । ক্রমশঃ নদীগুলি সঙ্কীর্ণতর কিন্তু গভীরতর হইয়া পড়িল, এবং তাহাদের তটে সেই কালের জীব জ স্বর অবশেষ অনেক ন্যস্ত হইয়৷ রছিল । সময়ে এই ভূমির উপর শিল, বালুক প্রভৃতি বস্তুর আচ্ছাদন পড়িল । সেই জন্য থানিকট খনন না করিলে জীবালশেম (fossil) পভৃতি সেকালের চিহ্ন পাওয়া সায় না । পায় ৮ • চীত জমী খুড়িয়। সোমনদীর উপতাকায় ৮ ক - মকির অস্ব ও অতিকায় হস্ট্রীর কঙ্কাল পাওয়া গিয়াছিল । এই স্থান কিন্তু আবার সোমের আধুনিক গর্ভ হইতে অনেক উচ্চ, কোন অংশেই ৩০ হস্তের কম উচ্চ নছে, অংশবিশেসে ৫ • হাত ও হইতে পারে । এখন হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে যে, নদীগর্ভ অtধ হাত গভীরতর হইতে ১৮s • বৎসর হইতে ১১৭০০ বৎসর লাগে। পাঠক সহজেই অনুমান করিতে পারিবেন যে, কত শত সহস্ৰ বৎসর পূর্বের পার্থিব জীবনাবশেষ এই সোমৃতীরে আবিষ্কৃত झङ्केप्लुक्नु । শুধু সোমন্তীরে নয়, পৃথিবীর অনেক স্থানে এইরূপ মানব চিহ্ন পা ওয়া গিয়াছে। একবার যখন পণ্ডিতেরা বুঝিতে পারিলেন যে, এই চকমকি থওগুলি প্রাচীন মানবের অন্ত্রসমূহ, তখন তাহারা অনেক স্থানেই এইরূপ মানৰ চিহ্ন দেখিতে পাইলেন । পূৰ্ব্বে লোকে এইরূপ শিলাখণ্ডের মৰ্য্যাদা বুঝিত না, তাহারা উছ পাইলে কখন কখন সঞ্চা করিয়া রাধিত । অশিক্ষিতের হয়ত পূজা ।