পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম ও ৯ম সংখ্যা।] সরাজুদ্দৌলার সমসাময়িক প্রসিদ্ধ রাজা কৃষ্ণচন্ত্রের পৌত্র ঞ্জি “ওমিৰ্চাদ” এবং ওমিৰ্চাদের দুই পুত্রের সাক্ষাৎ পান । সকালের প্রথামত র্তাহাদের কথাবাৰ্ত্ত পারসী ভাষাতেই ইয়াছিল। কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপৌত্র কুমারদ্বয় কৈশোর অতিক্রম করে নাই। কিন্তু তাহারাও উদ্ধ, ও পারসীতে দ্রুত কথা কহিতে পারিয়াছিল। তীবর লিখিয়াছেন, যে তাহারা উদ্ধ, অপেক্ষ পারসীতে কথা কহিতেই অধিক অনুরাগ প্রকাশ করিয়াছিল। জীবর যখন রাজা ওমিৰ্চাদের সহিত স্বাক্ষাৎ করিতে যান, তখন রাজা কেবল পুতি পরিয়া খোলা গায়ে বসিয়াছিলেন। তাহার ললাট চন্দন ও স্বর্ণপত্ৰভূমিত ছিল। তাহার পুত্রদ্বয়ও কেবল ধুতি পরিয়াছিল । কিন্তু যখন তাহারা কীবরের নৌকায় তাহার সহিত প্রতিসাক্ষাং করিতে গিয়াছিল, তখন সূক্ষ্ম মসলিনের পোষাক এবং কিংখাপের পাগড়ি পরিয়া গিয়াছিল। কদমপুর নামক একটা যায়গায় জেলেরা তাঙ্গার নৌকায় একটি রুই মাছ লষ্টয়া আসিয়াছিল। মাছটি ওজনে ১০১১ সের ছিল। জেলেরা অনেক দর দস্তুর করিয়া মাছটি বার আনায় বিক্রয় করিয়া গিয়াছিল । টাটবানিয়া ( Titybania ) নামক গ্রামের নিকটে বসিয়া লীবর লিখিয়াছেন -“এ অঞ্চলের পল্লীবাসীরা বদ্ধিষ্ণু এবং নিজ নিজ অবস্থায় সস্তুষ্ট ; যদিও, অবশু, তাঙ্গদের অতিশয় সমৃদ্ধিশালী অবস্থা ইংলণ্ডে ঘোরতর দারিদ্র্য বলিয়। বিবেচিত হইবে।” যাহারা মনে করেন যে বৃটিশ শাসনে ভারতবাসী প্রজাপুঞ্জের আর্থিক অবস্থা উন্নত হইয়াছে, তাহারা বিষপ কীবরের এই নিরপেক্ষ মন্তব্যটি মনে রাখিবেন । এরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিবার পর বিষপ হীধর লিখিতেছেন— “There are surprisingly few beggars in Bengal ” আমাদের বোধ হয় ইহা হইতে কেবল এই সিদ্ধান্ত করা যায় যে আমাদের দেশের সাধারণ লোকেরা অতি অল্পেই সস্তুষ্ট । কুমারখালির নিকটে হীবর নয় দশটি সুন্দর বৃহৎ পোষা উদ্বিড়াল লম্বা দড়ি দিয়া নদীতীরে প্রোথিত বাশের খোটায় বন্ধ দেখিয়া বিস্মিত হইয়াছিলেন । তাহাদের কয়েকটা জলে সাতার ণিয়ু বেড়াইতেছিল, কয়েকটা অৰ্দ্ধেক জলে ও অৰ্ধেক ডাঙ্গায় গুইয়াছিল, কয়েকটা বা রোদ পোহাইতে প্রবাসী ৩১৫ ছিল । তিনি অবগত হন যে কুমারখালি অঞ্চলের অধিকাংশ ধীবরই উদ্বিড়াল পোষে । তাহার। মাছ ধরায় জেলেদের বিশেষ সাহায্য করে --কখনও মাছের ঝাক তাড়াইয়। জালের মধ্যে আনিয়া ফেলে, কখন বা বড় বড় মাছ মুখে করিয়া আনিয়া দেয় । “আমার ধারণা যে যে সকল জস্তুকে আমর। যাতনা দিয়। মারিয়া ফেলি, যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার করিলে তাহারা আমাদের অনেক সুখ ও সুবিধার কারণ হইতে পারে। এই ক্ষেত্রে হিন্দুরা উদ্বিড়ালশিকারী ইংরাজ ভদ্রলোকগণ অপেক্ষ অধিকতর মুরুচি ও সন্ধিবেচনার পরিচয় দিয়াছে’ । হাবরের সময় পূৰ্ব্ববঙ্গে পান খুচরা দরে পয়সায় ১৫টা বিক্ৰী হইত। চাউলের মূল্য সের প্রতি দেড় পয়সা আন্দাজ ছিল । র্তাহার সময় একবার মগদিগের ঢাকা আক্রমণ করিলার ভীf জনক গুজব রটিয়াছিল । বিষপ চাবরের রোজ নাম্চা অতিশয় চিত্তাকর্ষক এবং নানা জ্ঞাতব্য কথায় পুর্ণ। আমরা উৎ হইতে সংক্ষেপে ছ একটি বিষয় সঙ্কলন করিলাম মাত্র । আমাদের প্রবন্ধ হইতে পাঠকের এই পুস্তকখানির কতটুকু আভাস পাটবেন বলিতে পারি না । গ্রন্থখানি আটাইশ অধ্যায়ে বিভক্ত । তন্মধ্যে আমরা কেবল প্রপম সাত অধ্যায় হঠতে কয়েকটা বিষয় সংগ্ৰহ করিয়াছি । ঢাকা পরিত্যাগ করিয়া লেখক ফরিদপুর, ভগবানগোলা, গৌড়, রাজমহল, বগলিপুর, সীতাকুগু, মুঙ্গের, পাটনা, বাকিপুর, দানাপুর, ছাপরা, বক্সার, গাজিপুর, সৈয়দপুর, বনারস, চুনার, এলাহাবাদ, ফতেপুর, কানপুর, লক্ষে, শাহজাহানপুর, ফতেগঞ্জ, বেরেলী, ভীমতাল, আলমোরা, মোরাদাবাদ মীরা , দিল্লী, বৃন্দাবন, মথুরা, আগ্রা, সেকেন্দ্রা, ভরতপুর, জয়পুর, আজমীর, চিতোর, নীমচ, প্রতাপগড়, বড়োদ, রোচ, সুরাট, সালসেট বেসীন, বোম্বাই, পুন, মাম্রাজ, প্রভৃতি স্থান দর্শন করেন । গিলগিট ও গিলগিট । ==প্রবাসী" প্রবাসী-বাঙ্গালীর পত্র। সুতরাং “প্রবাসী’তে প্রবাসী-বাঙ্গালীয় লিখিতে ইচ্ছা হওয়া স্বাভাবিক । কিন্তু প্রবাসী বাঙ্গালীর বাঙ্গাল জ্ঞানের