পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 о о পিতৃমাতৃবৎসল ; বিশেষতঃ এ সংসারের কোন আকর্ষণ মাতৃস্নেহকে বিস্কৃত করাইতে পারে না। বাড়ী যাইবেন স্থির করিলেন; পুতি চাদর পরিতে হইবে, তাঙ্গও না হয় করিবেন ; অসভ। সমাজের লোকজনের সঙ্গে মিলিতে মিশিতে হইবে, কায়ক্লেশে সহ করা যায়, কিন্তু এমিকে লহঁয়াই যত গোলযোগ | এমি জিজ্ঞাসা কfরল “কতদিনে ফিরিয়া আসিবে ?” কতদিনে ! তষ্ঠিত ! গৃহের সম্মুখস্থ পুষ্পকানন, শরতের প্রভাত সৌন্দর্য্যস্নাত, হৃদয় প্রেমরাগদপ্ত, এবং এমির রক্তাnর সদ্য চাপান-সিক্ত । কি বলিবেন বুঝিতে না পারিয়৷ এমির অধর চুম্বন করিলেন । হরি, হরি ; প্রমথনাথ ভাবিলেন কাজটা বুঝি ভাল হইল না। কিন্তু এমি প্রেমচুম্বিত অধরে, তৃপ্তি জ্ঞাপন করিয়৷ প্রমথনাথকে আশ্বস্তু এবং উৎপঠিত করিলেন । ঠিক সেই সময়ে শ্রীপুরে একটা মুগ্ধা বালিকা প্রমথনাথের ভগিনী শারদকে গোপনে জিজ্ঞাস করিতেছিল, "কলিকাতা তইতে পত্র আসিয়াছে কি ?" এবং সেই সাপরাধ প্রশ্নটা প্রকাশ না পায় বলিয়া, ভাঙ্গাকে মাথার দিব্য দিতেছিল । বালিকার নাম সরম ; যাহা হউক প্রমথনাথ গুহে গেলেন । বিলাত ফিরিয়া আসিলে এই অধম দেশ, কিরূপ দেখায়, জানি না । কিন্তু এবারে প্রমথনাথের চক্ষে শ্ৰীপুর অদ্ভুত আকার ধারণ করিয়াছিল । লোকজন কথা কহিতে জানে না, অর্থাং বেশী কথা বলে । সামাজিক তা জানে না, অর্থাৎ বড় মেশামিশি করিতে চাহে । স্ত্রী জাতির প্রতি মর্যাদা নাই, কেনন। ভদ্রঘরের রমণীরা ও দা দীদিগের মত ঘর কন্না করে কলসী কাকালে করিয়া জল টানে । মানসিক পরিবর্তনের ফলে, চিরঅভ্যস্ত দৃহগুলি এইরূপ অদ্ভূত হইয়া উঠিল । অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়া, প্রমথনাথ যেখানে গিয়৷ নিশ্চয়ই উপস্থিত হইবেন, তাক জানিয়া শুনিয়া, বুঝিয়। সুঝিয়া বালিকা সরমা অদ্যান্য স্ত্রীলোকদিগের সহিত ঠিক সেই স্থানে গিয় বসিয়াছিল ; এবং প্রমথনাথ উপস্থিত হইবামাত্র, ঘোমটা টানিয় ছুটিয়া পলাইল । সম্পর্কের হিসাৰে যাহারা তামাসা করিতে পারেন, তাহারা অঙ্গলি নির্দেশ করিয়া সরমাকে দেখাইয়। একটু বাকচাতুরী করিবার প্রয়াস পাইলেন । প্রমথনাথ ভাবিলেন, একি 5t5 ? প্রবাসী $ [ ১ম ভাগ । বৰ্ব্বর সমাজ ! কোথায় পিয়ানোসঙ্গীত এবং প্রেমসম্ভাষণ, এবং কোথায় এই ঘোমটা টানিয়া পলায়ন ! প্রমথবাবু যখনই অন্তঃপুরে প্রবেশ করিতেন তখনই “দৈবাৎ” সরমার চক্ষুদুটি চক্ষে পড়িত ; এবং সেই বালিকা চুটিয়া পলাইত। কিন্তু সেই চক্ষুদুটি ! সে কথায় এখন কাজ নাই । পূজার গোলমালে প্রমথনাথের অনুতাপের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ শেষ হইল । (○) যমের দরজায় কাটা দিয়া প্রমথনাথের ভগিনী ভাইয়ের কপালে ফোটা দিলেন ; ভ্রাতৃদি তীয়া শেষ হইল ; পূজার ছুটি কাটিয়া গেল। মা বলিলেন, ছুটা হইলেই বাড়ী আসিও, কলিকাতায় থাকি ও না। আত্মীয় পরিজন সকলেই সেইরূপ অনুরোধ করিল। সকলেই অনুরোধ করিল, কিন্তু একজন এবিষয়ে কোন কথা কহে নাচ । প্রমথনাথ যখন শয্যায় সুপ্ত হইতেন, তখন যে তাহার শয্যাপাশ্বে বসিয়া নিণিমিষ নয়নে মুখের দিকে তাকাংয়া পকিত, এবং তিনি জাগ্রত হইলেই নিদ্রার ভান করিয়া মুখ ঢাকিয়া গুইত, সে ত কোন প্রকার অনুরোধ করিল না ! সকলে তাহাকে ঘিরিয়া কথা কহিতেছে, সেই সময়ে দোতালার ছাত হইতে অন্ধউন্মুক্ত জানালার মধ্য দিয়া দুইটা চক্ষু তাহার দিকে চাহিয়া আছে। প্রমথনাথ সেই চক্ষু একবার দেখিলেন, দুইবার দেখিলেন, বোধ হয় অনেকবার দেখিলেন। যমুনাজলের মত নীল, গঙ্গাজলের মত পবি , আকাশের মত প্রশান্ত, বাতাসের মত স্নিগ্ধ। অনেকবার দেখিলেন, কিন্তু দেখিয়াও দেখলেন না । প্রমথনাথ কলিকাতায় ফিরিয়া গিয়া দেখিলেন যে মিটার পরিবারে একটা গোলযোগ উপস্থিত । কথাটা এই ষে মিটার সাহেবের বুদ্ধামাতা একাকিনী বাড়ীতে থাকিতে পারেন না বলিয়া দেশ হইতে কলিকাতা আসিয়াছেন । তাঙ্কার থাকিবীর স্থানের অভাব । যে কয়েকট ঘর আছে তাছার মধ্যে একটী মিটার সাহেবের বেড়কুম, একটী ড্রেসিং রুম ; দুট বড় ছেলে বড় মেয়ের বেড়ঙ্কম, একটতে ছোট ছেলেদিগকে লইয়া জায়া শয়ন করে ; এমিকে কষ্ট করিয়া বেড়ক্রমেই কাপড় চোপড় পরিতে হয় । লাইব্রেরিতে সকলে বসিয়া লেখা পড়া করে ; ডিনার রুম এবং ডুইং