পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৫০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8') আমরা পূর্বেই বলিয়াছি, চিত্তরঞ্জনের উদ্দেশু মনকে প্রকৃতিস্থ রাখা । কিন্তু মনকে প্রকৃতিস্থ রাশিতে গিয়া কি জীবনটাকে একঘেয়ে করিয়৷ তুলিতে হুইবে ? কখনই নয় । যাহার জীবন একঘেয়ে, সে জীবনের একটা দিকই দেখে, সমস্ত দিকগুলি সামলাইয়া দেখিতে পারেনা ; এবং দেখিতে পারেন বলিয়াই তাহার জীবনে লেমন কতকগুলি আভাব ও অসম্পতি। থাকিয়া যায়, সে যাহা শিক্ষা দিতে চায় তাহাও তেমনি অসম্পর্ণ চয়। কিন্তু চিত্তকে প্রকৃতিস্থ রাখা যায় কি করিয়া ? শরীরকে প্রকৃতিস্থ রাখিতে কইলে যেমন কঠিন ও তরল উভয়বিধ থাষ্মেরষ্ট ব্যবস্থা করিতে হয়, মনসম্বন্ধেও সেই ব্যবস্থা প্রয়োজ্য । কিন্তু অখাদ্য যোগাইবার প্রয়োজন নাই ! যাই। দিলে চিত্ত লঘু হয়, মতি চীন হয়, কল্পনা কলুষিত হয়, মনের দৃঢ়তা কমিয়া যায়, এমন কেন তরল খাদ্যের ব্যবস্থা করিলে সে ব্যবস্থাকে মন প্রকৃতিস্থ রাখার সম্পূর্ণ বিরোধী ও অনুপযোগই বলিত্তে হইবে । বঙ্গীয় বহু পাঠকের রুচি পরিতৃপ্ত করিবার জন্য সাধারণতঃ লঘু সাহিত্যের আশ্রয় গ্রহণ করা হয়। সেই লঘু বা তরল সাহিত্যের সরবরাহকারীরা যদি জাতীয় জীবনের অতীত ও বর্তমান শিক্ষা ও অভাব ভাল করিয়া বুঝিয়া লইয়া আপনাদিগকে খাট সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করিতে পারেন, এবং একট। শোভন মাদশ সরল কথার ভিতর দিয়৷ ফুটায়া তুলিবার সংসঙ্কল্পে আপনাদিগকে সঞ্জীবিত করিয়া তুলিতে পারেন, তবেই তাঙ্গদের রচিত সাহিত্য জাতীয় জীবন গঠনে কাজে লাগিবে । হয়তে একটা প্রবন্ধ বা একটা সমাজসংস্কারের বক্তৃত অপেক্ষ সামাজিক বা জাতীয় ব্যাধি প্রদর্শক একটা গল্প বা বিদ্রপাত্মক কবিতা সময়ে সময়ে অধিক কার্যকর হইতে পারে ; কিন্তু তাহাতে অশ্লীলতার ভুেঞ্জাল দিবার কোন আবশুকত আছে বলিয়া বোধ হয়না । খাট কথাটা সরল ভাষার পবিত্র স্বাবরণে সড়ম্বেপ্তে ,অনুপ্রাণিত হইয়া উপস্থিত হইতে পারিলেই তাহার সার্থকতা । সাহিত্যসেবক যে শিক্ষণ দিয়া থাকেন, সে শিক্ষার গতি কোন দিকে, ইহাও তাছার ভাবিবার বিষয় । উtহার শিক্ষার আদৌ গতিশীলতা আছে কিনা, না প্রয়াসী দুই পা অগ্রসর হইয়াই আর চলিতে পারবেন, তাহাও ১ম ভাগ । তাহার চিন্তা করিয়া দেখা কর্তব্য । যে শিক্ষার ফ , দিনের সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হইয়া যায়, জীবনে এমন গতি বা বেগ দিয়া যাইতে পারেন যে, তাহার বলে সমাজ ও জাতির জড়তা ঘুচিয়া গিয়া ইহারা উন্নতির অভিমুখে ধাবিত হইতে পারে, সাহিত্যসেবীকে তেমন অকিঞ্চিৎকর ভাবের উপরে উঠিতে হইবে । আমাদের ব্যক্তিগত জীবন যেমন বড় উন্নতসম্ভাবনা-বিশিষ্ট, আমাদের সামাজিক ও জাতীয় জীবন ও তদ্রুপ । কিন্তু সেই সম্ভাবনা সম্বন্ধে যদি সাহিত্য সেবক অন্ধ হন, তবে সেই অদূরদর্শিতার ফলস্বরূপ জাতীয় উন্নতি বহু বংসর পশ্চাতে পড়িয়! থাকে। সাঠি তাসেবকগণ একটা জাতিকে সীমাহীন জ্ঞানালোকের পথে না লইয়া গিয়া যদি একট। কৃত্রিম, সীর্ণ আলোকগঞ্জীর মধ্যে নুত করাইতে থাকেন, তাকা .ত সাহিত্যসেবীর পয়সা লাভ হইতে পারে ; কিন্তু সেই জাতিটা সাহিত্যের এই কৃত্রিম ধিচেষ্টার পাকে পড়িয় যে পঙ্কিলতা সংগ্রহ করে, তাহ। প্রক্ষালন করিতে পুনরায় যে পরিমাণ শক্তি ও সময় আরশুক হইবে, সেই পরিমাণে জাতীয় অবনতি হইল, অথব। জাতীয় উন্নতি স্ত গত রছিল, একগ। অসঙ্কোচে বলা যাইতে পারে । সাহিতাসেবীও এক হিসাবে সমাজসংস্কারক, জাতির পথপ্রদর্শক এবং গুরু; এই জন্যই তাহার পক্ষে অগ্রগমিত্ব অবিশুক । কুঙ্কটিকার মধ্যে চিরদিন বাস করিতে করিতে তাহা একট। স্বাভাবিক বা পারে পরিণত হয় ; কিন্তু র্যাচার কুয়াটিকার সীমা ছাড়াইয়া মুক্ত উদার নীল কাশের সৌন্দৰ্য্য সম্ভোগ করেন, তাহারা কুজুটিকার অনিষ্টকারিত সহজেই বোঝেন । সামাজি ক ও জাতীয় গলদের ভিতরে নিরস্তুর বাস করিয়া সে গুলিকে অস্বাভাবিক ও অশ্বাস্থ্যকর বলিয়া র্যাহাদের মনে হয় না, তাহারা সাহি ত্যক্ষেত্রে সে গুলিরই পৃষ্ঠপোষক রূপে অবতীর্ণ হন। কিন্তু সাহিত্যসেবীকে জাতীয় জীবনের নেতা ও শিক্ষক হইতে হইলে তঁহার আসন উাহার সময়ের জাতীয় জীবনের উচ্চতম অভিব্যক্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে । যাহারা জাতীয় জীবনের রুদ্ধ দ্বার গুলি মুক্ত করিয়া দিতে পারেন, আলোক ও বায়ুর প্রবেশপথের বাধাগুলি সরাইয়া দিয়া জাতীয় দেহে স্বাস্থ্য