পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88, به ۰۰۰عه، ه هدهد. همه هاه ফিরাইয়া বিনয়ের প্রতি মনোনিবেশ করিলেন । তাই দেখিয়া পরেশ আস্তে আস্তে গোরার কাছে তার চৌকি টানিয়া লষ্টয়া তার সঙ্গে দৃঢ়স্বরে আলাপ কৰিতে লাগিলেন। এমন সময় রাস্ত দিয় চীনের বাদামওয়ালা গরম চীনাবাদাম নামা হাকিয়া,থাইতেই লীলা হাততালি দিয়া উঠিল --কহিল—“সুধীর দা, চানেবাদাম ডাক ৷” ললিতেই ছাদের বারানদী পরিয়া সতীশ চীনাবাদামওয়ালাকে ডাকিতে লাগিল । ইতিমধ্যে আর একটি ভদ্রলোক আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাহাকে সকলেই পাতু বাবু বলিয়া সম্ভাষণ করিল কিন্তু তাহার আসল নাম হারানচন্দ্র নাগ । দলের মধ্যে ইঙ্গর বিদ্বান ও বুদ্ধিমান বলিয়া বিশেষ খ্যাতি আছে। যদিও স্পষ্ট করিয়া কোনো পক্ষই কোনে কথাই বলে নাই তথাপি ইহার সঙ্গেই সুচরিতার বিবাহ হঠবে এই প্রকারের একটা সম্ভাবনা আকাশে ভাসিতেছিল। পাস্তু বাবুর হৃদয় যে সুচরিতার প্রতি আকৃষ্ট ইয়াছিল তাহাতে কাহারো সন্দেহ ছিল না এবং ইহাই লইয়া মেয়ের সুচরিতাকে সৰ্ব্বদা ঠাট্টা করিতে ছাড়িত না । পামু বাবু ইস্কুলে মাষ্টারি করেন। বরদাসুন্দরী তাহাকে ইস্কুলমাষ্টার মাত্র জানিয়া বড় শ্রদ্ধা কবেন না । তিনি ভাবে দেখান যে পায় বাবু যে তাহার কোনো মেয়ের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করিতে সাহস করেন নাই সে ভালই হইয়াছে। তাহার ভাবী জামাতার ডেপুটিাগরির লক্ষ্যবেধরূপ অতি দুঃসাধ্য পণে আবদ্ধ । সুচরিত। হারানকে এক পেয়ালা চা অগ্রসর করিয়া দিতেই লাবণ্য দূর হইতে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া একটু মুখ টিপিয়া হাসিল। সেই শসিটুকু বিনয়ের অগোচর রহিল না। অতি অল্প কালের মধ্যেই দুই একটা বিষয়ে বিনয়ের নজর বেশ একটু তীক্ষ এবং সতর্ক হইয়া উঠিয়াছে --দর্শন নৈপুণ্য সম্বন্ধে পূৰ্ব্বে সে প্রসিদ্ধ ছিল না । , এই যে হারান ও সুধীর এ বাড়ির মেয়েদের সঙ্গে অনেক দিন হইতে পরিচিত—এবং এই পারিবারিক ইতিহাসের সঙ্গে এমন ভাবে জড়িত যে তাহারা মেয়েদের মধ্যে পরস্পর ইঙ্গিতের বিষয় হইয়া পড়িয়াছে বিনয়ের বুকের মধ্যে ইহা বিধাতার অবিচার বলিয়া বাজিতে লাগিল । { ৭ম ভাগ । এদিকে হারানের অভ্যাগমে মুচরিতার মন যেন একটু আশান্বিত হইয়া উঠিল। গোরার পদ্ধ যেমন করিয়া হৌকৃ" কেহ দমন করিয়া দিলে তবে তাহার গায়ের জ্বালা মেটে। অন্ত সময়ে হারানের তাকিকতায় সে অনেকবার বিরক্ত হইয়াছে কিন্তু আজি এই তর্কবীরকে দেখিয়া সে আনন্দের সঙ্গে তাঙ্গকে চ ও পাউরুটির রসদ জোগাইয়া দিল । পরেশ কহিলেন-“পানু বাবু, ইনি আমাদের”— হারান কহিলেন—“ওঁকে বিলক্ষণ জানি। উনি এক সময়ে আমাদের ব্রাহ্মসমাজের একজন খুব উৎসাহী সভ্য ছিলেন।” এক্ট বলিয়া গোরার সঙ্গে কোনো প্রকার আলাপের চেষ্টা না করিয়া হারান চায়ের পেয়ালার প্রতি মন দিলেন। সেই সময়ে দুই একজন মাত্র বাঙালী সিভিল সার্ভিসে উত্তীর্ণ হইয়া এদেশে আসিয়াছেন। সুধীর তাহদেরই একজনের অভ্যর্থনার গল্প তুলিল । হারান কতিলেন, “পরীক্ষায় বাঙালী যতই পাস করুন বাঙালীর দ্বারা কোন কাজ হবে না ।” কোনো বাঙালী ম্যাজিষ্ট্রেট বা জজ ডি ক্টের ভার লহয় যে কখনো কাজ চালাইতে পারিবে না ইহাই প্রতিপন্ন করিবার জন্য হারান বাঙালীর . চরিত্রের নানা দোষ ও দুৰ্ব্বলতার ব্যাখ্যা করিতে লাগিলেন। r দেখিতে দেখিতে গোরার মুখ লাল হইয়া উঠিল—সে তাহার সিংহনাদকে যথাসাধ্য রুদ্ধ করিয়া কহিল—“এই যদি সত্যই আপনার মত হয় তবে আপনি আরামে এই টেবিলে বসে বসে পাউরুটি চিবচ্চেন কোন লজ্জায় !" হারান বিস্মিত হইয়া ভুরু তুলিয়া কছিলেন, “কি করতে বলেন ?” গোরা । হয় বাঙালী চরিত্রের কলঙ্ক মোচন করুন নয় গলায় দড়ি দিয়ে মরুনগে। আমাদের জাতের দ্বারা কখনো কিছুই হবে না একথা কি এতই সহজে বলার ? আপনার গলায় রুটি বেঁধে গেল না ? হারান। সত্য কথা বলব না ? গোরা। রাগ করবেন না, কিন্তু এ কথা যদি আপনি যথার্থই সত্য বলে জানতেন তাহলে অমুন আরামে অত আস্ফালন করে বলতে পারতেন না। কথাটী মিথ্যে জানেন বলেই আপনার মুখ দিয়ে বেরল—হারান বাবু মিথ্যা পাপ,