পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা । ]

  • ...* به " هم - مد. وی هاه

, দেখিয়া রাসবেস্থার বাবু একহাতে তাহাকে দৃঢ় রূপে ধরিয়া অপর হাতে সস্তরণ কাটিয়া সেই বৃহৎ জলাশয় পার হইলেন। পরপারে আসিয়া অনেক চেষ্টা ও যত্নে সন্ন্যাসীকে সুস্থ করিয়া কিছুক্ষণ বিশ্রাম করতঃ উভয়ে বিভিন্ন পথে প্রস্থান করিলেন । দিল্লী হইতে জুসিবার সময় পথের স্বরূপ যে ২০০২ শত টাকা লইয়া আসিয়াছিলেন এ পর্য্যন্ত তাহ তাহার নিকটেই ছিল। পথিপাশ্বে একটি কূপের ধারে অতি সামান্ত একটু খুড়িয়া সেই টাকা পুতিয়া রাখিয়া গেলেন। ভাবিলেন সমস্ত ত্যাগ করিয়া আসিয়াছি শেষে এই সামান্ত টাকার জন্য আবার বিপদে পড়িব । কিন্তু জগদীশ্বর যাহাকে রক্ষা করেন কেহই তাহাকে মারিতে পারে না ; রোতকের সকল লোকই তাহাকে চিনিত এবং তিনি পল্টনে চাকুরী করিয়া অনেক টাকা উপাগুর্জন করিতেন এইরূপ মনে করিত তাই তাহারা তাহাকে খুজিতে লাগিল। রোতকে জন্মেজয় ঘোষ নামে এক ব্যক্তি ছিলেন রাসবেতার বাবু তাহাকে পিতৃব্য সম্বোধন করিতেন। সন্ন্যাস গ্রহণ করিবার পর তাহার বাটীতে গিয়া দেখিলেন •সেখানে ডাকাইতি হইয়া গিয়াছে। ডাকাইতেরা ধন রত্ন ইষ্টতে সামান্ত আহারীয় দ্রব্য পর্যন্ত লুটিয়া লইয়া গিয়াছে ; একখানি পরিধেয় বস্ত্র পর্য্যন্ত রাখিয়া যায় নাই । তিনি কয়েক দিন সেখানে ছিলেন। একদিন সন্ধ্যার পর বাট ফিরিতেছেন দেখিলেন চারিজন লোক একখানি খাটিয়ায় একটি মৃত দেহ লইয়াতাহার আগে আগে যাইতেছে ক্রমে তাহারাও জন্মেজয় বাবুর বাটতে উপস্থিত হইল দেখিয়া তিনি সরিয়া দাড়াইলেন। বাহকের গৃহস্বামীকে বলিল, “আমরা পল্টনের বাবু মনে করিয়া আপনার পুত্রকে মারিয়াছি। বোধ হয় এ এখনও বাচিয়া আছে, চেষ্টা করিলে বাচিতে পারে।” তাহারা চলিয়া গেলে রাসবেহারী বাৰু নিকটে আসিয়া দেখিলেন, কালী বাবুর সর্বাঙ্গে অস্ত্রাঘাত ; তিনি অচৈতন্ত হইয়া রহিয়াছেন। পুত্রের অবস্থা দেখিয়া জন্মেজয় ও র্তাহার স্ত্রী চীৎকার করিয়া কঁাদিতে লাগিলেন। বহুকষ্টে তিন দিন পরে তাহার চৈতন্ত হয়। ঈশ্বরকৃপায় কালী বাবু সেই ভীষণ মৃত্যুকবল হইতে উদ্ধার পাইলেন। আর একদিন রাসবেহারী বাবু পথে যাইতেছেন তাহার কানের নিকট দিয়া দুটি গুলি শন শন করিয়া চলিয়া গেল। সিপাহীবিদ্রোহের সময় প্রবাসী বাঙ্গালী। . .*.** 88% 款 নিক্ষেপকারী অবত তাহার ললাট লক্ষ্য করিয়াই গুলি ছুড়িয়াছিল কিন্তু পরম করুণাময় পরমেশ্বরের অপার-মহিম বলে তিনি সে যাত্রাও রক্ষা পাইলেন ! আর সহরে থাকা বিপদ জনক ভাবিয়া তিনি রোতক । ছাড়ির একটি গ্রামে গিয়া রছিলেন। শান্তস্বভাবগ্রামবাসিগণ র্তাহাকে “সাধু” দেখিয়া যত্নপূৰ্ব্বক দুগ্ধ ফল মূল ইত্যাদি দিয়া যাইত। এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণী তাহাকে পুত্র সম্বোধন করিয়াছিলেন এবং তিনিও তাহাকে মা বলিতেন। ব্রাহ্মণী বিশেষ যত্ন করিয়া তাহাকে ভালরূপ আহার করাইতেন। ' বৃদ্ধ সঙ্গতিপন্ন ছিলেন, তাহার বাটীর পাশ্বে র্তাহার একটি শিবমন্দির ছিল। তিনি তাহাকে সেই মন্দিরে থাকিতে দিলেন। তাহার সৌম্য মূৰ্ত্তিতে সন্ন্যাসীর বেশ অপূৰ্ব্ব শোভা সম্পাদন করিত। পূৰ্ব্ব হইতে তিনি কিছু চিকিৎসা বিদ্যা জানিতেন । গ্রামবাসিগণ র্তাহাকে সিদ্ধ পুরুষ মনে করিয়া স্ব স্ব অভিপ্রায়ে দলে দলে স্ত্রী পুরুষ র্তাহার কাছে আসিত। স্ত্রীলোকেরা ঔষধ লইতে, ছেলে ঝাড়াইতে, প্রশ্ন গণনা করাইতে আসিত। কেহ বা সাধু দর্শনে পুণ্য ভাবিয়া দর্শন । করিতে বা আহার সামগ্ৰী দিতে আসিত । পুরুষের কেহ সেতার শিথিতে , কেহ গীত শিখিতে, কেহ ভজন শুনিতে কেহ বা শাস্ত্রালাপ করিতে আসিত। এই ভাবে তিনি সেখানে থাকিয়া দিন কাটাইতে লাগিলেন এবং দিন দিন গ্রামবাসিগণের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাভাজন হইয়া উঠিলেন। এ দিকে দিল্লী প্রভৃতি স্থানও ক্রমে শাসিত হইল। এক দিন সেবিয়ার সাহেবের এক ভূত্য কোন কার্য্যোপলক্ষে সেই গ্রামে আইসে। ঘটনা ক্রমে তিনি তাহাকে দেখিতে পাইয়া ডাকিয়া অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় অবগত হইলেন। পরে তাহার নিকট নিজ প্রভু সেবিয়ার সাহেবকে এই মৰ্ম্মে এক পত্র লিখিয়া দিলেন যে “আমি এখানে এই ভাবে আছি, আমাকে লইয়া যান। সেবিয়ার সেই পত্র পাইয়া একশত দুরাণী সৈন্ত সঙ্গে দিয়া কাপ্তেন হডসনকে পাঠান। কাপ্তেন হড়সন এক সহস্র দুরাণী সৈন্য লইয়া একটি পল্টন’ গঠিত করেন। তাহার গঠিত পল্টনের নাম হডসন্স, হর্স্। তাহারই একশত সৈন্ত লইয়া তিনি রোতকের নিকট সেই গ্রামে আসিয়া উপস্থিত হইলেন ; ও গ্রামের প্রান্ত ভাগে তাবু খাটাইয়া সসৈন্তে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন।