পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা । ] বসে থাকে পাশে তার । ভাবে মনে মনে হয় ত তাহার আশা আকাঙ্ক্ষা তাহার লভিছে বিশ্রাম সেই সমাধি মাঝার । হায় সেই দুঃখক্লিষ্ট বিষাদ অস্তরে চাহিছে বিশ্রাম শান্তি বালা চির তরে। কথনো বা লোকমুথে কত ভাসা কথা শুনিতেছে, আশার পুলকে বীণা পুনঃ বাজিয়া উঠিছে বক্ষে । কখনো সে গুনে কোনো যাত্রীমুখে তার প্রণয়ীর কথা, দেখেছে বিমলে সবে সুমন্তের সাথে বিমল যাত্রীর বেশে গ্রামে গ্রামে ফিরে দিনেকের তরে তার গতি নহে স্থির । কেহ বা আশ্বাসি তারে সুমধুর স্বরে কহিছে আশার বাণী, “কেন বালা তুমি স্বপনে রয়েছ মগ্ন ? অাশা ছায়া ধরে ফিরিছ বিমল আশে, সে কোথা এখন ? এভাবে বিফলে কেন কাটাবে জীবন ? এখানেত কত যুবা তোমার লাগিয়া হতাশে কাটায় দিন । তাদের প্রণয়ে কেন না হইবে সুখী তোমার হৃদয় ? এরূপে একেল তুমি এমন বয়সে ফিরিতেছ পথে পথে, সে কভু কি হয় ? অকালে দলিতে চাও আপন হৃদয় !” নলিনী একই কথা করিছে উত্তর “কখনো না এ হৃদয় ( ভালবাসি যারে তারি শুধু) আর আমি দিব না কাহারে । যাহার উদ্দেশে পূজা করিছে হৃদয় সে দেবতা বিনা আমি দিব কার পায় ?. প্রেমের আলোক মোর দুৰ্দ্দিনে বিপদে দেখাইবে পথ ঘাট ধ্রুবতারা সম । আমার এ প্রেম কভু হবে না নিষ্ফল।” বৃদ্ধ পুরোহিত যিনি পিতার সমান নলিনীর, যুব স্নেহে এ ঘোর বিপদে লভেছে আশ্রয় শাস্তি। স্নেহ মুগ্ধ স্বরে দলিত কুসুম। 8ግጬ বলিলেন, “যিনি বংসে দিয়াছেন তোমা এ অক্ষয় প্রেমসুধা, তাহার করুণ করিবে তোমার শূন্ত হৃদয় পূরণ। প্রেম কভু বৃথা নয় যায় না বৃথায়, যদি নাই পূর্ণ হয় সংসারের সাধ যদি প্রেম নাহি লভে প্রেমের আশ্রয়, ইহার প্রবাহ বহি যাইবে যেথায় প্রণয়ের উৎস বৎসে আছে বিরাজিত । সেই উৎস হতে পুনঃ আসিবেক ধারা তোমার হৃদয় উৎসে, অতি নিরমল শান্তিবারি, আর সহিষ্ণুতা। তব হৃদি পূর্ণ হবে, সেই স্নিগ্ধ মধুর পরশে, ধরার প্রণয়ে যাহে শত আশা জাগে সহস্র আকাঙ্ক্ষা পুর্ণ। লভি সে প্রণয় হবে শুদ্ধ শাস্ত বৎসে তোমার হৃদয় । ঈশ্বরের প্রেমরাশি পবিত্ৰ নিৰ্ম্মল তোমার জীবন-পথ করুক উজ্জ্বল ।” সেই আশা বাক্যে শাস্ত হইল হৃদয় নব বলে বলীয়ান হইল আবার । প্রণয়ীর পথ আশে রহিল চাহিয়া নলিনী প্রণয় ভরে । আকাশ ধরণী কহিছে শ্রবণে তার আশ্বাসের বাণী । মুনীল সমুদ্র হতে আসিছে ভাসিয়া যেন শত শোকগীতি, কিন্তু সুরে তার বাজিছে মধুরে সেই আশার ঝঙ্কার “হয়ে না নিরাশ বালা ।” এইরূপে হায় নলিনী ও পুরোহিত গ্রাম হতে গ্রামে, ফিরিছেন প্রতিদিন । হায় সে নলিনী পিতার সুথের গৃহে, স্নেহ শাস্তি মাঝে কি ভাবে কাটাত দিন। আজ কোন ভাবে পথে পথে ফিরিতেছে, দুখানি চরণ শত ছিন্ন পথে পথে, কণ্টক আঘাতে । আলেয়ার আলো সম তাদের নয়নে শতবার জেগে উঠে মিলনের ছবি।