পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

848 করিয়াছে, এতদিন নিজের উদ্দেশু গোপন রাখিয়া আজি লন্ধকাম হইয়াছে। মুহুর্তের জন্য মহর্ষি বাল্মীকি সীতার দেবীত্ব ঘূচাইয় তাহার রমণীত্ব বিঘোষিত করিয়াছেন—এই মুহূর্তে সীতাদেবী নিজের অদৃষ্টবজ নিজ হন্তে সংগঠিত করিয়া নিজের মস্তকে নিক্ষেপ করিয়াছেন। সে বজ্ৰ লক্ষ্মণের প্রতি র্তাষ্ঠীর দ্বিতীয় তিরস্কার বাক্য । অনাৰ্য্য করুণরস্ত নৃশংস কুলপাংসন। অহং তব প্রিয়ং মস্তে রামস্ত ব্যসনং মহৎ ॥ রামস্ত বাসনং দৃষ্ট তেনৈতানি প্রভাষসে। নৈব চিত্রং সপত্নেষু পাপং লক্ষ্মণ যদুভবেৎ। ত্বৰিখেষু নৃশংসেযু নিত্যং প্রচ্ছন্নচারিযু॥ সুদুষ্টত্বং বনে রামমেকমেকোমুগচ্ছসি। মম হুেতোঃ প্রতিচ্ছন্নঃ প্রযুক্তঃ ভরতেনব । তল্লসিধ্যতি সৌমিত্রেরঘাপি ভরতন্ত বা । কথমিলীবরস্তামং রামং পদ্মনিভেষাণম্ ॥ উপসংস্বত্য ভৰ্ত্তারং কাময়েয়ং পৃথগ জনম্। সমক্ষং ভব সৌমিত্রে প্রাণাংস্তক্ষ্যাম্যশংসয়ম্ ॥ রামং বিনা ক্ষণমপি নৈব জীবাভূমি তলে । নিপুণ চিত্রকর বাল্মীকি সীতাদেবীর এই বচনের উপযুক্ত উন্মাদমূৰ্ত্তি আঁকিয়াছেন। মহর্ষি বাল্মীকি এই তিরস্কারকে লোমহর্ষণ বলিয়াছেন। আমরাও বলি এই তিরস্কার লোমহর্ষণ কিন্তু অস্বাভাবিক নহে । আমাদিগকে একবার সীতাদেবীর তাৎকালীন অবস্থা স্মরণ করিতে হইতেছে। বিজন কাননাভ্যস্তরে একাকিনী সীতাদেবী, পাশ্বে লক্ষ্মণ ; সম্মুখে কাননাভ্যন্তর হইতে রামের কাতর অর্তনাদ সীতাদেবীর কর্ণগোচর হইয়াছে ; তাহার অত্যন্ত বিশ্বাস হইয়াছে যে রামের আর্তস্বরই বটে। তাহার সমস্ত হৃদয় সেই স্বরাভিমুখে ছুটিয়াছে—রামের বিষম বিপদ হইয়াছে ভাবিয়া তিনি দুশ্চিস্তায়, শোকে ও ভয়ে মৃতপ্রায় হইয়াছেন। সেই অবস্থায় তিনি লক্ষ্মণকে রামের উদ্ধারার্থ যাইতে অনুরোধ করিলেন কিন্তু লক্ষ্মণ গেলেন না । বার বার অনুরুদ্ধ হইয়াও লক্ষ্মণ গেলেন না । তখন সীতার মনে শত পাপচিন্তার উদয় হওয়া সম্ভব নহে কি ? তখন লক্ষ্মণের প্রতি শত সন্দেহ তাহার মনে জন্মান অস্বাভাবিক কি ? কখনই নহে। মহর্ষি ইচ্ছা করিলে দুটো অপেক্ষাকৃত সভ্য কথা সীতার মুখে বসাইতে যে না পারিতেন তাহা নহে, কিন্তু তিনি তাহ করেন নাই। তাহার কারণ তখন যদি সীত৷ ওজন করিয়া, পরে তাহার কথার কিরূপ সমালোচনা হইবে ভাবিয়া, লক্ষ্মণের প্রতি অবিচার হইতেছে কি না তাহ প্রবাসী । حه مهمی به همین صعه حمایی به همراه هوهسته [ १भ छांनं । AASAASAAeAeAeAS AeS SAAAASAASAASAASAASAAeAeSAASAAAS ভাবিয়া চিন্তিয়া গালি দিতে বসিতেন তাহা হইলে হয় তো শুনিতে বেশ হইত কিন্তু তাহ অবস্থানুরূপ বা স্বাভাবিক হইত না। বিশেষতঃ মহর্ষির কাছে আর একটা বিষম সমস্ত উপস্থিত হইয়াছিল। স্বাভাবিক হয় অথচ এমন তীক্ষ হয় যে যাহাতে চিরাত্মজয়ী লক্ষ্মণেরও ধৈৰ্য্যচ্যুতি চাই, তাহার বিষ এত প্রবল হয় যে ভ্রাতৃবৎসল লক্ষ্মণকে রামাজ্ঞ লঙ্ঘন করিতে প্রবৃত্ত করিতে পারে এমনই তিরস্কার সীতার মুখে তাহাকে বসাইতে হইয়াছে। যাহা রামায়ণে আছে সেই তিরস্কারেই শুধু এই উভয় কাৰ্য্য সম্পন্ন হইতে পারে। যেখানে কঠিন বজের প্রয়োজন সেখানে মাইকেল সামান্ত প্রস্তর নিক্ষেপ করিয়াছেন । যেখানে হৃদয়বেধকারী আয়ুধের প্রয়োজন সেখানে পুষ্পশর কৃষ্টি করিলে স্বাভাবিক হইবে কেন ? তাহা করিলে লক্ষ্মণের চরিত্রের গুরুত্ব নষ্ট হইয়া যায় যে ৷ মাইকেল যে তিরস্কার লিপিবদ্ধ করিয়াছেন তাহা শুনিয়া লক্ষ্মণ তো হাসিয়া উড়াইয়া দিতেন, একটী পাও নড়িতেন না—রামায়ণকাব্যেরও স্বষ্টি হইত না । সমগ্র রামায়ণকাব্যে বা ইতিহাসে সীতার এই “দুষ্ট সরস্বতী” মেরুদণ্ড স্বরূপ। দুষ্ট হইলেও এই বাণীর ভিতর দিয়াই আমরা তাহার পতিপ্রেমের অসীম প্রখরতা ও তীব্রতা অনুভব করিতে পারি। চিরবিশ্বাসী, চিরজিতেন্দ্রিয় লক্ষ্মণের প্রতি অবিচারেই সেই তীব্রত বিশেষরূপে প্রকাশিত। অতএব ইহাকে উনবিংশ বা বিংশ শতাব্দীর রুচিরূপ ক্ষুদ্র মানদণ্ড দ্বারা পরিমাণ করিয়া মহর্ষি বাল্মীকির মুকুট খৰ্ব্ব করিবার প্রয়াস করা কতদূর সঙ্গত তাহ বলিতে পারি না । সমস্ত কথা বিবেচনা করিয়া দেখিলে ইহাই বলিতে হয় যে মাইকেল মধুসুদন দত্ত সীতার চরিত্রে বিশেষ কৃতিত্ব দেখাইলেও এবিষয়ে তিনি কোনও রূপেই মহর্ষিচিত্রিত সীতা-চরিত্রের উৎকর্ষবিধান করিতে পাবেন নাই। অতঃপর আমরা যোগীন্দ্র বাবুর দ্বিতীয় হেতুর বিচারে প্রবৃত্ত হইব। তিনি বলিতেছেন যে “অত্যাচারী রাক্ষসবংশের প্রতি অনুকম্পী আর্য রামায়ণে সীতাপ্রকৃতিতে অৰ্পিত হয় নাই ; ইহা মধুসূদনেরই সৃষ্টি।” একথার বিচার করিবার পূৰ্ব্বে আর একটা ক্ষুদ্র বিষয়ের অবতারণা করা প্রয়োজন হইতেছে। সীতা ও সরমার কথোপকথনে যখন সরমা