পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯ম সংখ্যা । ] সীতাদেবীর অঙ্গ অলঙ্কারবিহীন দেখিয়া রাবণকে দো দিতেছিলেন তাহাতে সীতাদেবী কহিয়াছিলেন – বৃথা গল্প দশাননে তুমি বিধুমুপি, আপনি খুলিয়া আমি ফেলাইনু দুরে আভরণ. যবে পাপী ধরিল অামারে বনগ্ৰিমে । 發 এই কথা অবতারণা করিবার পূৰ্ব্বে যোগীন্দ্র বাবুর উক্তি এই ঃ– “শণযন্ত্রনিন্মুক্ত মণির স্বায় সীতাচরিত্র উহার হস্তে আরও যেন একটু উজ্জ্বল হইয়াছে।" মূল রামায়ণে এইরূপ কথোপকথন নাই, সেখানে সীতা ও সরমার কথোপকথন অন্তরূপ, অতএব বাল্মীকির এই সব কথা লিথিবীর প্রয়োজন হয় নাই ; তাহার অপর এক কারণ যে সীতাদেবী অঙ্গের সমস্ত আভরণ ফেলিয়া দেন নাই, তাহাই মূল রামায়ণে কথিত হইয়ছে। মাইকেল সীত। দেবীকে সমস্ত অলঙ্কার ত্যাগ করাইয়া এই কথোপকথনের অবতারণা করিয়াছেন। সীতাদেবীকে মিথ্যাবাদিনী না করিলে সরমার কথার ওরূপ ভিন্ন আর কোনও প্রত্যুত্তর সম্ভব হয় ন, অতএব এ বিষয়ে রামায়ণের অপেক্ষ মেঘনাদবধের উৎকর্ষ আমি দেখিতেছি না। রামায়ণের সীতা অপক্ষপতে গুণগ্ৰাহিণী । শত্রুপক্ষের শাহারা গুণশালী তাহদের গুণ তিনি শত মুখে থাক্ত করিয়াছেন। তিনি অবিন্ধ্য রাক্ষস সম্বন্ধে হনুমানকে কহিয়াছেন - “অবিন্ধ্যে নাম মেধাবী বিদ্বান রাক্ষসপুঙ্গব: | ধৃতিম। &ীলবান বুদ্ধে রাবণস্ত হসন্মত: ॥" ugণও যে র্তাহীর প্রতি অনুগ্রহ, করিয়াছিল তাহীও তিনি হনুমনকে লিতে ভুলেন নাই । * . "দ্বেী মাসে তেন মে কালে জীবিতানুগহঃ কৃতঃ ॥” মার্য রামায়ণের সীতা শক্ৰ-মিত্রের প্রতি সমভাবে সুবিচার{য়ী । এখন যোগীন্দ্র বাবুর আসল কথাটার অবতারণা করা tউক। তিনি লিখিয়াছেন— দ্বিতীয়বার সরমা আসিয়া--সীতাদেবীকে মেঘনাদের মৃত্যু এবং শীলার চিতারোহণ সংবাদ প্রদান করিলেন । যিধাতার অনুগ্রন্থে হার কারাগারের দ্বার যে উন্মুক্ত হইবার উপক্রম হইল তজ্জন্ত তিনি ধাতাকে ধস্তবাদ প্রদান করিলেন, কিন্তু রাক্ষসবংশের দুরবস্থা স্মরণ রয় তাহীর হৃদয় বিগলিত হইল । তিনি নিরপরাধিনী ; কিন্তু হায় । ধতি। তাহাকে রাক্ষসবংশের কালস্বরূপিণী করিলেন কেন? তাহারই নিরপরাধ মেঘনাদ এবং নিরপরাধিনী সাধ্বী প্রমীলা যে চিতানলে গগীকৃত হইতেছিলেন তাহ চিন্তু করিয়া উহার হৃদয় অধীয় হইল ; নি সজল নয়নে সরমকে বলিলেন,— “কুক্ষণে জনম মম সরমা রক্ষিসি, সুখের প্রদীপ সখি নিবাই লে৷ সদা - প্রবেশি যে গৃহে হায় অমঙ্গলারূপী আমি ] পোড়া ভাগ্যে এই লিখিলা বিধাতা । * * * হাদে দেখ হেথা— মরিল বায়বজিৎ অভাগীর দোষে আর রক্ষোরণী কত কে পারে গণিতে । সীতা । - ۰ مه ۰۰۰۰-- ع عهها --------- ۰۰۰۰،۰۰۰۰۰ - ۰ - ح 8-6 মরিল দীনববীল অতুল এ ভবে , • f সৌন্দর্য্যে। বসন্তারম্ভে হয় লো শুকাল o হেন ফুল ।" সীতাচরিত্রের এই অনুপম দেবভাব মূল রামায়ণে নাই। অত্যাচারী রাক্ষসবংশের প্রতি অনুকম্প আর্ধ রামায়ণের সীতাপ্রকৃতিতে অর্পিত হয় নাই . ইহা মধুসূদনেরই স্বষ্টি।" o আমি অস্বীকার করি না যে মধুসূদন ੋਣਾ খুব উন্নত করিবার প্রয়াস করিয়াছেন, সে চেষ্টা সীতাদেবীর উপরে উদ্ধত বচনে প্রকাশ পাইতেছে। কিন্তু দুঃখের সহিত বলিতে বাধ্য হইতেছি যে তাহার এ প্রয়াস সফল হয় নাই। আর্ষ রামায়ণের সীতা-চরিত্রে দেবভাব আছে কি না তাহ পরে দেখা যাইবে । তবে ইহা অবশ্যই সকলে স্বীকার করিবেন যে সে চরিত্রে অস্বাভাবিকতা নাই, এবং তাহাতে প্রচুর পরিমাণে মহিমময় রমণীত্ব বিরাজিত আছে। পুৰ্ব্বেই বলিয়াছি মহর্ষি সীতাদেবীকে রমণীরূপেই চিত্রিত করিয়াছেন। সেই জগৎমনোহর চিত্রের মূল তত্ত্ব আমদিগকে আর একবার স্মরণ করিতে হইবে । যে অত্যন্ত প্রখর পতিপ্রেম সীতাদেবীকে লক্ষ্মণের প্রতি অবিচার করিতে প্রবৃত্ত করিয়াছিল সেই পতিপ্রেমই সীতার মুখে মধুসুদনস্তষ্ট বচনাবলীর অস্বাভাবিকতা প্রতিপন্ন করিতেছে। যাহার প্রতিমুহূর্তের আত্যস্তিক কামনা যে পতি-সমাগমপথরোধী রাক্ষসকুল ক্ষয়প্রাপ্ত হউক, তাহার কখনও কি রাক্ষসরথার নাশে দুঃখিত হওয়া সম্ভব না স্বাভাবিক ? রাক্ষসবিনাশ তাহার আনন্দজনকই হইয়াছিল। সীতাদেবী জানিতেন যে ইন্দ্রজিৎ তাহার পতি-সম্মিলনের প্রধান অন্তরায় । সেই অন্তরায় অপস্তত হওয়াতে র্তাহার হৃদয়ে যে নিরতিশয় আনন্দ সমুথিত হইয়াছিল, তাহার সঙ্গে কোনও আততায়ী ভাবের সম্মিলন সস্তবে না । ইন্দ্রজিৎ নিরপরাধ কেমন করিয়া হইলেন তাহা আমরা বুঝিতে পারিলাম না। অপরের চক্ষে নিরপরাধ হইলেও সীতার চক্ষে তিনি তো নিরপরাধ নহেন। র্তাহাকে রামচন্দ্র হইতে বিযুক্ত রাখিবার চেষ্টায় যে যে রাক্ষস নিযুক্ত ছিল সকলেই র্তাহার চক্ষে বিষম অপরাধী ; বিশেষতঃ তিনি জানিতেন যে ইন্দ্রজিৎ দুইবার অন্যায় যুদ্ধে রাম ও লক্ষ্মণকে পরাজিত করিয়া অত্যন্ত ক্লেশ দিয়াছিল। সেই ইন্দ্রজিতের পতনে র্তাহার হৃদয়ে দুঃখের সঞ্চাব কিরূপে হইতে পারে ? তিনি বুঝিয়াছিলেন যে ইন্দ্ৰজিতের মৃত্যুতে তাহার পতির সহিত