পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম সংখ্যা। ] পড়ে, আড়ষ্ট বিরত নরনারী মূৰ্ত্তি দেখি চিত্ত বাধা পায়। সূক্ষ্মবস্ত্রের প্রাচুর্য্য যেমন স্তরবিন্যস্ত কুঞ্চনগত হইয়াও দেহকে, দেহের প্রতোক অবয়বের , গঠনভঙ্গিকে গোপন করে না, মোটা কাপড় তেমন পারে না, ইহার প্রচুরতা দেহকে খৰ্ব্ব করিয়া আপনার চাকচিকাময় মহার্ঘ্য মাহাত্মাই ঘোষণা করে। যুরোপের মাবহ অবস্থা যখন মোট কাপড় ব্যবহারে বাধা করিতেছে তখন তাঙ্গ শালীন শোভনভাবে যথাসম্ভব দেলের অনুকারী ইলেই সৌন্দৰ্য্য রক্ষা হয়, নচেৎ অন্ত কোন উপায় নাই । পরিচ্ছদ কেবল সুবিধার খাতিরে নিয়মিত ভক্টলে সৌন্দর্য্য ত’ নষ্ট হয়ই, আত্মাও সাংসারিক তুচ্ছ ব্যাপারের নিকট খৰ্ব্ব হইয় পড়ে ; শুধু অসংযমের প্রলয়োৎসবে তাণ্ডব নৃত্যই পরম পুরুষাৰ্থ নহে ; ঐহিক জীবনের হৃৎস্তম্ভনচাকচিক্যলাভ অপেক্ষ মহত্তর অন্য কিছু লাভ আছে, যাহা ভুলিলে মানুষের চলিবে না, যাহা ত্যাগ করিলে মানুষ আর মানুষ থাকিবে না। আস্থার বিকাশ ও আনন্দ, দেহের প্রকাশ ও আরাম, দেহ ও কালের সহিত সামঞ্জস্ত যে পরিচ্ছদ সম্পাদন করিতে সক্ষম, তাহাকেষ্ট যথাসম্ভব কৰ্ম্মক্ষম করিয়া লরণ করাই শ্রেয় ; তাত আত্মার প্রেয় বলিয়াই শ্রেয়, উদাম উচ্চ খল প্রবৃত্তির প্রেয় বলিয়া নহে। জগং বিরোধময় ; যে ধত বিরোধের সামঞ্জস্ত করিয়া লষ্টতে পরিবে সে তত পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হইবে । সেই সামঞ্জস্তের মধ্যে যদি চেষ্টা জাগ্রত দেখা যায়, তবে সে সামঞ্জস্ত কারাগুহের শান্তির মত। যাঙ্গ সহজ ও অক্লিষ্ট তাহাই শাস্ত ও শুভ । এই সামঞ্জস্তকে গৃহসামগ্ৰী, জীবননিৰ্ব্বাহপ্রণালী, শয়ন ভোজন প্রভৃতিতেও বিস্তৃত করিতে হইবে। সেই সামঞ্জস্য যদি চিরন্তন চিরাভ্যস্ত প্রথার সঙ্গে ঘটে তবেই তাহ সহজ স্বাভাবিক ও অক্লিষ্ট, নতুবা তাঙ্গ জাগ্ৰত চেষ্টাবিকৃতি –শৈলসম্বুল, সাগরের মত, তরণীভঙ্গের আশঙ্কা প্রতি পদে পদে। এই জন্য দেশে দেশে কালে কালে সৌন্দর্যোর বিকাশ বিভিন্ন প্রণালীতে বিভিন্ন উপায়ে ঘটিয়াছে ; এই জন্তই যাহা একের পথ, তাই অপরের বিঘ্নকর - আমরা বৈলাতিক মোতে অনেক হারাষ্টয়া পরাষ্ট্রকারী হইয়া ক্লিষ্ট হইয়াছি, কিন্তু চক্ষুর আনন্দ শিল্পীর সাধুলার বস্তু আমাদের পরিচ্ছদ আমরা যেন বিসর্জন পোষাক পরিচ্ছদ । , so t পোষাকের পরিবর্তনের আঁৰশুকতা অনেকেই উপলব্ধি করিতেছেন ; কিন্তু বৈলাতির্কের কদর্য অনুকরণে আয়ার সজ্জ যাহা দেশীয় খৃষ্টান সম্প্রদায় গ্রহণ করিয়াছেন, তাহ আরো অশ্লীল, অধিকতর কুরুচির ; তাহা দেখিয়া চিত্ত, ব্যাহত হইয়া বিমুখ হয়। স্ত্রীলোকের লজ্জার অরুণিম যখন সমগ্ৰ দেহখানিকে বেষ্টন করিয়া ধরে, তখন আর কৃত্রিম আবরণ আবশ্যক বোধ হয় না, আবরণের সকল দৈন্ত সকল অভাব তাহাতে পূর্ণ হইয় উঠে। যদি পরিবর্তন আনিতে হয়, তাহ বিদেশের ছাচে ঢালিয়া নহে, খাটি স্বদেশী চাই। পশ্চিমের হিন্দুস্তানী রমণীর বা দক্ষিণের কোন কোন প্রদেশের বস্ত্র পরিধানভঙ্গী সহজে গৃহীত হইতে পারে— তাঙ্গ শালীনতাময় অতি সুন্দর। যদি সাংসারিক কৰ্ম্মের ব্যগ্র উৎসাহের খাতিরে পুরুষের পরিচ্ছদ পরিবর্তনের আবশ্বক হয়, তবে তাঙ্গও হিন্দুস্থানী পুরুষের রীতিতে, পরিবন্তিত হওয়া উচিত। পাজাম ব্যবহার---বিশেষত রমণীর—তাহা দেশ প্রথা হইলে ও আমাদের দেশের অনুপযোগী এবং অশোভন, অসুন্দর, কুরুচিপ্রস্থত। আমাদের জীবনের অনেক সুখ উহ্য হইয়াছে ; কিন্তু এখনো রাস্ত ঘাটে বাহির হইলে বিচিত্র বর্ণের শিথিল পরিচ্ছদের উডীন অঞ্চল দোলায়িত হইয়া যে আনন্দ উৎসবে আমাদিগকে প্রতিনিয়ত আহবান করে, তাঙ্গ ঘুচাইয়া শুধু একঘেয়ে চোঙা পোষাকের কালে আর কালে আর কালে আমাদের প্রাণকে প্রতিনিয়ত যেন মৃত্যুর বিভাষিক না দেখায়। প্রকৃতি মুক্তহস্তে আমাদের দেশে বর্ণগন্ধগান ঢালিয়া দিয়াছেন, ধরিত্রীর শুামশোভা মুছিয়া আমরা যেন পবিত্র গোময় লেপন না করি। প্রকৃতির বিক্ষিপ্ত সৌন্দৰ্য্য সংগ্ৰহ করিয়া আমাদের দেহ মনকে ভূষিত করিতে পারিলেই প্রকৃতির ক্রোড়ে মানবের অবস্থানের সার্থকতা হয়। বাহিরের সহিত অন্তরের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ, বাঠিরকে সুন্দর সজ্জিত করিয়া রাখতে পারিলে অন্তর আপনা হইতে সুন্দর সজ্জিত হইয়া উঠিবেষ্ট সকল কৰ্ম্মসংঘাতের মধ্যে প্রসন্নত চারাইবে না ; সকল । ক্ষুদ্রতার উদ্ধে উঠিয়া সত্যশিবসুন্দরের আনন্দাভাস উপলব্ধি । করিয়া ধন্ত ও বরেণ্য কক্টতে পারিব । . . . চার বন্দ্যোপাধ্যায় ।