পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ >b〜 তপতী মধ্যে মধ্যে কুল ছাপাষ্টয়া ভীষণ বস্তায় বহু ধনজনের বিনাশের কারণ হয়। খৃষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দী ইষ্টতে ১৩টি বিশেষ বদ্যা প্রসিদ্ধ হইয়াছে। সুরাট সহরটি অৰ্দ্ধচন্দ্রাকারে নদীর ধারে ধারে সওয়া মাষ্টল বিস্তৃত। ইহা প্রাচীরবেষ্টিত। সহরের ভিতর দিকের প্রাচীর বহুকাল অপস্তত হইলেও প্রাচীর ভিত্তির সহরের রাস্তা প্রধান পথ ছাড়া প্রায়ই অপ্রশস্ত ও বক্র হইলেও পাকা, পরিষ্কার এবং দিব্য জলনিষিক্ত । সহরের মধ্যে স্থানে স্থানে ফাকা জমি থাকিলেও সহরটি ঘন বসতিযুক্ত। বক্র সরু পথের দুধারে উচ্চ শ্রেণীর হিন্দু ও ধনী পাপীদিগের সুগঠিত হয়শ্রেণা। সহরের বাহিরে পূর্ব পাড়ার দুই একটি অংশ ব্যতীত প্রায় সকল স্থানষ্ট বেশ ফাকা । কঁাচা গলি গুলি সংস্কারাভাবে খাল হইয়া গিয়া পাশ্বস্থ জমি অপেক্ষ নিম্ন হওয়ায় বর্ষার সময় পয়োনালীর কাজ করে এবং অন্ত সময়ে পলিপূর্ণ হঠয় থাকে। যুরোপীয়দিগের পল্লী ও কয়েকটি ধনবান পাসীর বাগান বাড়ী ভিন্ন সকল গুহই এই ধূলিপূর্ণ গলির ধারে অবস্থিত অসুন্দর কুটীরশ্ৰেণী । সহরের উত্তরে ও পূৰ্ব্বে, প্রাচীরের বান্তিরে জমি উর্বর, জলসিক্ত ও বৃক্ষসমাষ্ট্রর। দক্ষিণের জমি অনুৰ্ব্বর এবং ধনশালী মুসলমান বা পার্সী বণিকের উদ্যান ভিন্ন সেদিকের জমি নগ্ন । পশ্চিম দিকে মদীর ধারে ক্যান্টনমেন্ট, কাওয়াজের মাঠ ও রক্ষাচ্চা খাদ সহর ও সংরতলীর সীমা লেখা হইয়া আছে । দিত গুগুশ্ৰেণী দেখিতে অতি রমণীয়। সুরাটের প্রধান দর্শনীয় জিনিষ কেন্দ্ৰবত্তী কেল্লা। ১৫৪০ ও ১৫৪৬ সালের মধ্যে খোদাবন্দ খা নামক একজন তুকীসৈক্লিক কর্তৃক ইহার নক্সা ও নিৰ্ম্মাণ সম্পন্ন হইয়াছিল। গুজরাটের রাজ মামুদ বেগারা ইহাকে অভিজাত মর্যাদা দান করেন । এই তুর্গ শস্ত্রশালী শক্রর আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষার পক্ষে যদিও বহুকাল হইতে অকৰ্ম্মণ্য হইয়া গিয়াছে, তথাপি এযাবৎ ইহা সংস্কৃত করিয়া রাখা হইয়াছে, এবং ১৮৬২ সাল পর্য্যন্ত এই দুর্গে যুরোপীয় ও দেখুীয় সৈন্ত কিছু করিয়া রাখা হইত। অনাবশুক বোধে সেই সৈন্ত এক্ষণে অপস্মত হইয়াছে এবং তদবধি এখানে নানা সরকারী আপিসের অধিষ্ঠান হইয়াছে। প্রাচীরবেষ্টিত সহরের মধ্যে ১৪টি পল্লী বা "চকলা’ প্রবাসী । { ৭ম ভাগ আছে। সহরের বাহিরে ক্রমশ আর একটি সহর গঠিত হইয়া উঠিতেছে-ইহাতে পুৰ্ব্বাবধি সুশৃঙ্খলায় বসতি হইতেছে। এখানকার প্রসিদ্ধ সাধারণ সৌধ এই—ইংরাজী গির্জা, মিশন গির্জা, রোমান ক্যাথলিক গির্জ, য়ুরোপীয় গোরস্থান ; মুসলমান মসজিদ, খাজে দেওয়ান সাহেবের মসজিদ, নও সৈয়দ সাহেবের মসজিদ, সৈয়দ ইদরাসের মসজিদ, এবং মর্জা সামি মসজিদ, এবং গোরস্থান ; দুইটি প্রধান পার্স অগ্নি-মন্দির (আতস্বেহেরাম), একটি সাহানশাহী পার্সীর ও অপরটি কদমী পাসীর ; হিন্দুদিগের গোসাবি মহারাজের মন্দির, গোবিন্দজী মহারাজ ও লালজী মহারাজ বল্লভাচারী সম্প্রদায়ের ঠাকুর-বাড়ী, রামজীর মন্দির, স্বামী নারায়ণের মন্দির, বালাজীমন্দির, হনুমানের দুইটি মন্দির, অম্বাজী ও কান্ধা মাতার মন্দির ; শ্রাবক সম্প্রদায়ের মহাবীর স্বামী ও আদ্যেশ্বর ভগবানের মন্দির ; কতকগুলি যাত্ৰীগৃহ ও ধৰ্ম্মশালা ; মানুষের জন্ত দুইটি ও পশ্বাদির জন্ত চারিটি হাসপাতাল ; রেলষ্টেসন ও বিভিন্ন সরকারী আপিস ও বাজার ইত্যাদি। চারিটি পশু-হাসপাতালে সব সমেত এক হাজার পশুর বাসস্থান আছে। প্রত্যেকটিতেই রুগ্ন, সুস্থ, বৃদ্ধ, খঞ্জ প্রভৃতি সকল পশুই নির্বিচারে গৃহীত হয়। রুগ্ন পশু সকলকে যত্ন করিয়া ঔষধ দ্বারা সেবা করা হয়। দুৰ্ব্বল ও কৰ্ম্মশাস্ত পশুদিগকে কিয়ৎদূরে চরিতে পাঠান হয় এবং সুস্থ পশুদিগকে অন্তান্ত পশুর খাদ্যসম্ভার বহন বা অদ্য লঘু কৰ্ম্মে নিযুক্ত করা যায়। ১৮৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ৫২২টি পশু ছিল ; যথা—১০৭টি গরু, ১৩৪টি বলদ, ৩৯ মহিষ, ৩২ ঘোড়া, ৯৫ ছাগল, ৫ হরিণ, ৭ কুকুর, ১ গাধা, ৩ হাস, ও ১টা মোরগ। পূৰ্ব্বে এথানে ছারপোকা মশা প্রভৃতি কীট পতঙ্গেরও হাসপাতাল ছিল, সেথানে কোন দরিদ্র লোককে ভাড়া করিয়া আনিয়া তাহাদিগকে রক্ত খাওয়ান হইত। এক্ষণে সেই স্থানে কীটপতঙ্গদিগকে শস্ত্যাদি গাওয়ান হইয়া থাকে । সুরাটের ইতিহাসে চারিটি কাল বিভাগ করা যায়— (১) আদিকাল হইতে ১৫৭৩ সাল পর্য্যন্ত , (২) মোগল শাসনকাল ১৫৭৩–১৭৩৩ ; (৩) স্বাধীন রাজত্ব ১৭৩৩– ১৭৫৯ ; (৪) ১৭৫৯ সাল হইতে ব্রিটিশ রাজত্ব কাল ।