পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હર সৰ্ব্বত্র যে জার্কত ও উপদ্রব জাগ্রত হইয়াছিল তাহার সহিত ১৭৮২ সালের ঝড় ও ১৭৯০ সালের দুর্ভিক্ষ মিলিত হইয়া সুরাটের সৌভাগানাশে সহায়তা করিয়াছিল। মুসলমান রাজত্বকালে সুরাটের শাসনবিধি এইরূপ ছিল —াহরের শাসনকর্তার অধীনে ১৫০০ বেতনভুক সৈন্ত ছিল। দেওয়ানিকার্য্যে ফৌজদার কাজি ও বাকনবিশের সাহায্যে কৰ্ম্ম সম্পন্ন করিতেন। শুল্ক বিভাগে শাহবন্দর নামক কৰ্ম্মচারী আমদানি রপ্তানির দ্রব্য চিহ্নিত করিয়া মাশুল আদায় করিতেন। ফৌজদারী বিভাগের কৰ্ম্ম সহরকোতোয়াল দ্বারা সম্পন্ন হইত। সহরের পুলিশবন্দোবস্ত খুব ভালো ছিল—কদাচ কোন গোলমাল সংঘটিত হইত। কোতোয়ালের অধীনেও পুলিশ ফৌজ থাকিত, কিন্তু কোতোয়ালের প্রাণদণ্ড দিবার ক্ষমতা ছিল না। রাত্রিতে তিন বার ৯টা, ১২, ও ৩টায় তাহাকে রোদ দিতে হইত। এই সব সুব্যবস্থায় ভয়ানক অপরাধ এত কম ছিল যে ১৬৯০ সালের পুর্বর ২০ বৎসরে একটিও প্রাণদণ্ড হয় নাই। সুরাটের পাশ্ববৰ্ত্তী স্থান সমূহে শাস্তিরক্ষার জন্ত একজন ফৌজদারের অধীনে বড় সৈন্ত নিযুক্ত ছিল। এইরূপে ব্রিটিশ রাজত্বের পুৰ্ব্বে হিন্দুমুসলমান পরম সদ্ভাবে কালযাপন করিত। ১৬০৮ সালে কাপ্তেন হকিন্স পরিচালিত প্রথম ইংরাজজাহাজ তপতীর মোহনায় আসিয়া উপনীত হয়। সার টমাস রে। ১৬১৫ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর স্বরাটে পৌঁছিয়া একমাস পরে জাহাঙ্গীরের সহিত সাক্ষাতের জন্ত আজমীরে যাত্রা করেন। ১৬১৮ সালের প্রারম্ভে তিনি সুরাটে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি এই যাত্রাতেই জাহাঙ্গীর বাদশাহের নিকট হইতে ইংরাজের বহু বাণিজ্য সম্বন্ধীয় সুবিধা মঞ্জুর করাইয় লইয়াছিলেন। সে গুলি প্রধানত এই –(১) ইংরাজদিগের প্রতি সদ্ব্যবহার করা হইবে ; (২ ) বাণিজ্যশুল্ক মাত্ৰ দিয়া তাহারা সৰ্ব্বত্র অবাধে বাণিজ্য করিতে পারিবে ; (৩) সম্রাটকে প্রদত্ত উপহার সমূহ মুরাটে তল্লাস করা হইবে না ( ৪ ) কোন ইংরাজের মৃত্যু হইলে তাহার সম্পত্তি সরকারে বাজেয়াপ্ত না হইয়া অপর ইংরাজদিগকে প্রদত্ত হইবে। এই সময়ে সুরাটশাসনের ভার শাহজাদা খরমের উপর ছিল। সার টমাস রো তাহার সহিতও নিম্নলিখিত বন্দোবস্ত প্রবাসী । --- [ ৭ম ভাগ । স্থির করিয়াছিলেন।—(১) সুরাটের শাসনকর্তা ইংরাজদিগকে জাহাজ ধার দিয়া সাহায্য করবেন; (২) ইংরাজ বণিকগণ > অস্ত্র ব্যবহার করিতে পারিবে ; (৩) ইংরাজগণ স্বরাটে গৃহ নিৰ্ম্মাণ করিতে পারিবে ; ( ৪ ) এবং আপনাদের মধ্যে কোন বিবাদ সংঘটিত হইলে তাহ তাহারা আপনাদেরই সালিসী দ্বারা মীমাংসা করিয়া লইতে পরিবে । so সপ্তদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বিদেশী বণিক অনায়াসে এই সকল বাণিজ্যবিষয়ক সুযোগ লাভ করিয়াছিল ; কিন্তু এই বিংশশতাব্দীর মুসভ্যতার দিনে কোন পাশ্চাত্য খৃষ্টান রাজ্য কি কোন “কালা আদমীকে কোন সুবিধা দিতে সম্মত হইবে ? শ্বেতাঙ্গ খৃষ্টানগণ বহুবিষয়ে “কালা আদমী’ অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ হইলেও সাম্য, মৈত্রী, দয়া,দক্ষিণ্য, স্বার্থশূন্তত, আতিথেয়তা প্রভৃতি মনুষ্কৃত্বের শ্রেষ্ঠ গুণাবলীতে তাহারা কোন ক্রমেই সমকক্ষও নহে। ১৬০৮ সালে যখন ইংরাজগণ প্রথম মুরাটের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যাপারে প্রবৃত্ত হয় তখন সুরাট বিশেষ সম্পন্ন ছিল ; বহু বণিকের সুগঠিত হৰ্ম্ম্যাবলীতে সুসজ্জিত ছিল। তৎকালে ইংরাজ বণিকগণ দেশীয় পরিচ্ছদ পরিধান করিত এবং দেশীয় লোকের সহিত বেশ মিত্রভাবে মিশিত। কুঠিওয়াল সাহেবর। মুসলমান প্রভৃতিকে আহারে নিমন্ত্রণ করিত এবং নিজেরাও মাটিতে আসনে বসিয়া আহার করিত। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ইংরাজবণিকসংহতির ভূতাদিগের অসাধুতার জন্ত স্বার্থহানি ঘটিয়াছিল। তাহদের প্রধান কৰ্ম্মচারী ল্যাম্বটন সুরাটে থাকিয়া কোম্পানীর বহু ধনরত্ন চুরি করে—এ জন্ত ১৭৩৯ সালে তাহাকে কৰ্ম্মচ্যুত করা হয়। এই সব কারণে বিলাতের কোর্ট অফ ডিরেক্টরস্ আদেশ দিয়াছিলেন যে কোম্পানির অর্থসিন্দুকে তিনটি তালা বন্ধ থাকিবে। তালার চাবি কর্তাদের কাছে থাকিবে এবং প্রতি মাসে তহবিল মিল করা হইবে । রেভারেও ফিলিপ এণ্ডারসন তদ্বিরচিত “পশ্চিম ভারতে ইংরাজ” নামক পুস্তকে লিখিয়াছেন যে—দেশীয় লোকেরা খৃষ্টানদের সম্বন্ধে অতি হীন ধারণা পোষণ করে। সুরাটে প্রায়ই দেশীয় লোককে বলিতে শুনা. যাইত খৃষ্টানধৰ্ম্ম সয়তানের ধৰ্ম্ম ; খৃষ্টান মাতাল ; যদি কোন দোকানদারকে তাহার নির্দিষ্ট মূল্য অপেক্ষা কম মূল্য প্রস্তাব করা যাষ্টৰ