পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যা । ] SAM AeeSAeeAeSAAAAAA AAAASASASS বুেন বুঝিবার সাধ্য তাহার ছিল না। তাই সে আবার বলিতে আরম্ভ করিল, “আপনি জানেন বিনয় বাবু কেন রবিবারে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চান না ! পাছে ব্রাহ্ম সমাজে কেশব বাবুর বক্তৃতা শোনা ফাক যায়।” গোরার মুখ লাল হইয়া উঠিল। সে বলিল, “জানিনে ত কি ? বিনয় কি লুকিয়ে ব্রাহ্ম সমাজে যায় ? সে জন্তে তার কি ছল করবার কোনো দরকার আছে ? তুমি যদি ব্রাহ্ম সমাজে নিয়মিত যেতে তাহলে তোমার জন্য ভাবনা হতে পারত-কিন্তু বিনয়ের জন্ত কারো ভয় করবার কোনো দরকাব নেই।” অবিনাশ ক্ষুব্ধ হইয়া কহিল—“তা হতে পারে তিনি খুব সরল স্বভাবের লোক –কিন্তু দলের পক্ষে এই দৃষ্টান্ত কি ভাল ! আপনিত বলচেনই সকলে তার মত বুদ্ধিমান নয়।” এটা গোরারই কথা । গোরা অনেকবার বলিয়াছে সাধারণের পক্ষে বিনয়ের দৃষ্টান্ত ভাল নয়। গোরা চুপ করিয়া রহিল। গোরা আজ ছাত্রদের সঙ্গে বেশিক্ষণ মেলামেশা করিতে পারিল না সে অন্ত লোকের উপর ভার দিয়া আজ সকাল সকাল বাড়ি ফিরিয়া আসিল. প্রথমে সে নিজের বসিবার ঘরে গিয়া দেখিল কেহ নাই। তাহার পরে আনন্দময়ীর মহলে ঘুরিয়া আসিল—সেখানেও বিনয়কে দেখিতে পাইল না। গোরা মনে মনে আশা করিয়াছিল বিনয় মার কাছে বসিয়া তাহার ফেরার জন্য প্রতীক্ষা করিবে । গোরা যখন মধ্যাহ্নে খাইতে বসিল—আনন্দময়ী আস্তে আস্তে কথা পাড়িলেন—“আজ সকালে বিনয় এসেছিল । তোমার সঙ্গে দেখা হয় নি ?” - গোর খাবার থালা হইতে মুখ না তুলিয়া কহিল—“হঁ হয়েছিল।” * 源 আনন্দময়ী অনেকক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন— তাহার পর কহিলেন—“তাকে থাকতে বলেছিলুম কিন্তু সে কেমন অন্তমনস্ক হয়ে চলে গেল।” গোরা কোনো উত্তর করিল না। আনন্দময়ী কহিলেন— "তার মনে কি একটা কষ্ট হয়েচে গোরা। আমি তাকে এমন কখনো দেখিনি। আমার মন বড় খারাপ হয়ে আছে।” গৌরী। ৫৩৭ গোরা চুপ করিয়া খাইতে *ननभौ। অত্যন্ত স্নেহ করিতেন বলিয়াই গোরাকে মনে মনে একটু ভয় করিতেন। সে যখন নিজে তাহার কাছে মন না খুলিত তখন তিনি তাহাকে কোনো কথা লইয়া পীড়াপীড়ি করিতেন না। অন্তদিন হইলে এইখানেই চুপ করিয়া যাইতেন, কিন্তু আজ বিনয়ের জন্ত তাহার মন বড় বেদনা পাইতেছিল বলিয়াই কহিলেন—“দেখ, গোরা, একটি কথা বলি রাগ করে না । ভগবান অনেক মানুষ সৃষ্টি করেচেন কিন্তু সকলের জন্তে কেবল একটিমাত্র পথ খুলে রাখেননি বিনয় তোমাকে প্রাণের মত ভালবাসে তাই সে তোমার কাছ থেকে সমস্তই সহ করে—কিন্তু তোমারই পথে তাকে চলতে হবে এ জবরদস্তি করিলে সেটা মুখের হবে না।” গোরা কহিল—“ম, আর একটু দুধ এনে দাও!” কথাটা এইখানেই চুকিয়া গেল । আহারান্তে আনন্দময়ী তাহার তক্তপোষে চুপ করিয়া বসিয়া সেলাই করিতে লাগি লেন। লছমিয়া বাড়ির বিশেষ কোনো ভূত্যের দুর্ব্যবহার সম্বন্ধীয় আলোচনায় আনন্দময়ীকে টানিবার বৃথা চেষ্টা করিয়া মেঝের উপর গুইয়া পড়িয়া ঘুমাইতে লাগিল। গোরা চিঠিপত্র লিখিয়া অনেকটা সময় কাটাইয়া দিল। গোরা তাহার উপর রাগ করিয়াছে বিনয় তাহ আজ সকালে স্পষ্ট দেখিয়া গেছে তবু যে সে এই রাগ মিটাইয়া ফেলিযায় জন্য গোরার কাছে আসিবে না ইহা হইতেই পারে না জানিয়া সে সকল কৰ্ম্মের মধ্যেই বিনয়ের পদশদের জন্য কান পাতিয়া ছিল। বেলা বহিয়া গেল-বিনয় আসিল না । লেখা ছাড়িয়া গোরা উঠিবে মনে করিতেছে এমন সময় মহিম আসিয়া ঘরে ঢুকিলেন। আসিয়াই চৌকিতে বসিয়া পড়িয়া কহিলেন— “শশিমুখীর বিয়ের কথা কি ভার্চ গোরা ?” একথা গোরা একদিনের জন্তও ভাবে নাই সুতরাং অপরাধীর মত তাহাকে চুপ করিয়া থাকিতে হইল। বাজারে পাত্রের মূল্য যে কিরূপ চড়া এবং ঘরে অর্থের অবস্থা যে কিরূপ অসচ্ছল তাহা আলোচনা করিয়া গোরাকে একটা উপায় ভাবিতে বলিলেন। গোরা যখন ভাবিয়া কিনারা পাইল না তখন তিনি তাহাকে চিন্তা সঙ্কট হইতে উদ্ধার করিবার জন্য বিনয়ের কথাটা পাড়িলেন। এত