পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যা । ] ফল সকল দৃষ্ট হইয়া থাকে। তাহার কোনটীর উপর বড় বড় অক্ষরে লিখিত “স্বৰ্গীয় সৌন্দর্ঘ্য", "মুখসৌভাগ্য” “শান্তিময় বাৰ্দ্ধক্য” ইত্যাদি । পিচফল দীর্ঘায়ুর চিন্তু। অবশেষে রাজকীয় প্রকাও নাগমুক্তি বাহির হইয়া থাকে। নাগমুৰ্ত্তি উজ্জল প্রভাযুক্ত একটা মুক্ত (Flaming pear1) ভক্ষণ করিতে চেষ্টা করিতেছে, সেই দুখ ইহাতে দেখান হইয়া থাকে। নাগমূৰ্ত্তির পশ্চাতে যুদ্ধবেশ পরিহিত রাজকুমারগণ এবং জঁাকজমক বিশিষ্ট পরিচ্ছদধারী অপরাপর সকলে ক্রমে চলিতে থাকে । এই নাগমূৰ্ত্তি দ্বারা সমাট ও সম্রাজ্ঞীকে অভিবাদন করান হষ্টয়া থাকে। এই মিছিল বাহির হইয়া গেলে আগন্তুক ভদ্রগণ সম্রাট ও বৃদ্ধ মহারাণীকে অভিবাদন করিয়া স্বস্থানে প্রস্থান করিয়া থাকেন । অভিজাতবর্গ প্রস্থান করিলে প্রাঙ্গণমধ্যে দুইখানি ক্ষুদ্র গদি রাখা হয়, তাহার উপর সম্রাট ও নব সমাজ্ঞীদ্বয় আসিয়া জামুপাতিয়া অবনত মস্তকে অবস্থান করেন। তখন বৃদ্ধ মহারাণী সুগন্ধি ধুনীযুক্ত ধৃপতি হস্তে পরিচারিক সহ উপস্থিত হন । সমাট ও নব সম্রাজ্ঞীদ্বয় উহাকে প্ৰণাম করেন এবং নানা প্রকার বাদ্য বাদিত হয় । তখন বুদ্ধ মহারাণী সৰ্ব্বাগে এবং তাতার পশ্চাতে আর সকলে মিছিলের ধরণে চলিতে থাকেন । এষ্ট পারিবারিক ক্ষুদ মিছিল এক পবিত্র কক্ষের নিকট উপস্থিত হয়। এই কক্ষে মাঞ্চুবংশের পূর্বপুরুষগণের স্মরণচিহ্ন সকল রক্ষিত আছে। কক্ষমধ্যে উপস্থিত হইয়া সম্রাট ও নবীন সম্রাজ্ঞীদ্বয় তাহদের পিতৃপুরুষের স্মরণচিহ্নের নিকট প্রণাম করিয়া জন্মদিনের উৎসব সমাপ্ত করেন। শ্রীরামলাল সরকার । - 2 ヘ/ ওমার খায়ামের ধৰ্ম্মমত। কাব্যকুঞ্জ পারস্তের বঙ্গ মহাকবির মধ্যে ওমার খায়াম একজন শ্ৰেষ্ঠ কবি। তিনি শুধু কবি নহেন, তিনি পণ্ডিত কবি, তিনি জ্যোতিষ কবি। তিনি নয়সাপুরের অধিবাসী ছিলেন। র্তাহার ধৰ্ম্মমত সম্বন্ধে নানা জনে নানা মত প্রকাশ করিয়াছেন—কেহ তাহাকে নাস্তিক, কেহ বা অজ্ঞেয়বাদী, কেহ বা ওমর খায়ামের ধৰ্ম্মমত। ጋ@ @ ዓ সংশয়বাদী, কেহ বা অদৃষ্টবাদী, কেহ বা বহুদেববাদী এবং কেহ বা একেশ্বরবাদী বলিয়া স্থির করিয়াছেন। ইহার কোনটাই মিথ্যা নহে, এবং কোন মতটাই সত্য নহে। • স্বাধীন চিন্তা সৰ্ব্বকালে, সৰ্ব্বদেশে প্রকাশ পাইয়াছে— যে বীর সেই চিন্তা-স্রোতে আপনার চতুষ্পার্থের নরনারীকে . মুগ্ধ লুব্ধ করিয়া একটানা ভাসাইয়া লইতে পারিয়াছেন, তাহার জগতে এক এক নূতন ধৰ্ম্মমত স্থাপন করিয়া আপনার চিত্তের প্রসারতার সাক্ষ্য রাখিয়া গিয়াছেন। রিভৃদিধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম, এবং খ্ৰীষ্টধৰ্ম্মকেই কত প্রকারে পরিমার্জিত করিয়া লুথার প্রভৃতি অভু্যত্থান করিয়াছিলেন। বেদবিহিত ব্রাহ্মণ্যধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে বুদ্ধদেব এবং পুরাণ-তন্ত্রের প্রভাবের বিরুদ্ধে অভ্যুথান করিয়া চৈতন্যদেব, নানক,কবির, তুক অমর হইয়া রহিয়াছেন। আর যে সকল পুরুষ স্বাধীন চিন্তা দ্বারা বলিষ্ঠ লোকাচারকে পরাভূত করিতে না পারিয়াছেন, তাহারা অধাৰ্ম্মিক বলিয়া সমাজে নিগ্ৰহভাজন হইয়: ছেন। কিন্তু সেই অধাৰ্ম্মিক ও মহাধাৰ্ম্মিকের মধ্যে পার্থক্য বড় অল্পই—শুধু একটু বেগ, একটু আকর্ষণীর অভাবে র্তাহারা আপন মতের সাড়া সমাজের নিকট হইতে পাইতে বঞ্চিত থাকিয়া যান । ওমার খায়াম এই শেষোক্ত শ্রেণীর মহাপুরুষ। তিনি সমাজের চিরায়ুগত প্রথা, ধৰ্ম্মমত ও ক্রিয়ানুষ্ঠান প্রভৃতিতে নিরাপত্তিতে 'ডিটো দিতে পারিতেন না—এবং সেই স্বাধীন চিন্তাটুকু প্রকাশ করিয়া বলিবার মত সাহস ও শক্তি র্তাহাতে ছিল। এই মনীষীর চিন্তাপ্রণালী অভিব্যক্ত হইয়া যখন যে অবস্থায় প্রকাশ হইয়াছে, শুধু তৎকালের রচনা পাঠ করিলে র্তাহাকে ভূল বুঝা অসম্ভব নহে। ওমার খায়ামের রচনা— তাহার সুমধুর চতুষ্পদী শ্লোক—পাঠ করিলে, তাহার ধৰ্ম্মমতের একটি চমৎকার অভিব্যক্তি জানিতে পারা যায়। র্তাহার শ্লোকাবলীর পৌৰ্ব্বাপৰ্য্য স্থির করা দুরূহ ব্যাপার, কিন্তু আমরা তাহাকে ক্রম-উন্নত স্থির করিয়া তাহার ধৰ্ম্মমতের বিবর্তন স্থির করিব । ওমারের সহপাঠী, নয়সাপুরের রাজার উজির নিজামুউল-মুলক্‌ ৰ্তাহার ওয়াসিয়াংএ লিখিয়াছেন যে ওমার নিষ্ঠাবান, সংযত-চরিত্র সাধু-পুরুষ ছিলেন। তিনি সমগ্র জীবন বিদ্যাচর্চায় অতিবাহিত করিয়াছিলেন । তদ্ধিরচিত ‘