পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যা । ] । এবং যাহা নাই –এই উভয়েতেই মৌলিকতা প্রকাশ পায় । এবং বহুদিন হইতে, নিতান্ত অনক্ষর হিন্দুর নিকটেও অবিনশ্বর দর্শনের একটা দিক্‌ উদঘাটিত রহিয়াছে। এই ভাবে দৃষ্টি করিলে, হিন্দু-জীবনের প্রত্যেক ক্রিয়ার একটা অর্থ পাওয়া যায়—একটা সার্থকতা উপলব্ধি হয়। আমরা যুরোপীয়গণ অন্ত প্রকার শিক্ষা প্রাপ্ত হইয়াছি, আমরা জীবনের ওরূপ মূল্য উপলব্ধি করিতে পারি না। হিন্দুরা জন্ম-দার্শনিক। তাহারা মনের দ্যায় দৰ্শন-সিন্ধুগর্ভেই নিয়ত বাস করে। কোন ক্ষুদ্রতম হিন্দুর পক্ষেও একথা থাটে। অসীম স্বপ্নরাজ্যে যদৃচ্ছ ভ্রমণ, উদামনিরঙ্কুশ খামখেয়ালী কল্পনার পথে বিচরণ, অনন্তের জন্য আকুলত, যথাযথতার বিপরীত পথে গমন, প্রত্যক্ষসত্যে অনাস্থা—এক কথায় অহিফেন ও গঞ্জিকায় পরিপুষ্ট বুদ্ধি— ইতাই হিন্দুর প্রকৃত ভাব,—ইহাই হিন্দুর অন্তরের অন্তস্তল । হিন্দু বিশুদ্ধ চিদাকাশে সস্তরণ করে । হিন্দু সহজ জ্ঞানের দ্বারা উচ্চ গণিততত্ত্বের আবিষ্কার করে । পুথিবীর মধ্যে পাণিনীর ব্যাকরণ একটি পরমাশ্চর্যা সামগ্ৰী । কিন্তু সমস্ত এসিয়িক জাতির মধ্যে, হিন্দুর এক বিষয়ে যার পর নাই হীনতা পরিলক্ষিত হয়। দলিল দস্তাবেজ অনুসন্ধানের দিকে, হন্দুর রুচি নাই -হিন্দুর পরীক্ষাসাপেক্ষ বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি রাষ্ট-প্রত্যক্ষমূলক ঐতিহাসিক বুদ্ধি নাই। আমি এ কথা বলি না, হিন্দুরা স্বাত্মীকরণে একেবারেই মসমর্থ, সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। উহা ভবিষ্যতের কথা। কিন্তু উহাদের ভাষা উহাদিগকে শিক্ষা না দেওয়া, }হাদের ঐতিহকে হঠাৎ ছেদন করিয়া ফেলা, উহাদের মাধ্যাত্মিক ভূমি হইতে উহাদিগকে উন্মলিত করা—ইহার মত ষ্টতা আর কি হইতে পারে ? ইহার দৃষ্টান্ত আর দ্বিতীয় iাই । আমি বোম্বায়ের কলেজে কতকগুলি ছাত্র দেখিয়াছি tহারা ইংরাজি জানে, এবং তাহার উপর অধিকন্তু ফরাসী গষায় কথা কহিতে পারে। কিন্তু তাহারা সংস্কৃত জানে না । হা একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। ইহার প্রয়োজনই বা কি ? ংরাজি শিক্ষা কি, হিন্দুর কৌলিক প্রথার উপর, হিন্দুর iনসিক প্রকৃতির উপর, মনের গতির উপর, পারিপাশ্বিক বস্থার উপর, দেশের আবহাওয়ার উপর জয়লাভ করিতে rারে ? এতগুলা শত্রর সহিত যুঝিয়া উঠা কঠিন ব্যাপার। সমসাময়িক

== *** ه= * به جایی - تهیه -به----۰ = محیه به مجموعه-۰

ভারত। ©ᏬᏇ তা ছাড়াও আর একটা আশঙ্কা এ সংগ্রাম শেষ হইবার নহে। ইন্দো-চীনে এ বিষয়ে আমাদের কি কর্তব্য একবার ভাবিয়া দেখা উচিত। যখন “সাইগণের ভিতর দিয়া যাইতেছিলাম, আমি তত্ৰত্য শিক্ষাবিভাগের প্রধান অধ্যক্ষের নিকট এই কথা উত্থাপন করায়, তিনি বলিলেন আক্ষরিক চীনে ভাষার শিক্ষা যে আমরা এখনও দিতেছি—ইহা আমাদের একটা ভারি ভূল হইয়া গিয়াছে, মহাশয়। ইহাতে করিয়া আমরা নিজেই চীনের প্রভাব প্রতিপত্তি দেশময় প্রচার করিতেছি।” আমি বলিলাম, “অধ্যক্ষ মহাশয় । আপনি তবে ফরাসী শিক্ষা দিবার পক্ষপাতী ? ফরাসী ভাষা শিথিলেই উহার আমদের স্থানীয় ছোট ছোট সংবাদ পত্রে এই কথা পড়িবে যে, গবর্ণর সাহেব একজন দস্থ্য, কিংবা একটি আস্ত গাধা আরও কত কি অপবাদের কথা পড়িবে। আমরা ফরাসী আমরা জানি, এ-সমস্ত সিসিরো-ধরণের অতিরঞ্জিত আলঙ্কারিক কথা ; কিন্তু দেশীয় লোকেরা এই সব কথা অক্ষরে-অক্ষরে ঠিকৃ বলিয়া বুঝিবে।” ভাবে বোধ হইল অধ্যক্ষ মহাশয়ের মতে, এই সমস্তার একমাত্র মীমাংসা---শিক্ষা একেবারেই রহিত করা । পক্ষান্তরে, মেকলের বিশ্বাস ছিল, শিক্ষার অসাধ্য কিছুই নাই ; তিনি যে যুগের লোক, যে দলের লোক—সেই যুগ ও দলেরই অনুরূপ তাঙ্গর এই বিশ্বাস। যে সময়ে ইংলগুের উদার নৈতিকের দল নিজ বিশ্বাস অনুসারে অকুতোভয়ে কাৰ্য্য করিতেন, মেকলে সেই উদারনীতি-যুগের লোক ছিলেন। সামাজিক তন্ত্র কোন মতবাদের বাধা মানে না । উহার স্বকীয় অধিকৃত উপনিবেশ রাজ্যগুলিকে লাটুদিগের ও ইংরাজশিল্পব্যবসায়ীদিগের পরিরক্ষিত মৃগয়াভূমি বলিয়া মনে করে। উহার দেশের ধন ঐশ্বৰ্য্যের মূল উৎসের দিকে সোজা চলিয়া যায় এবং সেই উৎসকে নিজ করায়ত্ত করিয়া উহার মুখ ভিন্নদিকে ফিরাইয়া দেয়। উহারা বিনা সংকোচে দেশকে শোষণ করিতে থাকে। উদারনৈতিক দল,—মানবহিতৈষিতা ও ইংরাজ স্বার্থ—এই দুয়ের মধ্যে একটা সমন্বয় সাধন করিবার চেষ্টা করে। দেশ-শোষণ অপেক্ষা সভ্যতা বিস্তারের দিকেই র্তাদের বেশী দৃষ্টি। ইংলও স্বীয় উপনিবেশ রাজ্যসমূহের প্রতি মাতৃবৎ ব্যবহার করিয়া থাকেন ; উহাদিগকে বিপদে