পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যা । ] র্তাহারা এই সমস্তা, উদারভাবে ও সর্বসমন্বয়ের ভাবে মীমাংসা করিবার জন্ত পরামর্শ দিলেন। র্তাহারা বলিলেন,— ংস্কৃত ও আরবী, এই দুই দেশীয় ভাষা ও সাহিত্যকে উৎসাহ দেওয়া ও উহাদের পুনরুদ্ধার সাধন করা আমাদের প্রথম কর্তব্য । 蠍 কালেজ-সমুহের • পরিপোষণের নিমিত্ত এবং পুরাতন প্রাচ্য সাহিতা মুদ্রিত করিয়া প্রকাশ করিবার জন্ত অল্পসল্প অর্থসাহায্য প্রদান করা যাউক । তা ছাড়া ইংরাজীশিক্ষা একেবারে উঠাইয়া না দিয়া, উহাকে দ্বিতীয় পদবীতে রাখা যাউক । লোকের যেরূপ আগ্রহ দেখা যাইবে, সেই অনুসারে ইংরাজীশিক্ষণ বিদ্যালয়ে ক্রমশঃ প্রবর্তিত করা যাইবে । ইংরাজীর পক্ষপাতী দল দেখিলেন, এরূপ করিলে ইংরাজীশিক্ষার প্রতি যথেষ্ট সম্মান করা হয় না। কেবল ইংরাজীশিক্ষার দ্বারাই এদেশের মৃতদেহে প্রাণ সঞ্চারিত করা যাইতে পারে। এই সময়েই মেকলে অনুসন্ধান-সমিতির সমক্ষে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি চমৎকার বাকৃপটুতা প্রদর্শন করিয়া ইংরাজীশিক্ষার সুবিধাগুলি বিবৃত করিলেন ; তাহার সমস্ত শ্লেষবাক্য, তাহার সমস্ত পুষ্টতা, তাহার সমস্ত অজ্ঞতা প্রয়োগ করিয়া, দান প্রাচ্য ভাষাকে একেবারে পদদণিত করলেন- তিনি পশিলেন, এই সকল প্রাচ্যভাযা, নিকৃষ্টতর ভাষা, শিশুজনে[চিত ভাষা, নিৰ্ব্বোধ লোকের ভাষা,—বড়-জোর এই সকল ভাষা কৌতুহলের জিনিস। এই অপবাদগুলি নিতান্তই অসঙ্গত। যাহাই হউক, ইহার একটা মীমাংলা নিতান্তই আবশ্যক হইয়া উঠিল এবং মেকলে একটা মীমাংসার প্রস্তাব লইয়া আসিলেন । একটা কিছু স্থির করিয়া ফেলা আবশুক হইল, এবং মেকলে তাহার প্রস্তাবটি দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে উপস্থিত করিলেন। এই পাশার “দানের” উপর ভারতের ভবিষ্যৎ স্থিরীকৃত হইল। তাহার মন্তব্য-লিপিটি আমার হাতে রহিয়াছে। সহজ ক8ায় সমস্তাটি এই ;--“ইংরাজীশিক্ষা না দিয়া আমরা কি সেই সকল ভাষার শিক্ষা দিব যাহাতে এমন কোন উৎকৃষ্ট গ্রন্থ নাই যাহা আমাদের সহিত তুলনা হইতে পারে ; আমাদের বিজ্ঞানশাস্ত্র থাকিতে, আমরা কি সেই সকল বিজ্ঞানশাস্ত্র শিক্ষা দিব যাহা আমাদের অপেক্ষা নিকৃষ্ট ; উপাদেয় দর্শনশাস্ত্র ও সত্য ইতিহাস না শিখাইয়া সমসাময়িক ভারত ।

  • / আমরা কি সরকারী বায়ে সেই চিকিৎসাশাস্ত্রের শিক্ষা দিব, যাহা একজন ইংরাজ গোবৈষ্ঠের পক্ষেও লজ্জাজনক, আমরা কি সেই জ্যোতিষশাস্ত্র শিক্ষা দিব যাহা শুনিয়া আমাদের বালিকা-বিদ্যালয়ের বালিকারাও হাসিয়া উঠিবে ; আমরা কি সেই ইতিহাসের শিক্ষণ দিব যাহার মধ্যে এমন সব রাজার কথা আছে যাহার। ত্রিশ ফাট উচ্চ ত্রিশ হাজার বৎসর যাহাঁদের রাজত্ব কাল ; আমরা কি সেই ভূগোল শাস্ত্রের শিক্ষা দিব যাহা দধি সমুদ্র ও ক্ষীর সমুদ্রের বর্ণনায় পরিপূর্ণp" একথা যদি বল, তবে বাইবেলকেও মেকলের বাদ હિર উচিত। “অঙ্গীকৃত ভূমি”তে যে দুগ্ধ-নদীর কথা আছে সে বিষয়ে তোমার কি বক্তব্য ? মেকলে মনে করেন, ছেলেমানসি কথা শুধু হিন্দুধৰ্ম্মের মধ্যেই আছে। তোলদণ্ডের একদিকে হিন্দু গ্রন্থ এবং অন্ত দিকে ইংরাজি গ্রন্থ রাখিয়া তিনি এইরূপ বলেন :-—“দেখিতেছ না, ওজনে কোন গ্রন্থের ভার বেশ ?” কথাটা সত্য ; এবং মেকলেও একজন মনস্বী লোক ছিলেন। কিন্তু হিন্দুরা ইহার উত্তরে এই কথা বলিতে পারে ;–মানিলাম, আমাদের গ্রন্থ তোমাদের গ্রন্থের মত অত উৎকৃষ্ট নহে ; তাই বলিয়া উহা কি আমাদিগকে পাঠ করিতে নিষেধ করিবে ? ঐ সকল গ্রন্থ আমাদের জাতীয় পাল্যকালের স্মৃতি-সামগ্রী। আমরা ঐ সকল গ্রন্থ পাঠ করিব না কেন ?—অবশু পাঠ করিব---উহার পৌরাণিক জঞ্জাল ইষ্টতে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস উদ্ধার করিয়া লইব ।

মেকলে আরও এই কথা বলেন ঃ--“যদি ইংরাজ সরকার ংস্কৃত ও আরবী শিক্ষার জন্ত অর্থ সাহায্য করেন এবং সরকারী খরচে, ঐ দুই ভাষায় লিখিত গ্রন্থ সকল মুদ্রিত করেন, তাহ হইলে মনে হইবে যেন হিন্দুধৰ্ম্মেরক্ট প্রচারে সাহায্য করা হইতেছে।” কি ভীষণ ব্যাপার ! দেখিতেছ না, তাহ হইলে প্রটেষ্টাণ্ট মিশনারির দল-কে-দল ক্ষেপিয়া উঠিবে ! সরকারের যে প্রথম কৰ্ত্তব্য ধৰ্ম্মবিষয়ে উদাসীনতা রক্ষা করা, সেই কৰ্ত্তব্যের ক্রটি হইবে। একটা গাধাকে স্পর্শ করিলে, কিংবা একটা ছাগলকে বধ করিলে, বেদের কি মন্ত্ৰ পড়িয়া প্রায়শ্চিন্তু করিতে ইষ্টবে, হিন্দুদিকে সেই সব কি আমাদের শিখাইতে হইবে ? মা, তোমাদের তাহা শিথাইতে হইবে না। এখন কথা হইতেছে, হিন্দুদের অর্থব্যয়ে