পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

い*○○ হিন্দুদের পবিত্র প্রাচীন গ্রন্থ সকল যদি ছাপান যায়, তাঙ্গ হইলে হিন্দুধৰ্ম্ম প্রচারক বলিয়া লোকে কি জন্ত তোমাদিগকে সন্দেহ করিবে ? করদাতা হিন্দুগণ কর্তৃক ধে সরকারি তহবিল পরিপুষ্ট হয়, সেই তহবিল হইতে অর্থ লইয়া হিন্দুরা যদি হিন্দু ধৰ্ম্মের পুষ্টি সাধন আবশ্বক মনে করে, ইংরাজের তাহাতে বাধা দিবার কি তেতু আছে ? কেন না, ধৰ্ম্ম বিষয়ে ইংরাজত উদাসীন। 来 米 岑 岑 মেকলের এই যুক্তির মধ্যে একটা বাহ চটক ভড়ং আছে। বড়-জোর উগর দ্বারা মিশনারিদিগের নিকট হইতে খুব বাহবা কুড়ান যাইতে পারে। কিন্তু আর একটা যুক্তি যাহা খুব দৃঢ়তা ও আবেগের সঠিত বিবৃত হইয়াছে,তাহা এই –“সরকারি অর্থ লুণ্ঠন করিবার জন্যই কতকগুলা নিকৃষ্ট পুস্তক ছাপাইবার জন্ত, অসঙ্গত অদ্ভূত ইতিহাসকে, অযৌক্তিক দর্শনশাস্ত্রকে, হাস্যজনক পরমার্থ বিষ্ঠাকে কৃত্রিম উৎসাহ প্রদান করিবার জন্যই কি আমাদের এই সমিতি গঠিত হইয়াছে ?” তোমার বিশ্বাস, একজন ইংরাজ ডাক্তার এই কথা বলিতেছেন ; কিন্তু সে ভুল করিও না--আসলে ইহা স্বয়ং মেকলেরই কথা :- হিন্দু মনোবিজ্ঞান, স্বপ্নদর্শী হিন্দুদের দুঃসাহসিক ও গভীর স্বগা তত্ত্বালোচনা, পরমার্থ-বিদ্যা, নীতিশাস্ক, বেদ, ভগবদগীত, কপিল ও বুদ্ধের উপদেশ, চিত্তবিমোহন কথা-উপাখ্যান ! সমস্তই যারপর নাই অযৌক্তিক, অসঙ্গত, হাস্যজনক ! কিরূপ ধারণা হইতে এষ্ট সক্তির উৎপত্তি তোমরা বোধ হয় জান ! সে ধারণাটি এই :- সমস্ত জগতের শিক্ষার ভার আবার যুরোপের হাতে আসিয়াছে। কেন না, যুরোপের সভ্যতা শুধু উৎকৃষ্ট মতে, উহ! আবার সহজে ও অবিলম্বে অন্য দেশে সঞ্চারিত করা যাইতে পারে। ইংরাজি শিক্ষা দিলে, ভারতকে কতকগুলি শেষ্ঠ লোকের সংসর্গে আনা হইবে । সেক্ট বহুমূল্য রত্নভাণ্ডারের চাবি তাতার হাতে দেওয়া হইবে, যে ভাণ্ডাবে বিভিন্ন সভ্য জাতির অভিজ্ঞতা ও আবিষ্কার বড়শতাদি হইতে সঞ্চিত হইয়া আছে। প্রাচ্য শিক্ষার পক্ষপাতী লোকেরা দেখিলেন – সমূহ বিপদ উপস্থিত। যুরোপীয় শিক্ষাদীক্ষায় হয়ত বিশেষ কিছু ফল হইবে না কিংবা হয়ত যাহারা চিরন্তন প্রথা ও দেশাচারের বশীভূত, অভ্যাসের দাস,জাতিকুল দেশকালের সহিত যাহারা ঘনিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট, প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । সেই সকল হিন্দু একেবারে মার্গভ্রষ্ট হইবে- তাহদের সৰ্ব্বনাশ হইবে। মেকলে ইহার উত্তরে, অতীব শোভন ভাবে ষোড়শ শতাব্দিতে “পুনরভু্যখানের” (renaissance) দৃষ্টান্ত, সপ্তদশ শতাব্দির রুসিয়ার দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করিলেন। চল্লিশ বৎসর পরে, তিনি জাপানের দৃষ্টান্তও দেখাইতে পারিতেন । আমাদের লেখকদিগের উপর পুনরুত্থানের প্রভাব এত অধিক যে সেই প্রভাব আমাদের সাহিত্য-ইতিহাসকে ভাঙ্গিয়া দুই খণ্ড করিয়াছে ; সেই দুষ্ট যুগ আবার যে যোড়া লাগিবে তাহার জো নাই। কিন্তু যাই হোক, ফলে কি ঘটিয়াছে ? -- পুরাতন ভাষাগুলি আমাদের ভাষার স্থলাভিষিক্ত হওয়া, দূরে থাকৃ—আমাদের ভাষাকে শুধু নমনীয় ও সমৃদ্ধ করিয়া তুলিয়াছে। মেকলে চাহেন, ভারত নিজের ভাষাকে, নিজের পুরাতন সাহিত্যকে, নিজের দর্শনকে, নিজের দেবতাদিগকে, নিজের সমস্ত অন্তরাত্মাকে প্রত্যাখ্যান করুক। গৰ্ব্বিত ভারতবাসী, তোমার গৰ্ব্বকে একটু খৰ্ব্ব কর * * * যদি মনে কর ঘোড়শ শতাদিতে ফরাসীর পরিবর্তে গ্রীকভাষা প্রবর্তিত হইত, “Paradis"র বদলে “ওলিম্পিয়া” স্থাপিত হঠত, তাহলে কতকট বুঝিতে পারিতে মেকলে কি বিপ্লবকাণ্ড করিয়াছেন। প্রাচ্য শিক্ষাবাদীদের ভিত্তি দৃঢ় ছিল, “পুনরুত্থান” ও রুসের দৃষ্টান্ত তাহদের নিকট বলা বৃথা । কেন না, প্তাহারা ঠিকই মীমাংসা করিয়াছিলেন যে জাতীয় ভাষা ও বাক-পদ্ধতি বিদ্যাশিক্ষার পত্তনভূমি হইবে। এবং তাহার সঙ্গে, ইচ্ছা করিলে, ইংরাজীভাষাও শিখান হইবে । মেকলে যে কাজ করিয়াছেন তাহার দূর-পরিণাম ও গুরুত্ব ভাল করিয়া বুঝিয়া দেখা যাক। মাতৃ ভাষার স্থলে বিদেশী ভাষা প্রবর্কিত করিলে, জাতীয় মনকে বিগ্‌ড়াইয়া দেওয়া হয়--শুধু তাহা নহে, জাতীয় মনের জীবন্ত উৎস শুষ্ক করিয়া তাহার মৌলিকতাকে নষ্ট করা হয়। কেন না, কোন ভাষাকে পরিত্যাগ করিলে তদন্তৰ্গত শিল্প-কল্পনাকে পরিত্যাগ করিতে হয়, দার্শনিক চিন্তাকে পরিত্যাগ করিতে হয়, সেই ভাষার বিশেষ ধরণে যে নীতিতত্ত্ব পরিব্যক্ত হইয়াছে তাহাও পরিত্যাগ করিতে হয়। সত্য কথা বলিতে কি, ইহা অপেক্ষা পাগলামি আর কিছু হইতে পারে না। ভারতের প্রাচীন রচনাবলী অপূৰ্ব্ব উপাখ্যান ও চিত্রোপমরুপকে পরিপূর্ণ— .هي عباس