পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যা । ] মুকুলিত ও প্রফুটিত হুইয়া উঠিয়াছিল। প্রত্যেক শিল্পী ব্রাহ্মণিক চিত্র শালায় এক একটা নুতন মূৰ্ত্তি স্থাপিত করিয়াছিল। আর এখন সেই সব পুরাতন সাহিত্যরচনা বিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকা হইতে বহিস্কৃত ছুইবে । একথা সভ্য, ইংরাজ সরকারের একটা উচ্চ আকাঙ্ক্ষা ছিল। ইংরাজ সরকার মনে করিয়াছিলেন, দেশীয় শিল্পকে আবার নবীকৃত করিবেন—“কিন্তু কি প্রকারে ?—যুরোপ হইতে মডেল’ আনিয়া । আলঙ্কারিক শিল্প ও পুরাকালের প্রাচীন শিল্পরচনা সকল পরিত্যক্ত হইল। যে দিব্য ভাবোচ্ছাস হইতে, বৌদ্ধ গুহা-মন্দির, জৈনদিগের শ্বেতমঠ, বিরাটাকৃতি দেবালয় স্বাক্ষা-কারুকার্য্যবিশিষ্ট মস্জেদ---এই সকল পরমাশ্চর্য্য শিল্প ভারতের পুণ্য ভূমিতে জন্মগ্রহণ করে,--বিলাতী ভাস্কর ও বাস্তু শিল্পীগণ তাহার মৰ্ম্ম গ্রহণ কিংবা পুনরুৎপাদন করিতে না পারিয়া, ইংরাজ-রাজমিস্ত্রিরা, “লোকোমোটিভ ডেপোর” ও আদালতের ইমারত সকল যে ‘নকল-গথিক’ রীতিঅনুসারে যদৃচ্ছাক্রমে নিৰ্ম্মাণ করে, সেই নকল-গথিকের রীতি-পদ্ধতি শিক্ষা দিতে চাহিলেন । নৈতিক শিক্ষা ও দার্শনিক শিক্ষার কথা আর কি বলিব ! এ দেশে দর্শন ও নীতিশাস্ত্র পরমার্থ বিদ্যার পরিচায়ক মাত্র । ধৰ্ম্মভাবরূপ শক্তিমান পক্ষের সাহায্যে, সন্ন্যাসী, যোগী ও দার্শনিকের চিন্তার অনস্ত আকাশে অবাধে উড়িয়া বেড়ান। এদিকে ইংরাজ-সরকার সমস্ত শিক্ষাকে লৌকিক শিক্ষায় ও অপরমার্থিক শিক্ষায় পরিণত করিলেন। তাহার প্রয়োজন ছিল। ইংরাজ সরকার, যেমন এক হস্তে হিন্দুদের নিকট হইতে শাস্ত্রাদি লইয়া দূরে নিক্ষেপ করিলেন, তেমনি অপর হস্তে তাহাদিগকে বাইবেল দিতে পারিলেন না। মনে করিয়া দেখ, ইহাতে হিন্দুর মনোরাজ্যে যেরূপ বিপৰ্য্যয় ও বিক্ষোভ উপস্থিত হইল। অতৃপ্ত ও ক্ষুধাকুল কল্পনার নিকট বিশুদ্ধ “জ্ঞানান্নের” ও প্রটেষ্টাণ্ট খুষ্টধৰ্ম্মের হিত-বাদ নীতির কি কোন আকর্ষণ থাকিতে পারে ? হিন্দুরা হয় বহুদেববাদী, নয় জগৎব্রহ্মবাদী। আমাদের ঈশ্বর, যিনি পৰ্য্যায়ক্রমে প্রখ্যাত যাদুকর ও দশআদেশের রক্ষক, এরূপ ঈশ্বরকে হিন্দুরা বুঝিতে পারে না। আমাদের এই ধৰ্ম্মটা কিরূপ ?-—ইহা সাৎসরিক লোকদিগের বিদেশী চিনির সহিত প্রতিযোগিতা । | ونه/ ==ح*.......ے۔ • ব্যবহার্য্য একটা লৌকিক দর্শনশাস্ত্র। এই সকল ধ্যানপরায়ণ হিন্দুদের নিকট, এই ধৰ্ম্ম চিরকালই অনাত্মীয় ও অপরিপাচ্য রূপেই থাকিবে। শ্ৰীজ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিদেশী চিনির সহিত প্রতিযোগিতা। -- আমাদিগের দেশে সাধারণতঃ যে সকল প্রণালীতে চিনি প্রস্তুত হয় তাহ বিদেশী প্রণালী অপেক্ষ নিকৃষ্ট ও ব্যয়সাধ্য, সুতরাং বিদেশী চিনির সহিত প্রতিযোগিতা করিতে হইলে আমাদিগের চিরপ্রচলিত প্রণালীগুলি কথঞ্চিৎ পরিবৰ্ত্তিত ও আধুনিক বৈজ্ঞানিক ভাবে উন্নত করিয়া সহজ ও সুলভ করা আবগুক । জৰ্ম্মাণি, যাভা, মরিশস্ প্রভৃতি স্থান হইতে সুলভ চিনি বহুল পরিমাণে আমদানি হওয়ায় আমাদিগের বিশুদ্ধ স্বদেশী চিনি মহার্যতাহেতু লুপ্তপ্রায় হইতে বসিয়াছে। যদ্যপি বর্তমান আন্দোলনের ফলে সৰ্ব্ব সাধারণের দৃষ্টি এদিকে আকৃষ্ট হইয়াছে, কিন্তু কেহ প্রকৃত কারণানুসন্ধানে উদ্যোগ না হওয়ায় এ বিষয়ের চেষ্টা ফলবতী হইতেছে না। সামাজিক শাসন বা অন্যান্য বিবিধ উপায়ে এই ব্যবসায়ের ভিত্তি দৃঢ় করিবার অশেষ চেষ্ট সত্ত্বেও ইহার প্রস্তুতপ্রণালীর বিষয়ে কাহারও লক্ষ্য না থাকায় আমরা কাৰ্য্যক্ষেত্রে আশামুরূপ অগ্রসর হইতে পারিতেছি না। পাশ্চাত্য দেশ অপেক্ষা আমাদিগের দেশে অনেক বিষয়ে সুবিধা আছে। তথাকার সামান্ত কুলি মজুরের পারিশ্রমিক এখানকার ক্ষুদ্র কেরাণী বাবুদের সমতুল্য ; বরং অধিক, তথাপি কম নহে। কার্য্যকুশল ব্যক্তিদিগের ত কথাই নাই। এখানে ১, ১২ টাকায় যে ফিটার (মিস্ত্রী) বা ৩০২ ৪০ টাকায় যে প্যানম্যান পাওয়া যায় উহার চতুগুণ বা পঞ্চগুণ বেতনেও সেখানে সেরূপ লোক পাওয়া মুকঠিন। কারখানা করিবার উপযুক্ত স্থানের দুৰ্ম্মল্যত এখানকার হিসাবে অনেক বেণী ; গৃহাদি নিৰ্ম্মাণ ব্যাপারেও তদ্রুপ –অবশেষে সমুদ্রপথে এখানে মাল পাঠাইবার খরচাও বড় কম নহে। এই সকল এবং অপরাপর অনেক অসুবিধা সহ করিয়াও যে বিদেশ