পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম সংখ্যা । ] জ্যের জন্ত ভুবনবিখ্যাত ছিল। সে শিল্প দেখিতে দেখিতে বিলুপ্ত হইয়া গেল, সে বাণিজ্য এখন কথা মাত্রে পর্য্যবসিত হইয়া পড়িল! এই সকল কারণে পুরাতন মালদহে পদার্পণ করিলেই হৃদয় মন অবসর হইরা পড়ে। অৰ্দ্ধ শতাব্দী পূৰ্ব্বেও শাহ দেখিতে পাওয়া যাইত, এখন তাহাও বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে ! এখন এখানে ম্যালেরিয়া—অন্নাভাব-অশিক্ষিত মুসলমানগণের অসঙ্গত আম্ফালন-উর্দশার দুরতিক্রমণীয় দুঃস্বপ্নের মত নিরন্তর লোকচিত্ত অবসন্ন করিয়া ফেলি তেছে ! পৌণ্ড বৰ্দ্ধন । . পুরাতন মালদহ হইতে পৌণ্ড বৰ্দ্ধন পৰ্য্যন্ত যে রাজপথ প্রচলিত আছে, তাহা একটি পুরাতন রাজপথ। সম্প্রতি তাহার পুরাতন চিহ্লাদি বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। কিছুদিন পূৰ্ব্বেও স্থানে স্থানে পুরাতন ইষ্টকের আচ্ছাদন ও পথপাশ্বস্থ ইষ্টকরচিত পয়ঃপ্রণালীর নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যাইত। এই পথ বাঙ্গালীর একটি চিরপরিচিত পুণ্যপথ বলিয়া কথিত হইতে পারে। এই পথে যুগযুগান্তর হইতে কত বিজয় যাত্রা বহির্গত হইত। এখন ইহা জনশূন্ত অরণ্যের মধ্যে অগৌরবে কালযাপন করিতেছে। উভয় পাশ্বে, নিকটে હન দূরে, যে সকল অতীতসাক্ষী সরোবর পড়িয়া রহিয়াছে, তাঁহাই এখন হিন্দু ও বৌদ্ধ শাসন সময়ের একমাত্র পরিচয়স্থল। এক সময়ে এই সকল পুরাতন সরোবরতীরে বছসংখ্যক মন্দির, বিহার, চৈত্য, সংঘারাম বর্তমান ছিল। পরবর্তী যুগের বিজেতৃগণ তাহ হইতে উপাদান সংগৃহীত করিয়া, প্রাসাদ প্রাচীর উপাসনালয় ও সমাধিমন্দির রচনা করায়, এখন যাহা আছে, তাহা অপেক্ষাকৃত আধুনিক আকারে প্রতিভাত হইতেছে। তথাপি অভিনিবেশ সহকারে পৰ্য্যবেক্ষণ করিলে, এখনও এই সকল দৃশুমান অট্টালিকার ইষ্টক প্রস্তরের মধ্যে হিন্দু ও বৌদ্ধযুগের অনেক অভ্রান্ত স্মৃতিচিন্তু দেখিতে পাওয়া যায়। পৌণ্ডবৰ্ধনের এই বিশেষত্ব তাহাকে অনুসন্ধাননিপুণ পৰ্য্যটকগণের নিকট সুপরিচিত করিয়া রাখিয়াছে। পূৰ্ব্বে এই শ্রেণীর স্মৃতিচিহ্ল সহজেই দৃষ্টিপথে পতিত হইত। ক্রমে সে সকল স্থানান্তরিত হইয়াছে। যে পারিয়াছে, সে অপহরণ করিতে ক্রটি করে নাই। কতকগুলি কলিকাতায় পুঞ্জীকৃত হইয়াছে ; পুরাতন মালদহ। ஆ-> কতকগুলি এখনও ইংরেজ-বাজারে সংগৃহীত হইয়া রহিয়াছে ; কতকগুলি কোথায় চলিয়া গিয়াছে, কেন্থ তাহার সন্ধান প্রদান করিতে পারে না! এই প্রদেশে যে বহুসংখ্যক হিন্দু ও বৌদ্ধমন্দির বর্তমান ছিল, তাহার কথা হিয়াঙ্গথসাঙ্গের ভ্রমণকাহিনীতে এবং “রাজতরঙ্গিণী” নামক কাশ্মীরের ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায় । তাহার অধিকাংশই প্রস্তরনিৰ্ম্মিত ছিল। তাহা সহসা ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়া লোকলোচনের অন্তর্হিত হইবার আশঙ্কা ছিল না । পরবর্তীযুগে তাহার ইষ্টক প্রস্তর অন্ত প্রয়োজনে ব্যবহৃত না হক্টলে, অস্ত্যাপি অনেক নিদর্শন স্বস্তানে আত্মরক্ষা করিতে পারিত + s পুরাকালের পেগু বদ্ধন নদীতীরেই অবস্থিত ছিল । এখন যাঙ্গ পেগু বৰ্দ্ধন নামে পরিচিত, তাঙ্গ নদীতীর হইতে কিয়ন্দরে অবস্থিত। কিন্তু নদী যে পুরাকাল হইতে এক স্থানেই প্রবাহিত হইতেছে, তাহাতে আস্থা স্থাপন করিতে, সাহস হয় না। সচরাচর মহানন্দীতীরস্থ “বালিয়া নবাবগঞ্জ” নামক স্থান হইতে পর্য্যটকগণ পেও বৰ্দ্ধনে যাত্রা করিয়া থাকেন । এই স্থান হইতে পৌণ্ডবৰ্দ্ধন ৫ মাইলের অধিক নহে । এখানে যে রাজপথ দেখিতে পাওয়া যায়, তাহ আধুনিক। তাহার পাশ্বে পুরাতন নদীখাতের আভাস প্রাপ্ত হওয়া যায় । • এখন যাহা আছে, তাহা নগরতোরণ, সমাধিমন্দির, অথবা উপাসনালয় । তাহা একস্থানে প্রতিষ্ঠিত নহে। জনশূন্ত অরণ্যের মধ্যে, এখানে সেখানে, নানা স্থানে, দূরে দূরে পড়িয়া রহিয়াছে। যখন পৌণ্ডবৰ্দ্ধনে রাজধানী ছিল, তখন তাহার আয়তন অধিক ছিল । এখন সে পুরাতন রাজধানীর সীমানিৰ্দ্দেশের সম্ভাবনা নাই। মুসলমানাধিকার প্রবর্তিত হইবার পর দিল্লীশ্বরের পৌণ্ডবৰ্দ্ধন অবরোধ করিবার কথা ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায়। সে অবরোধবিবরণ পাঠ করিলে মনে হয়,— পৌণ্ড বৰ্দ্ধন নগর প্রাচীরে এবং রাজহুর্গে সুরক্ষিত ছিল । কিন্তু দুর্গ বা দুর্গপ্রাচীরের কোন চিন্তু বা পুরাতন পরিখা

  • Its remains afford stronger evidence than do those of Gour, of its having boen constructed mainly from the materials of Hindu buildings.-Ravenshaw's Gour, p. 44. *