পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১শ সংখ্যা । ] কলিকাতা বাসকালে টুয়েটিয়েথ সেঞ্চুরী নামক মাসিক পত্রে, উপাধ্যায় বিশেষভাবে প্রচার করেন। এই সময়ই উপাধ্যায় গৃহস্থাশ্রমপ্রচলিত তদীয় ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় নাম পরিত্যাগ করিয়া উপাধ্যায় ব্রহ্মবান্ধব নাম ও তৎসঙ্গে সন্ন্যাসীর বেশভূষা ধারণ করেন ; এবং ইউরোপূখণ্ডে নানা রোমান ক্যথলিক সন্ন্যাসীগণ •যেমন, নানা খ্ৰীষ্টয় সন্ন্যাসী-সম্প্রদায় ( Orders of monks) &Rs:5 offilton; fosis তদ্রুপ ভারতবর্ষে ঈশাপন্থী নামে নূতন একটি খ্ৰীষ্টীয় সন্ন্যাসী-সম্প্রদায় প্রবর্তিত করিবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হন। বস্তুতঃ রোমান কাথলিক খ্ৰীষ্টীয় সমাজের প্রথমাবস্থায় তৎসমাজের প্রধান প্রধান আচার্যাগণ ইউরোপখণ্ডে যে মহৎ কার্য্য সাধন করিয়াছিলেন, বিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে উপাধ্যায় ব্রহ্মবান্ধবও ঠিক সেই কার্যোরই সুচনা করিয়াছিলেন। কিন্তু স্থূলবুদ্ধি, পরধৰ্ম্মদ্বেষী, দাম্ভিক রোমান কাথলিক পুরোহিতগণ উপাধ্যায়েব এই মহৎ কার্য্যের ঠিক মূল্য বুঝিয় তাহাকে যথোচিত সাহায্য করা দূরে থাকুক, বরং রোমান কাথলিক খ্ৰীষ্টীয় সমাজ হইতে এক হুকুমনাম (Encyclica ) বাহির করিয়া খ্ৰীষ্টানদিগকে উপাধ্যায়ের প্রকাশিত সোফিয়াপত্র পাঠ করিতে পর্য্যস্ত নিষেধ করিয়া দিলেন । এইরূপে বাধা প্রাপ্ত হইয়া উপাধ্যায় প্রস্তাবিত ঈশাপন্থী নামক সন্ন্যাসী-সম্প্রদায়-প্রবর্তন-কাৰ্য্য হইতে বিরত হইলেন । কিন্তু উপাধ্যায় নিশ্চেষ্ট হইয়া বসিয়া থাকিবার লোক নহেন ; সুতরাং তিনি শীঘ্ৰই নূতন আর একটা বৃহৎ ব্যাপারের সুচনা করিলেন। বেদান্ত-দর্শনের সহিত খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মের সমন্বয় সাধন করিতে গিয়া বেদান্ত-দর্শনের মাহাত্ম্য হৃদয়ঙ্গম করিয়া উপাধ্যায় উহার একান্ত পক্ষপাতী হইয়। দাড়াইয়াছিলেন, এবং স্বদেশে ও বিদেশে বেদান্ত-শাস্ত্র প্রচারের জন্ত তিনি বিশেষ ব্যাকুল হইয়াছিলেন। এই উদ্দেশে এক্ষণে তিনি টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরীতে হিন্দুদর্শন সম্বন্ধে নানা প্রবন্ধ এবং পৃথক ভাবে পঞ্চদশী নামক বেদান্ত গ্রন্থের একটী ইংরেজী অমুবাদ প্রকাশ করিতে আরম্ভ করিলেন। কেবল তাহাই নহে, বিদেশে বেদান্ততত্ত্বপ্রচারার্থে তিনি ইংলও-দেশে গমন করিয়া তথাকার স্বপ্রসিদ্ধ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদর্শন ও ধৰ্ম্মনীতি সম্বন্ধে কয়েকটি বস্তৃতাও প্রদান করেন। এই সকল বস্তৃতা কেমব্রিজ উপাধ্যায় ব্রহ্মবান্ধব । - বিশ্ববিদ্যালনে অধ্যাপকগণের এমনই না হইছিল 'ుషిరి

    • ۰۰۰۰***۶۹ ماه - مید، «همسرم ماه مه =

যে, তাহারা প্রকাশু সংবাদপত্রে ঐ সকল বস্তৃতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ছয় সাত জন অধ্যাপক মিলিয়া ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদর্শনের নূতন একটি অধ্যাপক-পদস্যষ্টির জন্ত একটি কমিটী গঠন করেন। ইউরোপের সর্বপ্রধান একটী বিদ্যাকেন্দ্রে হিন্দুদর্শনের রীতিমত চর্চা আরম্ভ হইবে, এই আশা ও আনন্দে উপাধ্যায়ের বুক ফুলিয়া উঠিল ; এবং এই বৃহৎ ব্যাপারের জন্ত অর্থ-সংগ্রহার্থে উপাধ্যায় স্বদেশে প্রত্যাগমন করিলেন। কিন্তু নানা কারণে উপাধ্যায়ের আশা ফলবতী হইল না ; কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদর্শনের অধ্যাপকের পদসৃষ্টি কল্পনাতেই পৰ্য্যবসিত হইল। এইরূপে উপাধ্যায় দুইটি অতি মহৎ কার্য্যের সূচনা করিয়া দুইটিতেই বিফল মনোরথ হইলেন। কিন্তু বিফলতার অন্ধকারের মধ্য দিয়াই লোকের নিকট সফলতার পথ উজ্জ্বলরূপে প্রকাশ পায়। উপাধ্যায়েরও ঠিক তাহাই হইল-—অতীত জীবনের সমস্ত বাধাবিঘ্ন, বিফলতা ও নৈরাপ্ত তাহার সম্মুখে জীবনের সেই অঙ্ক খুলিয়া দিল, যে অঙ্কে তিনি বিজয়ী ও কীৰ্ত্তিমান পুরুষরূপে প্রকাশ পাইলেন। বিলাত যাত্রার পূৰ্ব্বে তিনি যখন বেদান্ত-দর্শনে একান্ত অমুরাগী হইয়াছিলেন, তখনই সেই দর্শনের আলোকে তিনি হিন্দু বর্ণাশ্রমধৰ্ম্মের মূল তত্ত্বালোচনায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। সেই আলোচনার ফলস্বরূপ তিনি এক্ষণে এই সত্যটি পরিষ্কাররূপে হৃদয়ঙ্গম করিতে সমর্থ হইলেন যে, হিন্দুবর্ণাশ্রমধৰ্ম্মের অর্থাৎ হিন্দুসমাজ-তত্ত্বের মূলও বেদান্তের অদ্বৈতবাদ। হিন্দুসমাজে ব্রাহ্মণক্ষত্রিয়াদি নানা বর্ণভেদ এবং ব্রহ্মচৰ্য্য গার্হস্থ্যাদি নানা আশ্রম ভেদ থাকিলেও এ সকল ভেদ ব্যবহারিক ভেদ মাত্র, পারমার্থিক দৃষ্টিতে বর্ণে বর্ণে আশ্রমে আশ্রমে কোনও ভেদ নাই ; যেহেতু সকল বর্ণ এবং সকল আশ্রমই সেই এক অদ্বিতীয় সচ্চিদানন্দময় পুরুষে প্রতিষ্ঠিত—তিনিই সকলের মূলাধার, তিনিই সকলের পরম গতি। এমন উচ্চ কেহ নাই যে র্তাহার আশ্রিত নহে, আবার এমন হীন কেহ নাই যে র্তাহ হইতে ভ্রষ্ট। সুতরাং হিন্দু বর্ণাশ্রমধৰ্ম্মের, হিন্দু সমাজবিধির সমস্ত বৈষম্যের মূলে এক মহাসাম্য বিদ্যমান। এইরূপে উপাধ্যায় হিন্দুদর্শন ও হিন্দুসমাজতত্বের মধ্যে যতই প্রবেশ লাভ করিতে লাগিলেন, খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় তাহার