পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৩৫ ও অপর সকল বিষয়ে প্রতিনিধিরা বিচার করিয়া থাকেন । প্রহারের অভিযোগে এক বা দুই টাকা দণ্ড হয়। আমার একজন হাজারিকার সহিত পরিচয় হইয়াছিল, তাহার স্ত্রীকে হাজারিকাণী কহে, তাহার পুৰ্ব্বপুরুষ আহোমরাজের প্রদত্ত মাটা বা ভূমি নিষ্কর ভোগ করিতেন। এক সহস্ৰ শ্রমজীবী বিনা বেতনে আহোমরাজের কার্য্যে দিতে হইবে বলিয়া বৃত্তিভোগ হইয়াছিলেন ও তাহাতেই হাজারিক উপাধি প্রাপ্ত হন। আসামে এখনও শ্রমজীবী পাওয়া সহজ নহে। কাহারও অর্থের বিশেষ প্রয়োজন হইলে অন্তের দাসত্ব স্বীকার করে । পঞ্চাশ টাকা ঋণ গ্রহণ করিলে পরিবারস্থ একজনকে উত্তমণের নিকট কুসীদ প্রদানের পরিবর্তে ভূত্যের কার্য্যে নিয়োগ করিবার নিয়ম ছিল। ইংরাজ রাজত্বে তাহ রহিত হইয়াছে। এতদ্দেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত না থাকায় প্রজাগণ হলচালন করিয়া দিনাতিপাত করে, তজ্জন্ত পারিশ্রমিক লইয়া কাৰ্য্য করিবার লোক অধিক মিলে না । প্রত্যহ ছয় আনার নুনে শ্রমজীবীর কার্য্য করে না ; কাৰ্য্য করিলেও অধিক পরিশ্রম করা অনাবশ্যক ভাবে । ডাঙ্গোরিয়ার বাটীতে শণস্বত্র নিৰ্ম্মাণের জন্ত এক ব্যক্তি নিযুক্ত হইয়া সন্ধ্যাকালে বেতন চাহিলে তিনি কহিলেন অষ্ঠ অর্থাভাব কলা দিব, পরদিন বলিলেন, শণস্বত্র বিক্রয় করিয়া তুমি বেতন গ্রহণ কর । ইহাতে কারুজীবী কহিল, বিক্রয়ের দ্বারা তিন আন মূল্য মিলিবে । কর্তা কহিলেন, ছয় আনা পারিশ্রমিক লইবে বলিয়া তিন আনার কার্য্য করিয়া দিলে অতএব আমি উক্ত বেতন দিতে অপারগ। পরদিন হইতে কার্যাকারক প্রথম দিন অপেক্ষ তিন গুণ অধিক কার্যা করিতে লাগিল । বিষয়ী লোকের জন্ত এই গল্পটি বিশেষ উপযোগী । আহোমিয়া গৃহস্থের বাটতে স্থপকাৰ্য্যে বাঙ্গালার মত বিবিধ ব্যঞ্জনের প্রচলন নাই, খাম্‌তি লাফ ও বাঙালি শাক লোভনীয় বলিয়া ব্যবহৃত । শাকের নামে জাতির পরিচয় থাকায় উছাও ভিন্ন দেশীয় বলিয়া বোধ হয়। মহাবিষুব ংক্রান্তিতে এখানকার প্রধান ও সাৰ্ব্বজনিক উৎসব চৈৎবিস্তু কয়েকদিনের জন্ত জনসমাজকে আনন্দে নিমগ্ন করে। তৎকালে নুতন বস্ত্র অবস্ত পরিধেয়, বধু আত্মীয়গণকে উপহার দিবার জন্ত বহুপুৰ্ব্ব হইতে বয়নকাৰ্য্যে ব্যাপৃত প্রবাসী। থাকেন। বাঙ্গালী ভৃত্য ভিন্ন স্বদেশী দাসকে নববস্ত্র দিতে হয়। সে সময় তাহারা অবসর পাইয়া থাকে, দ্যুত ক্রীড়া, গীতবাদ্য প্রভৃতি আমোদে ও স্বজনের গৃহে নিমন্ত্রণে গমন ইত্যাদি কার্য্যে সময় অতিবাহিত হয়। অবিবাহিত যুবকগণ ঢোল করতালি ছন্দে নৃত্য করে। পরিজনের নিকট না হইলে অশ্লীল সংগীত হইয়া থাকে। ডোমজাতীয়া নারী বাদ্যসহ নৃত্য করিতে পরাভূখী নহে। এই উৎসবের সহিত কোন প্রকার অর্চনার বিধান নাই । ভগদত্তের রাজধানী প্রাগজ্যোতিষপুরে তাহার পিতা নরকাসুরের প্রতিষ্ঠিত কামাখ্যা এখন পুরাণ স্মরণ করাইবার জন্য অবশিষ্ট আছেন। গৌহাটীতে মৃত্তিকাগর্ভে প্রাচীন ধ্বংসাবশিষ্ট গৃহের চিত্ন বহির্গত হইতেছে । শুক্লেশ্বরের মন্দিরের নিয়ে বহ্মপুত্রতীরে বৃহৎ প্রস্তরমূৰ্ত্তি বৌদ্ধযুগের পরিচয় দিতে সমর্থ। প্রতাষে সাৰ্দ্ধক্রোশ ব্যবহিত চিমবৎ শুঙ্গে দশুমান ভূবনেশ্বরীর মন্দির সম্মুখীন করিয়া লৌহিতা -নীরবাহী পথ অতিক্রম করত প্রস্রবণের নিকট আমাদিগকে অশ্বযুগতাড়িত শকট ত্যাগ করিতে হইল। নিম্নভূমি হইতে উদ্ধে উঠিবার আগে একটী পুরদ্বারের ভগ্নাবশেষ রহিয়াছে দুষ্ট হইল। কোন স্থানে সোপান কোথাও বন্ধুর বা মঙ্গণ প্রস্তর আরোহণে ধীরভাব ধারণ করিয়া চলিলাম। . অবতরণ করিতে হইলে কোন কার্য্যে চঞ্চল হইবার বাধা নাই । নানাবৃক্ষসমাচ্ছন্ন ঝিল্লিরবসমাকুল বিটপিমধ্যে কিঞ্চিৎ মাধুর্যের পরিচয় দিবার জন্য চম্পকতরু অযাচিত হইয় পুষ্পাভরণ প্রদর্শন করিল। দ্বিতীয় পুরস্কারের এক কক্ষে সৰ্ব্বাঙ্গে ভস্ম, গলে রুদ্রাক্ষ, শ্মশ্রীধারী কিরাত সন্ন্যাসী স্তম্ভিত অবস্থায় উপবিষ্ট। অবশুক হইলে দেবীর তুষ্টি সাধনোদেশে আত্মবলি বা তাহার নিস্ক্রয়স্বরূপ একান্তে নরবলি দিতে ভীত হইবেন না, তাহার মৌনমুখমণ্ডলে এই ব্যাখ্যা আমি পাঠ করিতেছি। ছিন্নমস্ত প্রভৃতির মন্দির অতিক্রম করিয়া সৌভাগ্যসরোবর পারে পাৰ্ব্বত্য পল্লীর সোপান পরম্পরা উঠিয়া পুরোহিতের সঙ্কীর্ণ প্রকাশু গৃহে স্থান পাইলাম। বায়ুসেবনের জন্ত আমাকে প্রতিবেশীর অঙ্গনে যাইতে হইয়াছিল। যোগিনী তন্ত্রের নীল পৰ্ব্বত সমুদ্রতল হইতে এক সহস্ৰ ফুট উচ্চ। কামপীঠে স্নান ও প্রাতরাশাস্তে কামাখ্যা দর্শনাভিলাষী