পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ややス কোনও একটা নিদিষ্ট, বিষয় একমনে চিন্তা করিতে লাগিলাম । এইরূপে দশ পনেরো মিনিট কাটিলে, আমাদের মধ্যে যিনি পাণ্ড ছিলেন তিনি বলিলেন— “আমাদের এ চক্রের মধ্যে যদি কোনও প্রেতাত্মার আবির্ভাব হইয়া থাকে, তবে তিনি টেবিলের একটি পায়া তুলিয়া শব্দ করুন।” কিন্তু টেবিলের পায় উঠিল না। আমরা যেমন ছিলাম তেমনি বসিয়া রছিলাম। পাচ সাত মিনিট পরে আবার ঐ প্রশ্ন পুনরুক্ত হইল। তথাপি টেবিল নড়ে না । যখন এষ্টরূপে কুড়ি কি পচিশ মিনিট অতীত হইয়াছে, তখন আবার উক্ত প্রকার প্রশ্ন হইল ; হইবা মাত্র টেবিলের একটি পায় উঠিয়া ঠক করিয়া শব্দ করিল। তথন সকলে বলিল—“ভুত এসেছে। চোখ খোল ।” আমরা চক্ষু খুলিলাম। সেই ঘরে এমন দুই একজন ছিল যাহারা চক্রের মধ্যে বসে নাই, তাঙ্গরা উঠিয় দুয়ার জানালা খুলিয়া দিল । ঘরে আলো আসিল । তথন আমার সঙ্গীগণ ভূতকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে আরম্ভ করিল। প্রশ্নগুলি এরূপ ভাবে করিতে হয়, যাকাতে টেবিলের পা ঠোকার সংখ্যার দ্বারা উত্তর বুঝা যাইতে পারে। নিয়ে কতকগুলি উদাহরণ দিলাম । প্রশ্ন । কত বৎসর পূৰ্ব্বে তোমার মৃত্যু হইয়াছিল তত বার শব্দ কর । মৃত্যু সময়ে তোমার বয়স কত ছিল তত বার শব্দ কর । তুমি স্ত্রীলোক না পুরুষ, স্ত্রীলোক হইলে একবার, পুরুষ হইলে দুইবার শব্দ কর । তুমি ব্রাহ্মণ না শূদ্র, ব্রাহ্মণ হইলে একবার শূদ্র হইলে হুইবার শব্দ কর । তোমার কয়টি সন্তান জীবিত আছে ততবার শব্দ কর । তুমি এই গ্রামের লোক ছিলে, না ভিন্ন গ্রামের— এই গ্রামের হইলে একবার ভিন্ন গ্রামের হইলে দুইবার শব্দ কর । পরলোকে তুমি মুখে আছ না দুঃখে আছ, সুখে থাকিলে একবার, দুঃখে থাকিলে দুইবার শব্দ কর । আমার কত বৎসর হইল বিবাহ হইয়াছে ততবার শব্দ কর । অমুক চাকরিতে কয়টাকা মাহিনী পায় ততবার শব্দ কর । কত বৎসর পরে তাহার মাহিনী বাড়িবে, কয়টাকা মাহিনী বাড়িবে ইত্যাদি। এইরূপে নানা প্রশ্ন ও ঠকাঠক উত্তর হইতে লাগিল । প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । ۶ - ۰** همه مه ۰۰۰ی . به ہے-جی. আমার সঙ্গীরাই প্রশ্ন করিতেছিল, আমি বসিয়া তামাসা দেখিতেছিলাম মাত্র। আমি ভাখিতেছিলাম, ইহা জুয়াচুরী বই আর কিছুই নয়। ইহারাই একজন কেহ পায় ঠুকিয়া দিতেছে । ক্রমে আমিও ই একটা প্রশ্ন করিলাম। যথার্থ উত্তরই পাইলাম। ভাবিলাম এগুলির উত্তর আমার সঙ্গীদের জানা ছিল, সুতরাং তাছার ঠিক ঠিক শব্দ করিতে সমর্থ হইয়াছে। তখন স্থির করিলাম, এবার এমন একটি প্রশ্ন করিব, যাহার উত্তর জানিলার ইহাদের সম্ভাবনা নাই। জিজ্ঞাসা করিলাম—“কবি বায়রণ কত বৎসর বয়সে মরিয়াছিলেন? -- বিস্মিত হইয়া গণনা করিলাম, ঠিক ৩৬ বার শব্দ হইল । এখন, আমার সঙ্গীর যৎসামান্ত লেখাপড়া জানিত । বায়রণের নামও কখনও শ্রত হইয়াছে এমন বোধ হয় না । তাই মনে বিষম সংশয় উপস্থিত হইল। তবে এটা কি ইহাদের জুয়াচুরি নহে ? বাস্তবিকই আপনা আপনি শব্দ হইতেছে ? এই সংশয়ে পড়িয়া, এমন একটা সংখ্যা ঘটিত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলাম যাহার উত্তর আমি ভিন্ন অপর কেহই জানিত না সে সম্বন্ধে আমি একেবারেই সুনিশ্চিত ছিলাম । সে প্রশ্নেরও যথার্থ উত্তর পাইয়া আমার সকল সন্দেহ দূরে গেল ;–ভুতই হউক আর যেই হউক, কোনও একটা অজ্ঞাত শক্তি দ্বারা যে একাৰ্য্য সম্পন্ন হইতেছে-—ইহা যে আমার সঙ্গীগণের জুয়াচুরি নহে,—সে বিশ্বাস করিতে আমি বাধ্য ইচলাম । ইহাই আমার প্রথম দিনের ভূত নামানের ইতিহাস। তাহার পর হইতে এই সতেরো বৎসরে বহুস্থানে বহুবার ভূত নামাইয়াছি। সে সম্বন্ধে দুইচারি কথা বলিয়া প্রবন্ধের উপসংহার করিব । যাহারা কখনও ভূত নামায় নাই. তাহারা বসিলে ভূত নামিতে প্রথম দিন অনেক বিলম্ব হয়। কুড়ি, পচিশ মিনিট বা আধ ঘণ্টাও লাগিতে পারে। প্রথম দিন ভূত নামাইয়া, সেই সকল ব্যক্তি যদি আবার দ্বিতীয় দিন বসে, তবে অপেক্ষাকৃত অল্প সময়েই নামিবে। এইরূপে ক্রমে তাহারা যত অভ্যস্ত হইবে, সময় ততই সংক্ষেপ হুইয়া আসিবে। এক সময় আমরা একটি দল জুটিয়াছিলাম, দিনে