পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. دسوان তাহার নিজেরও এক্সিরে কতটা অজ্ঞতা ও ঔদাসীন্ত তাহাৰ কতকটা তাহার হৃদয়ঙ্গম হইল। দোলয়টি এই সময়ে -জনশূন্য। ইহা একেবারেই লগ্ন,—কোন যজ্ঞবেদী নাই, কোন মূৰ্ত্তি নাই ; এবং ইহা মস্জেদের আকারে গঠিত। হিন্দু দেবালয়ের সহিত কতটা তফাৎ— হিন্দু দেবালয়ে, রমণীরা কিংখাপের পরিচ্ছদে বিভূষিত পুত্তলিকার নিকট পিষ্টক ও ফুল লইয়া আইসে ;—সেই গণেশ—হস্তীমুণ্ড দেবতা, বিশাল নগ্ন লম্বোদরের উপর যাহার বাহুদ্বয় বিন্যস্ত এবং আমার পাণ্ডার কথায় যদি বিশ্বাস করিতে হয় গণেশের পিতার এক চপেটাঘাতে গণেশের নাসিকা গজগুণ্ডে পরিণত হয় । কিন্তু মন্দিরটি একেবারেই শূন্য নহে। আমি কতকগুলি লোকের কণ্ঠস্বর শুনিতে পাইলাম—যেন তাহারা গান করিতেছে। উহার কি মন্দিরের পুরোহিত ? না, কতকগুলি অল্পবয়স্ক বালক উবু হইয়া বসিয়া আছে,-- হাতে এফ তাড়া তালপত্র ; ঝুঁকিয়া ঝু কিয় দুলিয়া তুলিয়া তারস্বরে চীৎকার করিতেছে...উহারা পড়া শিখিতেছে । এষ্ট বেচারীরা, কৃষিকার্য্যে অশক্ত, দুৰ্ব্বল, খঞ্জ ও কুক্ত এবং উহাদের গুরু, জরাজীর্ণ বুদ্ধ, নিশ্চল ও নিশ্চিন্ত ভাবে এক কোণে বসিয়া আছে এবং বালকদিগের এই শোকস্থচক অবৃত্তি-সঙ্গীতের প্রতি একেবারেই বধির ও উদাসীন । আমি আদিবামাত্রই এষ্ট স্বতীব্র ঝিল্লি-সঙ্গীত বাড়িতে লাগিল এবং বাড়িতে বাড়িতে ক্রমে সপ্তমে চড়িল । “লম্বরদার” অভিজাত ব্যক্তির ন্যায় শিষ্টতাসহকারে আবার আমাকে হাতীর নিকট পৌছাষ্টয়া দিল । বিদেশী সাহেবের প্রস্থানকালে, প্রায় সমস্ত গ্রাম সেখানে উপস্থিত ; কীটবৎ নগ্ন শিশু, কাজি-পরা বালক ; পূৰ্ণবয়স্ক লোক— দ্বীর্ঘকায়, বলবান, গায়ের রং শাদা, নীল চোখ। তাহাদের মধ্যে একজন বৃদ্ধ ছিল, তাছার টক্‌টকে-লালরঙ্গের শ্মশ্র সে হাত দিয়া ঢাকিয়া আছে এষ্ট শ্মশ্র কাকূ-স্কুর মত প্যাচালো এবং তাঁহাতে এক পোচ মোম্রওগান লাগানে । আমার পাণ্ড বলিলেন,—“ইনি একজন সৌখীন লোক, ইনি দাড়ি রং করেন ; কারণ, রমণীরা এখন আর ইহঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করে না । এখন এইরূপ লাল, একমাস পরে ইহা চিক্‌চিকে কালো হইয়া দাড়াইবে।” উপস্থিত লোকেরা, আমাদের কথার মৰ্ম্ম বুঝিতে পারিয়া, খুব হাসিয়া প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । উঠিল এবং এই সময়ে আমাদের বুড়ো মদনটি হাত দিয়া ঢাকিল । - পাঠকের যদি অনুমতি হয়, আমি আমার হাতী ও আমার অনুগামীবৰ্গকে বিদায় দিয়া, এক্ষণে গ্রামের ঐতিহাসিক, আর্থিক ও সামাজিক বন্দোবস্তের डिडब প্রবেশ করিতে চেষ্টা করি । Q ইহা বলা বাহুল্য, --ভারতের সকল গ্রামই যমকসন্তানের ন্যায় একরূপ নহে। আমরা এখন পঞ্জাবের গ্রামে প্রবেশ করিয়াছি। মনে কর যদি আমরা বাঙ্গলা । কিংবা দাক্ষিণাত্যের কোন গ্রামে প্রবেশ করিতাম, তাহা হইলে আমরা কিরূপ ভাবে গ্রামের চিত্র তাকিতাম ? হয় ত অগত্যা দুষ্ট একটি নূতন রেখা যোগ করিয়া দিতে হইত, দুষ্ট একটি পুছিয়া ফেলিতে হইত, হয় ত গৃহনিৰ্ম্মাণের প্রকার ভেদের উল্লেখ করিতাম—চুনকাম-করা ছাদ কিংবা তাল-পাতার কথা বলিতাম ; কিন্তু তুলিকার এইরূপ দুই একটা পুনঃস্পর্শ থাকিলেও, মোটের উপর চিত্রের কোন পরিবর্তন লক্ষিত হইবে না । ইহাও কম আশ্চর্য্যের কথা নতে—ষে দেশের ভূমি, আব-হাওয়া ও জাতির মধ্যে এত বৈচিত্র্য, তাহার মধ্যে তবুও একটা আদর্শগত একতা— একটা অভিন্নতা বিদ্যমান ; r » গ্রাম-শব্দের ঠিক্ অর্থটি কি এক্ষণে তাহাই নির্ণয় করা যাউক ; সচরাচর যে অর্থে এই শব্দটি গৃহীত হয়, সেই অর্থ ধরিয়া ব্যাথ্যা করিতে গেলে, ভ্রমে পতিত হইবার বিলক্ষণ সম্ভাবনা আছে। আমরা যে দুর্গবদ্ধ পুঞ্জীকৃত সমষ্টির মধ্যে প্রবেশ করিলাম, সেই গ্রাম আমাদের চোখে, একটি পল্লী কিংবা কতকগুলি কুটার ভিন্ন আর কিছুই নহে। কিন্তু ভারতবর্ষে ইহার অর্থ আবও কিছু বেশী। আমরা যে গণ্ড-গ্রামটি দেখিতে গিয়াছিলাম উহ, বিভক্ত কিংবা অবিভক্ত একটি কৃষি-সম্পত্তির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং উহা ঐ সম্পত্তিরই অধিকারভুক্ত। গ্রামের ভূসম্পত্তি গ্রামের সহিত অনুবদ্ধ। একটিকে ছাড়িলে অপরটির অস্তিত্ত্ব থাকেনা—এমন কি কল্পনাও করা যায় না। স্বতরাং, গ্রামকে হস্তান্তর না করিলে, তৎসংলগ্ন ভূসম্পত্তিও হস্তান্তর করা যায় না ; ক্রয়বিক্রয়ের দ্বার, বর্তমান স্বত্ত্বাধিকারীগণকে অপসারিত করা যায় না ; উহার