পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

とb-や হাল-কেতার বেশভূষাদি ভালবাসে ; তাই তাঁহাদের মধ্য হইতে জহুরী ও শিল্পকারদের অনেক খদের জোটে, হালকা বালা ও বাজুবন্দ, সপাকৃতি গুরুভার পায়জোর, মুক্তাভূষিত নথ, কণ্ঠহার ; তাধা, সোন, হাড়, শাখা, হীরা ও কাচের অসংখ্য প্রকার অলঙ্কার,-- এই সমস্ত গলাইয়া আবার নূতন করিয়া গড়াইতে হয় । কাচের অলঙ্কার কপালের উল্কির সহিত সংযোজিত হওয়ায়, হিন্দু রমণীদিগকে রং-করা পুতুলের মত দেখিতে হয় । গ্রামের রাজমিস্ত্রী একজন টানা-পরা মজুর এবং আমরা পূৰ্ব্বেষ্ট বলিয়াছি, গ্রামের বাস্তুকলা নিতান্তই আদিম ধরণের। কিন্তু তাহাতেই গ্রামের কাজ চলিয়া যায়। যে প্রস্তরথোদক—সেই ভাস্কর ; যে ছুতার--সেই কাঠের কারিগর, কাঠ-খোদাইয়েরও কারিগর। এই সকল কারিগরের প্রতি আজকাল অত্যন্ত অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়, এবং ইংরাজ সরকার, ইহাদিগকে আশ্রয় ও উৎসাহ দিতে সমর্থও নহে--ইচ্ছুকও নহে । এ তালিকার মধ্যেই আর দুই একটা ব্যবসায়ের উল্লেখ করিতে আমি ভুলিয়াছি ---মন্দিরের নর্তকী “দেবদাসী”,—ইহার দেবতা ও ব্রাহ্মণের সেবায় নিযুক্ত ; দৈবজ্ঞ— ইহারা, ক্ষেত্ৰকৰ্ম্ম আরম্ভের শুভ দিন ও ক্ষণ জ্ঞাপন করিয়া থাকে ; তার পর, ওঝা–( এই সম্প্রদায়ের লোক জাপানেও অনেক ) ইহার ডাইন ধরিয়া দেয়। ইহাদের আবার কত শ্রেণীভেদ। অমরাবতী প্রদেশের ( বেরার ) কোন কোন গ্রামে, এক একজন বেতনভোগ “গাপাগারি” নিযুক্ত আছে ; মন্ত্র পড়িয়া শিল-পড়া নিবারণ তাহদের কাজ । অবশেষে সমাজ-সোপানের শেষ ধাপ !—ভূত্যগণ ; বাহুদেব কোন একটা ব্যবসায় আছে, সেই কারিগরদের সহিত ইহাদের পার্থক্য লক্ষ্য করা আবশ্যক । এই ভৃত্যশ্রেণীর মধ্যে ধর্তব্য :–বেতনভোগী কৃষক, কুলিমজুর, নাচ ঘৃণিত কাজের কৰ্ম্মী, নাপিত, ধোপা, ভিস্তী, মুচি, ঝাড়বার! নাপিতের মধ্যে দুই শ্রেণী আছে – মহিষের ক্ষৌরকম্মকার ও মামুষের ক্ষৌরকম্মকার। মানুষের যে ক্ষৌরকর্ষ্য করে সমাজে তাহার অনেক কাজ। বেশবিচাশের ভার তাহার উপর ; চুলের ছাট দেখিয়া কোন ব্যক্তির বর্ণের পরিচয় পাওয়া যায়। তাই ইহা একটা প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । গুরুতর কাজ । নাপিত ক্ষুরক্ষত ও শোনিতাক্ত মুণ্ড ধরিয়া গৃহের দ্বারদেশে, অঙ্গনে,- রাস্তায় গম্ভীরভাবে চুল ছাটিতে বসিয়াছে প্রায়ই দেখা যায়। এই নাপিতই চুল ছাটিতেছে, নখ কাটিতেছে, পায়ের কড়া অপনীত করিতেছে । তাহার ব্যবসায় ক্রমে অস্ত্রচিকিৎসায় পরিণত হইয়াছে ; তাহার নরুন, স্ফোটকভেদী ছুরিকা হইয়া দাড়াইয়াছে। নাপিতই গ্রামের সংবাদপত্র ; বিবাহে ঘটকালি করাও তাহার একটা অতিরিক্ত কাজ ; সে কি না কবে ? আর যত কাজ নিকৃষ্ট ও অস্পৃষ্ঠ বর্ণের হস্তে সমপিত হইয়াছে । চৰ্ম্ম স্পশ করা একটা ঘোরতর অশুচি কাজ : এই জন্তই মুচির ব্যবসায়, গদ্দভের সংস্রব থাকায় ধোপার ব্যবসায়, চৰ্ম্ম-মশকে জল বহন করে বলিয়া ভিস্তীর ব্যবসায়, ও ঝারুবদারের ব্যবসায় এত ঘৃণিত। উহারা গ্রামের উপকণ্ঠে কিংবা গ্রামের বাহিরে কোন একটা ঘেরের মধ্যে বাস করে । ভিস্তির মৃত পশুর পচা মাংস ও মরা ইদুর ক্ষভণ করে ; উহার ধৰ্ম্মনীতির কোন ধার ধারে না। ঝাড়,বদার পিপাসায় মরিবে, তবু কোন গ্রামবাসীর চৌকাঠ মাড়াইতে সাহস করিবে না। যতক্ষণ না গৃহস্থ দয়া করিয়া এক গওষ জল দিবে ততক্ষণ গৃহদ্বারে তাহাকে অপেক্ষা করিয়া থাকিতে হইবে । এই নিম্ন শ্রেণীর মধ্য হইতেই মজুর-কৃষকের ও কলকারখানার শ্রমজীবীদিগের আমদানি হয়। ইহারাষ্ট গ্রাম্যসমাজের দাস ;-ইহারাষ্ট শূদ্র । উহাদের আকৃতি প্রকৃতি দেখিয়া মনে হয়, উহারাই এদেশের আদিম নিবাসী লোক-উপনিবেশের পর উপনিবেশ আসিয়া উহাদিগকে পরাজিত করিয়াছে—দাসত্ত্বে পরিণত করিয়াছে। উহার কেবল ধৰ্ম্মানুষ্ঠান করিতে পায়, স্থানীয় দেবতাদের পুজা অৰ্চনা করিতে পায়। যে সকল নগর, কলকারখানার কেন্দ্র, তাহারই পাশ্ববৰ্ত্তী স্থানে উহাদের অবস্থা একটু ভাল। বড় বড় পাটের ও তুলার কলকারখানা,—উহাদিগকেই বেশী পছন্দ করে, উহাদিগকেই কৰ্ম্মে নিযুক্ত করে । হিন্দুসমাজের উপকণ্ঠে বাস করায়, জাতের বাহিরে থাকায়, উহারা সব কাজেই প্রবৃত্ত হইতে পারে—কেননা উহাদের কোন কুসংস্কার নাই, সঙ্কোচ নাই । এই দীর্ঘ তালিকার মধ্যে দুই তিনটা ব্যবসায় বাদ পড়িয়া গিয়াছে তাহা কি লক্ষ্য কর নাই ? যেমন পাঠশালার