পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা । ] ক্ষণকালের জন্তও ঢাকাঢাকি করিতে বাধ্য হইয়াছে সেজন্ত সে আজ মনে মনে যেন গোরকেই অপরাধী করিতে চেষ্ট্র করিতেছে। সার্কাসে যাওয়া লইয় গোরা ফাঁদ বিনয়ের সঙ্গে দুটো ঝগড়ার কথা বলিত তাহা হইলেও সেটাতে বন্ধুত্বের সামা রক্ষিত হইত এবং ক্লিনয় সাতৃন পাইভ--- কিন্তু গোরা যে গম্ভীর হইয়া মস্ত বিচারক সাজিয়া মোেনর দ্বারা বিনয়কে অবজ্ঞা করিবে ইহাতে ললিতার কথার র্কট তাহাকে পুনঃপুনঃ বিধিতে লাগিল। . এমন সময় মহিম হু কা হাতে ঘধের মধ্যে প্রদেশ করিলেন। ডিবা হইতে ভিজ হ্যাকড়ার আবরণ তুলিয় একটা পান বিনয়ের হাতে দিয়া কহিলেন—“বাবা বিনয়, এদিকে ত সমস্ত ঠিক—এখন তোমার খুড়োমশায়ের কাছ থেকে একথান চিঠি পেলেই যে নিশ্চিন্ত হওয়া 寺jびや তুমি চিঠি লিখেছ ত ?” এই বিবাহের তাগিদ আজ বিনয়কে অত্যন্ত থারাপ লাগিল, অথচ সে জানিত মহিমের কোনো দোষ নাই--- তাহাকে কথা দেওয়া হইয়াছে । কিন্তু এই কথা দেওয়ার মধ্যে সে একটা দীনতা অনুভব করিল। আনন্দময়ী ত তাহাকে এক প্রকার বারণ করিয়াছিলেন—তাহার নিজেরও ত এ, বিবাহের প্রতি কোনো আকর্ষণ ছিলনা--তবে গোলেমালে ক্ষণকালের মধ্যেই এ কথাটা পাকিয়া উঠিল কি করিয়া ? গোরা যে ঠিক তাড়া লাগাষ্টয়াছিল তাহ ত বলা যায় না। বিনয় যদি একটু মনের সঙ্গে আপত্তি করিত তাহা হইলেও যে গোরা পীড়াপীড়ি করিত তাহা নহে কিন্তু তবু ! সেই তবুটুকুর উপরেই ললিতার খোচ আসিয়া বিধিতে লাগিল । সেদিনকার কোনো বিশেষ ঘটনা নহে কিন্তু অনেকদিনের প্রভুত্ব ইহার পশ্চাতে আছে। বিনয় নিত্ত্বাস্তই কেবল ভাল বাসিয়া এবং একান্তই ভালমামুষি বশত গোরার আধিপত্য অনায়াসে সহ করিতে অভ্যস্ত হইয়াছে। সেই জন্তই এই প্রভুত্বর সম্বন্ধই বন্ধুত্বর মাথার উপর চড়িয়া বসিয়াছে। এতদিন বিনয় ইহা অনুভব করে নাট কিন্তু আর ত ইহাকে অস্বীকার করিয়া চলে না। তবে শশিমুখীকে কি বিবাহ করিতেই হইবে! বিনয় কছিল—“না খুড়ে মশায়কে এখনো চিঠি লেখা হয় নি।” o 酸 গোরা । టనన মহিম কছিলেন–“ওটা আমারই ভুল হয়েছে। এ চিঠি ত তোমার লেখবার কথা নয় ও আমিই লিখিব । । তাব পুরো নামটা কি বলত বাবা।” পিনা কহিল “ আপনি ব্যস্ত হচ্চেন কেন ? আশ্বিন কান্তিকে ত বিবাহ হতে পারবেন। এক অস্থান মাস{কগু ৩{হতেও গোল স্থাছে । আমাদের পরিবারের ইতিহাসে বহুপূৰ্ব্বে অম্লান মাসে কবে কার কি দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেই অবধি আমাদের বংশে আঘানে বিবাহূ প্রভৃতি সমস্ত শুভকৰ্ম্ম বন্ধ আছে । পৌধমাসকে ত তাড়া দিয়ে আগিয়ে আনতে পাববেন না।” মহিম ই কোট ঘরেব কোণের দেয়ালে ঠেস দিয়া রাখিয়া কহিলেন—“বিনয়, তোমরা যদি এ সমস্ত মানবে তবে লেখা পড়া শেখাটা কি কেবল পড়া মুখস্থ করে মরা ? একে ত পোড়া দেশে শুভ দিন খুঁজেই পাওয়া যায় না তার পরে আবার ঘরে ঘরে প্রাঙ্গভেট্ পাজ খুলে বস্লে কাজকৰ্ম্ম চলবে কি করে ?” বিনয় কহিল “আপনি ভদ্র আশ্বিন মাসই বাশানেন কেন ?" মহিম কহিলেন---“আমি মানি বুঝি ! কোনো কালেই না। কি করব বাবা -এমূলুকে ভগবানকে না মানলেও বেশ চলে যায় কিন্তু ভাদ্র আশ্বিন বৃহস্পতি শনি তিথি নক্ষত্র না মানলে যে কোনো মতে ধরে টিকৃতে দেয় না। আবার তাও বলি–মানিনে বলচি বটে কিন্তু কাজ করবার বেলা দিনক্ষণের অন্যথা হলেই মনটা অপ্রসন্ন হয়ে ওঠে— দেশের হাওয়ায় যেমন ম্যালেরিয়া হয় তেমনি ভয়ও হয় ওটা কাটিয়ে উঠতে পারলুম না ।” বিনয় । আমাদের বংশে আঘানের ভয়টাও কাটবেন। অন্তত খুড়িমা কিছুতেই রাজি হবেন না । এমনি করিয়া সেদিনকার মত বিনয় কোনোমতে কথাটা চাপা দিয়া রাখিল । বিনয়ের কথার সুর শুনিয়া গোরা বুঝিল বিনয়ের মনে একটা দ্বিপা উপস্থিত ভষ্টয়াছে। কিছুদিন হইতে বিনয়ের । দেখাষ্ট পাওয়া যাইতেছিল না । গোরা বুঝিয়াছিল বিনয় · পরেশ বাবুর বাড়ি পূৰ্ব্বের চেয়েও আরো ঘন ঘন যাতায়াত আরম্ভ করিয়াছে। তাহার পরে আজ এই বিবাহের প্রস্তাবে পাশ কাটাঠবার চেষ্টায় গোরার মনে খটুকী বাধিল ।