পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"> e হইবে ?—ন, দশ ভায়ের মধ্যে তাহার বণ্টন হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে ? আমার মনে হয়—ইহাই এ ক্ষেত্রে প্রধান সমস্ত । দশজনে ভাগ নিলে, অবশ্য এ বিষের তিক্ততায় কিছুক্ষণ সকলেরি কিছু কষ্ট পাইতে ইষ্টবে; কিন্তু, একার পক্ষে তাঁহা-মৃত্যুঞ্জয় নীলকণ্ঠ-পদবী-লাভের উপায় হইলেও- মৃত্যুর কারণ ! দুষ্ট দলের মতানৈক্যতেই কংগ্রেসের আজ অবসান হইয়াছে। এই দুষ্ট দলের বিবাদের মূল কোথায় এবং কিসে, ইহাত প্রথমে বিবেচনা করিয়া দেখিতে হইবে। দুই দলষ্ট স্বাধীনতা-প্রয়াসী। নহেন কি ?—নিশ্চয় ! মুখে অন্য ভাব প্রকাশ করিলেও, মানুষ কখনো শুঙ্খলিত হইয়া থাকিতে চাহে না,--ইহা চিরদিনের অকাটা সত্য। সামান্ত যে পার্থী—-রৌদ্রে, শীতে, বর্ষায় আহারের অন্বেষণ করিয়া বনে বনে ফেরে তাহাকেও যদি সোনার শিকলে বাধিয়া, অসীম যত্নে আহার করাও, এবং হৃদয়ের ধন ভাবিয়া, সাদরে সাধের বুলি পড়িতে শিখাও,—তবু, তাহার মনে সে সুখ আর থাকিবে না ! বনে বনে না থাইয়া মরুক,--- অসংখ্য দুঃথ, বিমুক্ত বিশ্বের অপ্রতিহত অত্যাচার সে সেখানে সানন্দেই বহন করিতে প্রস্তুত ; কিন্তু তবু—এ সম্ভোগ সে চাহে না । মুক্ত বায়ুষ্ট তাঙ্গর প্রাণ, কাননেই তাহার আনন্দ, অনন্তপ্রসারিত নীলাম্বরেই তাহার জীবনের চরম সার্থকতা ! তবে, এই দুষ্ট সম্প্রদায়ে পার্থক্য কোথায় ? পার্থক্য – মূল লক্ষ্যলাভের উপায়-ভেদে । এক দলের কৰ্ম্ম-প্রণালীর লক্ষ্য—সম্ভবের বা যুক্তি-নিয়ন্ত্রিত, সুলভ প্রত্যক্ষের লাভাকাঙ্ক্ষাপ্রণোদিত, ধীর-সাধনায় ; অপর দলের লক্ষ্য --চরমাদশের ভাবোন্মেষে, তন্ময় মত্ততায় । প্রথম পক্ষ— ক্রমোন্নতি-প্রয়াসী, শান্তিবাদী; দ্বিতীয় পক্ষ-চরমোন্নতিকামী, বিপ্লব-বাদী। এই দুই দলের বিবাদের দরুণেই এই অনর্থ ঘটিল। কিন্তু, এস্থলে কথা উঠিতে পারে—“আত্ম-কলহ তো কোন দলেরই লক্ষ্য নহে ! তবে উপস্থিত ক্ষেত্রে এরূপ ভৌতিক কাও কেন হইল ?” এ কথার প্রত্যুত্তর দিতে হইলেই তো একটু ঘনাইয়া দেখিতে হইবে। ইহার প্রকৃত কারণ—“নরম-পন্থী”র ধ্রুব, প্রত্যক্ষ বা প্রবাসী । [१अ छांश দৃশ্যমানের অস্তিত্বকে স্বীকার করিয়া চলিতে চাহেন ; অর্থাৎ, ইংরাজ-রাজের অস্তিত্বকে স্বীকার করিয়া “শনৈঃ পন্থ, শনৈঃ পন্থা” অগ্রসর হইতে চাহেন। আর, “গরম-পন্থী”রা ইংরাজের ব্যবধানকে গ্রাহ করিতেই প্রস্তুত নহেন, তাহারা সাধারণতঃ কৰ্ম্ম-প্রাণ চিস্তাকে তাহদের চিত্তে স্থান না দিয়া, ভাবকেই জাগ্রত রাথিতে উদ্বিগ্ন । ” t এই জগষ্ট, “ধীর-সাধুক” “নরমপন্থী"র যে জাতীয় সম্মিলনের প্রতিষ্ঠা করিয়া, এতদিন চালাইয়া আসিতেছিলেন,—“গরমদলে’র অদম্য ভাব-প্রবণতায় তাহা এক এক নিশ্বাসে উড়িয়া গেল ! অর্থাৎ, “নরমদল” বা কৰ্ম্মেচ্ছ সম্প্রদায় “গরমদলে”র চরম লক্ষ্যলাভের আশু কোন পন্থা আবিষ্কার করিতে না পারায়, এবং তাহীদের কল্পনার বায়ু-গতির সহিত সমভাবে কৰ্ম্মক্ষেত্রে চলিতে অশক্ত হওয়ায়, মিলনক্ষেত্রে এই নিদারুণ বিবাদ সুচিত হইল ও কংগ্রেস ভাঙিয়া গেল । “গরমদল"কে আমি নিন্দা করিতেছি না বা তাহাদের কার্য্যকারিতার অপ্রশংসাও করিতেছি না। র্তাহীদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাহাদের উপরে ব্যক্তিগতভাবে আমার এবং সমগ্র দেশের প্রগাঢ় শ্রদ্ধা । আমি শুদ্ধ এই সম্প্রদায় সম্বন্ধে এইটুকু বলিতে চাহি যে, কঁহার কৰ্ম্মী বা সংগঠক নহেন, তাহারা ভাবুক ও ধ্বংশক । র্তাহীদের কার্য্যকারিতার স্থায়ী বিকাশ-আভ্যন্তরীণ ভাবেদীপনে, এবং অস্থায়ী বাহ্যিক বিকাশ —ধ্বংশ বা বিলোপসাধনে। নিজেদের সম্বন্ধে এই নিত্য-সত্য কথাটি মনে রাখিয় তাহার। যদি জননীর ঐকান্তিক সেবায় নিযুক্ত হন তবে আর কাহারো সাধ্য নাই যে, তাহাদের সে বলদপিত গতিরোধ করে । কিন্তু র্তাহীদের উচিত – সম্প্রতি ধ্বংশ-বৃত্তি অন্তরতলে সংরুদ্ধ রাখিয়া, বিধিবাদী কন্মিগণের পরামর্শ ও প্ররোচনানুসারে ভাবোন্মেষেই শক্তি নিয়োজিত করা। ভাব-স্ফুরণ ব্যতীত তাহারা অদ্যাপি প্রত্যক্ষ কোন কৰ্ম্মানুষ্ঠানে সাফল্যলাভ করেন নাই। অতএব, যে পৰ্য্যন্ত ন স্থায়ী কোন কল্যাণকৰ্ম্ম করিয়া, তাহার দেশের জনসাধারণের চিত্তে প্রতিষ্ঠাভাজন হইতেছেন, ততদিন যাহা আছে তাহারো যেন নিধন-কার্য্যে লিপ্ত না হন। সেরূপ হইলে-দেশের ক্ষতি, তাহাদের দুরপৰেয় অপযশ ; এবং