পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిసెly е ততই ধনুকাকারে বাকিয়া মাটিতে মাথা গুজিতে আরম্ভ করে । বৃক্ষপত্রের নামিয়া পড়া ব্যাপারটাও ঐ প্রকারে হইয় থাকে। যে সকল গাছের পাতা সন্ধ্যাকালে বুজিয়া আসে, তাহাদের প্রত্যেক ক্ষুদ্র পাতার মূলের উপরকার ও নীচেকার পিঠ উদাহৃত লাউ গাছের ডগার দ্যায় অসম উত্তেজনশীল থাকে। এজন্ত যখন স্বৰ্য্যালোক পত্রমূলের উপরকার পিঠে পড়ে, তখন তাহাকে উত্তেজিত করিতে পারে না, কিন্তু সেই আলোকের উত্তেজনাই যখন ধীরে ধীরে প্রবাহিত হইয়া নীচের পিঠে পৌছায়, তখন তাহাতেই নীচের পিঠ অত্যন্ত উত্তেজিত হইয়া সঙ্কুচিত হইয়া পড়ে। আমরা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি, কোন জিনিসের কেবল এক পিঠ সঙ্কুচিত হইয় পড়িলে, সেটির ধনুকাকারে বাকিয়া যাওয়ারই সম্ভাবনা । এখানেও অবিকল তাঁহাই হয়। পত্রমূল ধনুকাকারে বাকিয়া পাতা সমেত নীচে নামিয়া পড়ে । আমরা প্রত্যক্ষ পরীক্ষায় দেখিয়াছি, বেলাবৃদ্ধির সহিত পাতার নিমীলনও বৃদ্ধি পায়। আচার্য বসু মহাশয় ইহারে প্রকৃত কারণ নির্দেশ করিয়াছেন। এই সম্বন্ধে তিনি বলিয়াছেন,–অলোক প্রথমে পত্রমূলের উপরকার পিঠেই পড়ে। কিন্তু এপিঠটা তত উত্তেজনাশীল নয়, কাজেই আলোক পড়িবা মাত্র উত্তেজনার কার্য্য দেখা যায় না । কাল ক্রমে আলোকের উত্তেজনা উপর হইতে নীচের পিঠে পরিবাহিত হইয়া আসিলে পর তাহারি সঙ্কোচ দ্বারা উত্তেজনার কাৰ্য্য প্রকাশ পায়। আলোক পড়িবা মাত্র পরিবাহিত হইয়া, নীচে আসে না। বৃক্ষ বিশেষে এবং বৃক্ষের অঙ্গের অবস্থা বিশেষে পরিবাহনকালের হ্রাস বৃদ্ধি হয়। সুতরাং আমরা যে গাছের পাতাগুলিকে ধীরে ধীরে নামিয়া যাইতে দেখিব, তাহাতে আর আশ্চৰ্য্য কি ? আচাৰ্য্য বস্থ মহাশয়ের পূৰ্ব্বোক্ত ব্যাখ্যান হইতে বেশ বুঝা যায়, সন্ধ্যায় আলোকের তেজ কমিয়া আসায় বৃক্ষপত্র স্বযুপ্ত হয় না। সমস্তদিনের আলোকের উত্তেজনা পত্রমূলের (pulvinus ) উপরপিঠ হইতে নীচের পিঠে আসিয়া, সন্ধ্যাকালেই ঐ পিঠের সঙ্কোচের মাত্রা খুব বাড়াইয়া তুলে বলিয়, আমরা ঐ নির্দিষ্ট সময়ে পাতাগুলিকে সুপ্ত হইতে দেখি । রাত্রিতে আর আলোকের উত্তেজনা থাকে প্রবাসী । [१भ छांभं । না। সঙ্কুচিত পত্রমূলের বিকৃত অণুসকল প্রকৃতিস্থ হইবার বেশ সুযোগ পাইয়া যায়। আণবিক বিকার কাটা গেলেই পত্রমূলও সঙ্কোচ ত্যাগ করিয়া আবার সোজা হইয় দাড়াইবার সুযোগ পায়। এজন্ত স্বৰ্য্যালোক বিরহিত রাত্রিই বৃক্ষপত্রের জাগরণ আনিয়া দেয়। আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, প্রভাত-স্বর্যের আলোকেই বৃক্ষের পাতা খুলিয়া দেয় বলিয়া যে একটা কথা আছে তাহ ভুল। পরীক্ষা করিলে কতক গাছের পাতাকে মধ্যরাত্রেই উন্মীলিত হইতে দেখা যায়, আবার কতকগুলিকে রাত্রিশেষে বা প্রভাতেও খুলিতে দেখা গিয়া থাকে। আচাৰ্য বস্তু মহাশয় এই উন্মীলন কাল লইয়াও গবেষণা করিয়াছেন। ইহার ফলে জানা গেছে, সমস্ত দিন ব্যাপিয়া অলোকের যে উত্তেজনাটা বৃক্ষদেহে পতিত হয়, তাহার সকলি পাতাগুলিকে নামাইতে ব্যয়িত হয় না। উহার কতক অংশ উদ্ভিদ দেহে সঞ্চিত হইয়া থাকে, এবং ইহাই শেষে নীচু ও বিকৃত পাতাগুলিকে শীঘ্র শীঘ্র সুস্থ করিয়া উচু করাইবার জন্য ব্যয়িত হয়। সুতরাং বাহিরের আলোকের উত্তেজনাকে অন্তর্নিহিত করিবার শক্তি যে সকল গাছের প্রবল, তাহারাই যে সেই সঞ্চিত শক্তির সাহায্যে নিম্নমুখী পাতাগুলিকে শীঘ্র শীঘ্ৰ সোজা করিয়া তুলিবে, তাহা আমরা বেশ বুঝিতে পারি। শক্তি সঞ্চয় করিবার ক্ষমতা সকল গাছের সমান নয়, কাজেই স্বযুপ্তির কালও সকল গাছে সমান দেখা যায় না । যে গাছ যত অধিক শক্তি সঞ্চয় করিয়া রাখিতে পারিবে, আলোকের উত্তেজনাকে সে তত শীঘ্র পরাভব করিয়া জাগরিত হইয় পড়িবে। পূৰ্ব্বোক্ত কথাগুলি হৃদয়ঙ্গম করিলে, পাঠক স্পষ্টই বুঝিতে পরিবেন, আচার্য্য বসু মহাশয় লজ্জাবতীর পাতার উঠানাম, বনচাঁড়াল গাছের পাতার নৃত্য এবং উদ্ভিদের নিদ্রা প্রভৃতি যে, একই ব্যাপার বলিয়া স্থির করিয়াছেন, তাহ সম্পূর্ণ সত্য। লজ্জাবতী লতাকে স্পর্শ করিব মাত্র, তাহার পত্রমূলের উত্তেজনায় পাতাগুলি যেমন বুজিয়া যায়, এবং উত্তেজনার ধাক্কা সাম্‌লাইয়া লইলে সেগুলি যেমন কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবার মাথা উচু করিয়া দাড়ায়, উদ্ভিদের নিদ্রা ব্যাপারটাও অবিকল তাই। পার্থক্যের মধ্যে এই যে, লজ্জাবতী ও বনগড়াল প্রভৃতি গাছের পাতার উঠানাম