পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম সংখ্যা । ] খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়, কিন্তু নিদ্রাজাগরণ শেষ হইতে চব্বিশ ঘণ্টা সময় লাগে। আমরা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি, মেঘাচ্ছন্ন দিনে যখন আলোকের উত্তেজনার লেশমাত্র নাই, তখনো গাছের পাতা ঠিক সন্ধ্যার সময় সম্পূর্ণ মুদিত হইয় পড়ে। ইহার কারণ সম্বন্ধে আচাৰ্য্য বহু মহাশয় কি বলেন, এখন মালোচনা করা যাউক । বস্তু মহাশয় সম্পূর্ণ অন্ধকার ঘরে লজ্জাবতী লতা আবদ্ধ রাখিয়া পরীক্ষা করিয়াছিলেন। বলা বাহুল্য ঘরে অণুমাত্র আলোকের অস্তিত্ব ছিল না। তথাপি লতাটি যেন অভ্যাসের বসে ঠিক সন্ধ্যার সময় পাতা গুটাইয়া ঘুমাইয়া পড়িয়াছিল, এবং তারপর যথাসময়ে পাতা খুলিয়। জাগিয়া উঠিয়াছিল। আচাৰ্য্য বস্থ মহাশয় সত্যই অভ্যাসের বসে ঐ ব্যাপারটি সংঘটিত হয় বলিয়া ব্যাখ্যান দিয়াছেন। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হইবার সম্ভাবনা । মনে করা যাউক একখণ্ড তারের দুই প্রান্ত খুব দৃঢ়ভাবে ধরিয়া, তাহাকে বামে ও দক্ষিণে কিছুক্ষণ ধরিয়া ঘন ঘন মোচড় দেওয়া গেল। প্রথমকার দু’চার মোচড়ে একটু বলপ্রয়োগের আবশ্রাক হইবে। কারণ প্রথম অবস্থাতেই তারের অসাড় অণুগুলি এপ্রকার মোচড়ে অভ্যস্ত হইতে পারে না, কাজেই ঐ নাড়াচাড়া সড়গড় করিয়া লইতে কিছুকাল অতিবাহিত হইয়া যাইবে অণুগুলি বেশ সচল হইয়া দাড়াইলে, যদি মোচড় দেওয়া বন্ধ করিয়া তারটিকে ছাড়িয়া দেওয়া যায়, তবে দেখা যাইবে সেটি তখনো আপন আপনিই বামে দক্ষিণে মোচড় খাইতেছে। এই ব্যাপারের কারণ অনুসন্ধান করিলে জানা যায়, বলপ্রয়োগে জোর করিয়া অণুগুলিতে আন্দোলন সুরু করিলে, তাহার কিয়দংশ সমবেত অণুতে মুদ্রিত হইয়৷ গুপ্তাবস্থায় থাকে ; এবং তার পর বলের প্রয়োগ রহিত করিব মাত্র, সেই গুপ্ত শক্তিই বিকাশ প্রাপ্ত হইয়া, অণুগুলিকে অবিকল পূৰ্ব্বের স্তায় নাড়া দিতে আরম্ভ করে। আলোকের উত্তেজনা সম্পূর্ণ রহিত হইলেও যে, গাছের পাতার নিদ্রা ও জাগরণ দেখা যায়, জড়ের পূৰ্ব্বোক্ত ধৰ্ম্মটি অবলম্বন কক্রিয়া আচাৰ্য্য বস্তু মহাশয় তাহার ব্যাখ্যান ইনি বলিতেছেন, গাছের পাতাগুলি প্রায় á উঠানামা করিয়া, পত্রমূলের অণুগুলির অবস্থা जूषांब्र वञ्चशांझ । ঠিক উদাহৃততারের অণুর মত করিয়াতুল কাজেই মোছ లిపివ দিনে বা অন্ধকার ঘরে যখন আলোকের উত্তেজনা মোটেই থাকে না, তখনে পূর্বের সেই অভ্যাস বশতঃ অণুগুলি আন্দোলিত হইয়া গাছের পাতাগুলিকে ঠিক পূর্কের স্কার উঠাইতে ও নামাইতে আরম্ভ করে f শ্ৰীজগদানন্দ রায় । লুথার বরব্যাঙ্ক । ১৩১২ সালের জ্যৈষ্ঠের “প্রবাসী"তে “বৈজ্ঞানিক যাদুকর” শীর্ষক প্রবন্ধে যে অদ্ভুতকৰ্ম্ম পুরুষশ্ৰেষ্ঠের বিস্ময়জনক কাৰ্য্যকলাপের আভাস প্রদত্ত হইয়াছে, সংক্ষেপে র্তাহার জীবন কাহিনী বিবৃত করা এ প্রবন্ধের উদ্দেশু। যে মতিমান মানব সাৰ্দ্ধদ্বিসহস্রের অধিক উদ্ভিদের সংস্কার সাধন করিয়াছেন এবং বহুবিধ নূতন উদ্ভিদের স্বষ্টি বিধান করিয়াছেন, যিনি অনেক অর্থাদ্য ও অনিষ্টকর ফলাদিকে সুস্বাছ ও পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্যে পরিণত করিয়া জগতের খাদ্যভাণ্ডারের উন্নতি সাধন করিয়াছেন, যিনি নানা প্রকার নূতন পুষ্পের স্বষ্টি করিয়া ও অনেক পুরাতন পুষ্পের শ্ৰীবৃদ্ধি করিয়া জগতের সৌন্দর্য্যের উৎকর্ষ বিধান করিয়াছেন, তাহার জীবনী হইতে আমাদের অনেক শিক্ষা লাভ হইতে পারে। এই মহাপুরুষের নাম লুথার বরব্যাঙ্ক । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বরব্যাঙ্কের ভাগ্যে ঘটে নাই । তিনি সামান্ত স্কুলের শিক্ষা মাত্র লাভ করিয়া বহু অধ্যয়ন ও পৰ্য্যবেক্ষণ দ্বারা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গুঢ়তত্ব সকল আয়ত্ত করিয়া জগতে সন্মানাহঁ হইয়াছেন । দারিদ্র্যজনিত শারীরিক কষ্ট এবং লোকের অযথা বিক্ৰপু সহ করিয়াও অধ্যবসায়বলে তিনি আজ কৃতী ও যশস্বী হইয়াছেন। তিনি যে কাৰ্য্যে ব্রত ' হইয়াছেন, ইচ্ছা করিলে তাহ হইতে প্রভুত ধন সঞ্চয় করিতে পারিতেন ; কিন্তু তিনি বরাবর সংযতচিত্ত থাকিয়া পৃথিবীর উপকার সাধনাৰ্থ আত্মোৎসর্গ করিয়া আসিতেছেন। লুথার বরব্যাঙ্ক খৃষ্টীয় ১৮৪৯ সালের ৭ই মার্চ আমেরিকার যুক্তপ্রদেশের মাসাচুসেট্স বিভাগের ল্যাংকাষ্টার নগরে জন্ম পরিগ্রহ করেন । র্তাহার পিতা জাতিতে ইংরাজ এবং মাতা স্কচ ছিলেন। তিনি পিতা হইতে সাতিশয় অধ্যয়নপূহ এবং