পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম সংখ্যা । ] যে তুমি কিছুই মানক্ষে না বলে গলায় এক গাছ স্বতে গোরা । কৃষ্ণদয়াল। সে ত জানি। ত, তোমার গোরাকে لأوان " পরিয়ে দিলে তাতে কারো কিছু আসে যায় না। কিন্তু শুধু নিয়ে তুমি থাক, আমি ত কখনো তাতে কোনো বাধা । ত স্থতো নয়—এখন ওকে ঠেকাবে কোথায় ? কৃষ্ণদয়াল। বেশ! সব দোষ বুঝি আমার ! গোড়ায় তুমি যে ভুল করলে- তুমি যে ওকে কোনোমতেই ছাড়তে চাইলে না। তখন আমিও গোয়ার গোছের ছিলুম—-ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম কোনো কিছুর ত জ্ঞান ছিল না। এখন হলে কি এমন কাজ করতে পারতুম ! আনন্দময়ী। কিন্তু যাই বল, আমি যে কিছু অধৰ্ম্ম করেছি সে আমি কোনোমতে মানতে পারব না । তোমার ত মনে আছে ছেলে হবার জন্তে আমি কি না করেছি—যে যা বলেছে তাই শুনেছি—কত মাদুলি কত মস্তর নিয়েছি সে ত তুমি জানই। একদিন স্বপ্নে দেখলুম যেন সাজি ভরে টগর ফুল নিয়ে এসে ঠাকুরের পূজো করতে বসেচি—এক সময় চেয়ে দেখি সাজিতে ফুল নেই, ফুলের মত ধবধবে একটি ছোট্ট ছেলে ; আহ সে কি দেখেছিলুম সে কি বলব, আমার দুই চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল-তাকে তাড়াতাড়ি কোলে তুলে নিতে যাব আর ঘুম ভেঙে গেল। তার দশ দিন না যেতেই ত গোরাকে পেলুম—সে আমার "ঠাকুরের দান—সে কি আর কারো যে আমি কাউকে ফিরিয়ে দেব ! আর জন্মে তাকে গর্ভে ধারণ করে বোধ হয় অনেক কষ্ট পেয়েছিলুম তাই আজ সে আমাকে মা বলতে এসেচে। চারিদিকে তখন মারামারি কাটাকাটি, নিজের প্রাণের ভয়েই মরি—সেই সময়ে রাত দুপুরে সে যখন আমাদের বাড়িতে এসে লুকোলো তুমি ত তাকে ভয়ে-ভয়ে বাড়িতে রাখতেই চাও না—আমি তোমাকে ভাড়িয়ে তাকে গোয়াল ঘরে লুকিয়ে রাখলুম। সেই রাত্রেই ছেলেটি প্রসব করে সে ত মারা গেল। সেই বাপ-ম-মরা ছেলেকে আমি যদি না বঁাচাতুম ত সে কি বাছত ! তোমার কি ! তুমি ত পাদ্রির হাতে ওকে দিতে চেয়েছিলে। কেন ! পাদ্রিকে দিতে যাব কেন ? পাদ্রি কি ওর মা বাপ, ন, ওব প্রাণরক্ষা করেচে ? এমন করে যে ছেয়ে পেয়েছি সে কি গর্ভে পাওয়ার চেয়ে কম! তুমিশাই বল, ঐ ছেলে যিনি আমাকে দিয়েচেন তিনি স্বয়ং যদি না নেন তবে প্রাণ গেলেও ক্ষুর কাউকে নিতে দিচ্চিনে । - দিইনি। কিন্তু ওকে ছেলে বলে পরিচয় দিয়ে তার পরে ওর পৈতে না দিলে ত সমাজে মানবে না। তাই পৈতে কাজেই দিতে হল। এখন কেবল দুটি কথা ভাববার আছে । হায়ত আমার বিষয় সম্পত্তি সমস্ত মহিমেরই প্রাপ্য--তাই--- আনন্দময়ী। কে তোমার বিষয় সম্পত্তির অংশ নিতে চায়! তুমি যত টাকা করেচ সব তুমি মহিমকে দিয়ে যেয়ে --গোরা তার এক পয়সাও নেবে না। ও পুরুষ মানুষ, লেখাপড়া শিখেচে, নিজে থেটে উপার্জন করে থাবে—ও পরের ধনে ভাগ বসাতে যাবে কেন! ও বেঁচে থাক্ সেই আমার ঢের--- অামার আর কোনো সম্পত্তির দরকার নেই। কৃষ্ণদয়াল । না, ওকে একেবারে বঞ্চিত করব না । জায়গিরট ওকেই দিয়ে দেব-কালে তার মুনফ বছরে হাজার টাকা হতে পারবে। এখন ভাবনার কথা হচ্চে ওর বিবাহ দেওয়া নিয়ে। পূৰ্ব্বে যা করেচি তা করেচি– কিন্তু এখন ত হিন্দুমতে ব্রাহ্মণের ঘরে ওর বিয়ে দিতে পারব ন—ত। এতে তুমি রাগই কর আর যাই কর । আনন্দময়ী। হায় হায়! তুমি মনে কর তোমার মত পৃথিবীময় গঙ্গাজল, আর গোবর ছিটিয়ে বেড়াইনে বলে আমার ধৰ্ম্মজ্ঞান নেই। ব্রাহ্মণের ঘরে ওর বিয়েই বা দেব কেন, আর রাগ করবই বা কি জন্তে ? কৃষ্ণদয়াল। বল কি ! তুমি যে বামুনের মেয়ে। আনন্দময়ী। তা হইনা বামুনের মেয়ে ! বাম্নাই করা ত আমি ছেড়েই দিয়েছি। ঐ ত মহিমের বিয়ের সময় আমার খ্ৰীষ্টানী চাল বলে কুটুম্বর গোল করতে চেয়েছিলুআমি তাই ইচ্ছে করেই তফাৎ হয়ে ছিলুম, কথাটি কইনি। পৃথিবীমৃদ্ধ লোক আমাকে খ্ৰীষ্টান বলে, আরো কত কি কথা কয়—আমি সমস্ত মেনে নিয়েই বলি-ত খ্ৰীষ্টান কি মানুষ নয়! তোমরাই যদি এত উচু জাত আর ভগবানের এত অাদরের তবে তিনি একবার পাঠানের একবার মোগলের একবার খ্ৰীষ্টানের পায়ে এমন করে তোমাদের মাথা মুড়িয়ে দিচ্চেন কেন ? : কৃষ্ণদয়াল। ও সব অনেক কথা, তুমি মেয়ে মানুষ