পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা । ] পূৰ্ব্বেই, উড়িষ্যাধিপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। তখন তুঘানকে সিংহাসনচ্যুত করিয়া, স্বয়ং বাদশাহী করিবার আশায়, তৈমুর খাঁ দুর্গাববোধ করেন। তুঘান পরাভূত হইয়া পলায়ন করায়, তৈমুর র্থ সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। কিন্তু দুই বৎসরের মধ্যেই তৈমুর খাঁর মৃত্যু সংঘটিত হয়। তাহার পর দ্বাদশবর্ষব্যাপী গৃহকলহে গৌড়রাজ্য বিপৰ্য্যস্ত হইয়াছিল। মঘিস্থদ্দীন সুলতান হইয়াছিলেন। তিনি আসাম জয় করিতে গিয়া, কামরূপে পঞ্চস্ত্ৰলাভ করিলেন। ইজুদ্দীন বলবন সিংহাসনে আরোহণ করিলে, আবার নূতন বিপ্লব উপস্থিত হইল। তখন পর্যন্ত লক্ষ্মণ সেনের বংশধরগণ পূৰ্ব্ববঙ্গের স্বাধীনতা রক্ষা করিতেছিলেন। বলবন পূর্ববঙ্গ আক্রমণ করিতে প্রবৃত্ত হইলে, আরসালান খ গৌড়নগর আক্রমণ করিয়াছিলেন। ১২৬৫ হইতে ১২৮৬ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত এইরূপে গৌড়নগর নানা বিপ্লবে বিপর্য্যস্ত হয়। অবশেষে দিল্লীশ্বরের পুত্র নসিরুদ্দীন বোঘরা খা গৌড়ের সিংহাসনে আরোহণ করেন । তিনি ১২৯১ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত রাজ্যশাসন করিয়া • পরলোক গমন করিলে, তাহার পুত্র রুকমুদ্দীন সিংহাসনে আরোহণ করেন ।

  • রুকনুদ্দীন বঙ্গদেশের প্রথম স্বাধীন সুলতান বলিয়া পরিচিত। তিনি কাঠ কায়ুস নামে ইতিহাসে উল্লিখিত। তাহার পর তাহার লাতা ফিরোজ শাহ সিংহাসনে আরোহণ করিয়া, ১৩১৮ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত রাজ্যশাসন করিয়াছিলেন । ফিরোজ শাহার পর তাহার পুত্র বোঘর খাঁ সিংহাসনে আরোহণ করেন । এই সময়ে আবার গুহকলহ প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। বোঘর খাকে পরাভূত করিয়া, তাহার ভ্রাতা বাহাদুর শাহ সিংহাসন গ্রহণ করিলে, দিল্লীশ্বর মহম্মদ তোগলক শাহ গৌড়রাজ্য আক্রমণ করেন। এইরূপে বাহাদুর শাহ পদচ্যুত হইলে, নসিরুদ্দীন সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন।

১৩২৬ খৃষ্টাব্দে নসিরুদীনের মৃত্যু হয়। তখন দিল্লীর রাজপ্রতিনিধি কাদির খhশাসনকর্তা নিযুক্ত হইয়াছিলেন। এই সময়ে পূৰ্ব্ববঙ্গে মুসলমান-শাসন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। সুবর্ণগ্রার্মে ஒ খ। রাজত্ব করিতেন। তাহার মৃত্যু হইলে, ফকর উীন সুবর্ণগ্রামের সিংহাসন অধিকার করিয়া, পৌণ্ডবৰ্দ্ধনের সংক্ষিপ্ত পুরাবৃত্ত । 8२७ গৌড়হর্গ আক্রমণ করেন, এবং কারিণাকে নিহত করেন। কাদির খার সেনাপতি অ'লি মোবারক বাহুবলে ফকর উদ্দীনকে পরাভূত করিয়া, আলিশাহ নামে সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন । 發 ১৩৮৬ খৃষ্টাব্দে হাজি ইলিয়াস আঁসিয়া আলি মোবারককে নিহত করিয়া, স্বয়ং সামসুদ্দীন ইলিয়াস নামে সিংহাসনে আরোহণ করেন। উপযুপিরি রাষ্ট্রবিপ্লবে গৌড় বিধ্বস্ত হইয়া গিয়াছিল। তজ্জন্ত সামসুদ্দীন ইলিয়াস, গৌড় পরিত্যাগ করিয়া পাণ্ডুয়ায় রাজধানী প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। ১৩৫৮ খৃষ্টাব্দে দিল্লীশ্বর ইহার সহিত সন্ধি সংস্থাপিত করিয়া, ইহাকে স্বাধীন ভূপতি বলিয়। স্বীকার করিয়াছিলেন। ইহারই পুত্রের নাম শেকন্দর শাহ। তিনি সিংহাসনে আরোহণ করিবার পর “আদিনা” নামক ভুবনবিখ্যাত বিচিত্র মন্দির নিৰ্ম্মাণে হস্তক্ষেপ করিয়া, তাহা সমাপ্ত হইবার পূৰ্ব্বেই, নিহত হইয়াছিলেন। সে কাহিনী-কলঙ্ককাহিনী । পিতাকে নিহত করিয়া পুত্র সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। পুত্রের নাম ঘিয়ামুদ্দীন। তিনি মুরকুতব আলমের সহাধ্যায়ী ছিলেন । পিতৃহস্তার নিধনকাহিনী ইতিহাসে উল্লিগিত আছে। ভাতুড়িয়ার জমিদার গণেশ এই সময়ে বাইজিদ শাহ নামক একজনকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করেন ; পরে নিজেই ১৪০৪ খৃষ্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। গণেশের শাসন সময়ে পাণ্ডুয় আবার দেবমন্দিরে সুশোভিত হইয়া উঠিয়াছিল। রাভেন্‌শ্ব লিখিয়া গিয়াছেন—“গণেশ দশ বৎসর হিন্দুমুসলমানের প্রিয়পাত্র হইয়া রাজ্যশাসন করিয়াছিলেন।”* - গণেশের পুত্রের নাম জাঠমল বা যছ। তিনি মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া, জালালুদ্দীন নামে সিংহাসনে আরোহণ করেন ; এবং ১৪১৪ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৪৩৩ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত রাজ্য-শাসন করিয়া পরলোক গমন করেন। ইহার শাসন-সময় পাণ্ডুয়ার অভু্যদয়যুগ । রাজধানী গৌড়নগরে স্থানান্তরিত হইলেও, পাণ্ডুয়া একেবারে পরিত্যক্ত হয় নাই। জালালুদ্দীনের পুত্র আহমদশাহ সিংহাসনে আরোহণ

  • He reigned for to years, making Pandua his capital, and his popularity with his Mahomadan subjects shows him to have been a sensible and tolerant ruler.– Ravenshaw's Gour, p. 99.