পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা । ] নিল এই খণ, ? শেধ্য পেলে দিন । তৎপরে রামধন গ্রামে প্রবেশ করিয়া এক বাড়ীতে আতিথ্য স্বীকার করিল এবং কথাপ্রসঙ্গে সেই তিলকমালাধারী বৃদ্ধের পরিচয় জানিয়া লইল । বৃদ্ধের নাম জগন্নাথ, জাতিতে স্বর্ণবণিক, ধৰ্ম্মে পরম বৈষ্ণব। সে বেশ সঙ্গতিসম্পন্ন ছিল, কিন্তু দুই দুবৃত্ত অনাচারী মদ্যপ পুত্রের অসাবধান ব্যয়ে বৃদ্ধের অবস্থায় ভাট লাগিয়াছে, ইত্যাদি । রামধন বুঝিল পুত্রের কবল হইতে রক্ষা করিবার জন্তই এই ধনগুপ্তি । রামধন পরদিন প্রাতঃকালে উঠিয় বুদ্ধের বাড়ী গেল এবং বৃদ্ধের সহিত আলাপ করিয়া, তাহার করুণকাহিনী শুনিয়া, বহু সমবেদন ও আশ্বাস দিয়া, বৃদ্ধকে পরম আপ্যায়িত করিয়া আসিল । রামধন কলিকাতায় ফিরিয়া গিয়া একখান সেকেণ্ড ক্লাশ গাড়ী ভাড়া করিয়া একেবারে হোষ্টেলে গিয়া উপস্থিত। তাহার পলায়নে হোষ্টেলময় হৈ চৈ পড়িয়া গিয়াছিল ; তাহার প্রত্যাবর্তনে সমস্ত হোষ্টেল সন্ধ্যাক্সালের কণকসমাকুল বটবৃক্ষের মত, লোষ্ট্ৰাহত মধুচক্রের মত মুখর ব্যস্ত হইয়া উঠিল। কেহ আসিয়া ‘হাও শেকৃ’ করিল, কেহ পিঠে চাপড় কষিল, কেহ নমস্কার করিল, কেহ কুশল জিজ্ঞাসা করিল। শ্ৰীমান রামধন তাহার চিয়ায়ত্ত হাস্তে সকলকে প্রীত-আপ্যায়িত করিয়া আপনার কক্ষে আসিয়া দেখিল, তাহার দ্রব্যাদি সমস্তই স্থানান্তরিত হইয়াছে। জিজ্ঞাসায় জানিল যে পাওনাদারদের নালিশ অনুসারে সমস্ত দ্রব্যাদি হোষ্টেলের জুপিস ঘরে লষ্টয়া রাখা হইয়াছে, এবং অদ্য বেলিফ আসিয়া প্রকাশু নিলামে সমস্ত বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ টাকা oখণানুপাতে সকল পাওনাদারদের মধ্যে বণ্টন করিয়া দিবে। ইহা শুনিয়া রামধন অতিমাত্র বিরক্ত হইয়া, নাসিক কুঞ্চিত করিয়া, স্বর্ণ চসমার স্বচ্ছ অন্তরালে চক্ষু ঘুরাইয়া বলিল, “ফোঃ ফ্রাউণ্ডেলস্ ; ফাই আনৃগ্রেটফুল ক্রটু ! তারা আমাকে এত ছোটলোক মনে করে ?” কেহ কেহ তাহাকে ‘এড্‌ভাইস গ্রাটিস দিল যে, পাওনাদারের ষে রকম চটিয়াছে তাহাতে তাহাদিগকে সহজে রামধনের কীর্তি ^ను তুষ্ট করা যাইবে না । অতএব কোন “ডেঞ্জার ব্রেভ নী করিয়া তাহার গা ঢাকা দেওয়াই ভাল । রামধন হাসিয়া তাহার সদ্যোদগত গুস্ফে একটা পাক দিয়া প্রভুত্বের ভাবে বলিল, “মেক্‌ ইওরসেলভস্ ঈঞ্জি, মাষ্ট ডিয়ার ফ্রেওস্, আই অ্যাম্ কোয়াইটু এ ম্যাচ, ফর দেম্।” তারপরে চোঙার মধ্য হইতে নোটের তাড়া বাহির করিয়া বিস্ময়-বিস্ফারিতলোচন বন্ধুদের জিজ্ঞাসু দৃষ্টির সম্মুখে ধরিয়া রামধন বলিল, “ডোন্ট, ইয়ু থিঙ্ক, আই অ্যাম্ ওয়েল ইকুইপূর্টু’ ” তখন হিপ হিপ হুরে’ এবং "থি চিয়াস ফর রামধন বাবু’ শব্দে (তখন “বন্দে মাতরম্ ধ্বনি প্রচলিত হয় নাই) হোষ্টেল প্রকম্পিত হইয়া উঠিল। রামধন তাহার বিস্মিত জিজ্ঞাসু বন্ধুদিগকে বুঝাইল যে তাহার অলস কৰ্ম্মবিমুখ পাজি নায়েবট জমিদারী হইতে ঠিক সময়ে টাকা পাঠায় নাই বলিয়াই ত’ এত অনর্থ। সে নিজে গিয়া তাহাকে রীতিমত শাসন করিয়া দিয়া এই টাকা লইয়া আসিয়াছে। ইত্যাদি । রামধন সেইদিনই সমস্ত পাওনাদারদের সতিরস্কার দেনা দিল । বন্ধুগণ দেখিয়া আনন্দিত হইল যে, "রামধন বাবু ‘অনারেবলী অ্যাকুইটেড।’ রামধন বন্ধুবৰ্গকে পরিতোষ করিয়া ভোজ দিল । সে দিন ভজহরি পচিশ টাকার রোজবেরি-রসগোল্লার কুলপি বরফ বিক্রয় করিয়াছিল । রামধন এক্ষণে ঠেকিয়া শিথিয়া বিশেষ মিতব্যয়ী ও সংযমী হইল। সে বাহিরের দিকে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল বলিয়া এফ, এ, কোন গতিকে পাশ করিল। কিন্তু তদনন্তর বিশেষ মেধাবী কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠ ছাত্র বলিয়া তাহার নূতনতর খ্যাতি ও প্রতিপত্তি হইল। সে এম, এ, ওবি, এল, পরীক্ষায় উচ্চস্থান অধিকার করিয়া হাইকোর্টের উকিল বিশ্বম্ভর বিশ্বাসের একমাত্র কন্যাকে বিবাহ করিল এবং শ্বশুরের আশ্রয়চ্ছায়ে ওকালতি আরম্ভ করিয়া দিল । রামধন বিবাহলন্ধ ও শ্বশুরদত্ত টাকা বাধিয়া একদিন ডায়মও হারবার অভিমুখে বাত্রা করিল। ডায়মও হারবারে গিয়া বুড়া জগন্নাথের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া তাহাকে সকল কথা খুলিয়া বলিল। বুড়া ত’