পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. ২য় সংখ্যা । ] শত্রু দ্বারা আক্রান্ত এবং আমরাও যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছি— “যুদ্ধের অনন্তবহ্নি জালাও অম্বরে,” বহিষ্কার আমাদের অস্ত্র। অর্থ ষ্ট মানবের একমাত্র সম্পদ নহে, আরও সম্পদ আছে । মনুষ্যত্ব লাভই একমাত্র উদ্দেশু, আর সব উপায় মাত্র। এই থানেই সুতরাং ধৰ্ম্মনীতির ভিত্তি হইতে দ্বিতীয় আপত্তিটি উঠিতেছে । তাই যদি হয় তবে বিশ্বপ্রেমের বিরোধী বহিষ্কার অবলম্বন করিতেছ কেন ? বিশ্বপ্রেম কি মনুষ্যত্বের অন্তর্গত নহে ? বিশ্বপ্রেম মল্লযুত্বের অন্তর্গত ইহা অতি সত্য কথা, কিন্তু যাহার স্বজনপ্রীতি, স্বদেশপ্রীতি নাই, তাহার বিশ্বস্ত্রীতি প্রবঞ্চন মাত্র, ষ্টতা আরও সত্য কথা। তবে যার স্বদেশপ্রীতি আছে তার বিশ্বপ্রীতি নাও থাকিতে পারে, তার স্বদেশপ্রেম তাঙ্গকে পূর্ণ মনুষ্যত্ব চষ্টতে বঞ্চিত করিয়া রাখিতে পারে । সেইজন্স প্রশ্নটির বিচার অবশু কৰ্ত্তব্য, কেন না, যাচা মানুষকে মনুষ্যত্ব হইতে বঞ্চিত করে তাঙ্গ কখনও গ্রহণীয় নহে । কিন্তু “All that glitters is not gold.” Eftsojtstē gai zēHfCE বহিস্কার উপায়, উদ্দেশ্য নহে। উদ্দেশু হটলে নিশ্চয়ই সৰ্ব্বাবস্তাতেই বিশ্বপ্রেমের বিরোধী হইত। অবং বাণিজ্যনৈতিক বহিষ্কারের সঙ্গে বিশ্বপ্রেমের কোন সংঘর্ষ নাই, কেন না, কাপড় বা মুনের সঙ্গে কোন মানুষের প্রেমের আদান প্রদান হয় না । এখানে একটা কথা স্বতঃই আসিতেছে, বিশ্বপ্রেম আদান প্রদানের উপর প্রতিষ্ঠিত, শুধু আদান বা প্রদান নহে । যেখানে আদান প্রদান দুষ্ট নাই, সেখানে আর যাই থাকুক প্রেমের সম্বন্ধ নাই । যাহা হউক, উদ্দেশু এক হইলেও উপায় বিভিন্ন হইতে পারে। যাহা এক অবস্থায় ব্যবস্তা, অবস্তার বিপর্য্যয়ে তাহাই অব্যবস্থা কষ্টয় পুড়ে । যে বিষ স্বাভাবিক অবস্থায় শরীরের বিনাশক, বিকারের রোগীর তাছাই অমৃত, শরীর রক্ষার একমাত্র উপায় । , উদ্দেশ্য যদিও শরীর রক্ষা, তবুও একই বস্তু অবস্তাভেদে শরীরের পক্ষে বিষ ও অমৃত । এই সত্যটি মনে রাখিয়া একবার মানবসমাজের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক । সমাজশরীরেও অনেক রোগ রহিয়াছে এবং তাহারও চিকিৎসা প্রয়োজন । বাত পিত্ত কফের বৈষম্যে যেমন শারীরিক রোগের উৎপত্তি, মানবসমাজের বৈষম্যে তেমনই বিশ্বপ্রেমের বিপত্তি ; যেহেতু, প্রেমের আদান স্বদেশী ও বহিষ্কার । ` ෆ 6. প্রদানে দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের সাম্য চাই, উভয়ের সমপদবীস্থ হওয়া চাই, নহিলে প্রেম হইল না । এখন যদি ইউরোপ ও এসিয়ার কথা বিচার করি তাহা হইলে দেখিতে পাই যে ইউরোপের শ্বেতজাতি সকল এসিয়াকে এমন নিম্ন পদবাস্ত মনে করিতেছে যাহাতে তাহার পক্ষে এসিয়াবাসীকে প্রেম করা অসম্ভব । মানুষ যেমন অরণ্যবাসী পশুদিগকে প্রেম করিতে পারে না, শুক্লজাতিগণও তেমনই শুক্লেতর বর্ণের জাতি সকলকে প্রেমের চক্ষে দেখিতে পারিতেছে না । মানুষ যেমন বনের পশুদিগকে তাড়াইয়া, হত্যা করিয়া অরণ্যে নগর বসায় এবং সে নগরে পশু প্রবেশ করিলে তাতাকে হত্যা করে বা তাড়াইয় দেয়, ইউরোপও এসিয়া সম্বন্ধে তাই করিতেছে । শ্বেতকায়গণ এসিয়ার সৰ্ব্বত্র লুটুপাটু করিয়া বেড়াইবে, কোন বাধা মানিবে না, কিন্তু আফ্রিকায় ষাও, অষ্ট্রেলিয়ায় যাও, কালিফণীয়াতে যা , এসিয়াবাসীকে কুকুর বিড়ালের দ্যায় তাড়াইয়া দিবে। শ্বেতকায়গণ এসিয়াবাসীকে মানুষ বলিয়৷ স্বীকার করিতেছে এরূপ স্তলে বিশ্বপ্রেমের নিশান লষ্টয়া এসিয়ার পক্ষে ইউরোপকে প্রেম করিতে যাওয়া কি “থামাখা গৌরাঙ্গ মোরে রাথ রাঙ্গা পায়” এর মত বাতুলত নহে ? ইউরোপের মদান্ধত দেখিয়া আমরা তাহাকে পশু মনে করিতেছি, আমাদের শক্তিহীনতা দেখিয়া ইউরোপ আমাদিগকে পশু মনে করিতেছে, এরূপ স্থলে প্রেমের কথা উত্থাপন করা বিড়ম্বন মাত্র । ইউরোপ ষে ঐশ্বৰ্য্যমদে মত্ত হইয়৷ মানুষের প্রতি পশুর স্তায় ব্যবহার করিতেছে, তাহাকে.এই মদাঙ্কত হইতে উদ্ধার করিতে না পারিলে বিশ্বমানবের পরিত্রাণ নাই, বিশ্বপ্রেম চিরদিন ভিত্তিহীন থাকিবে । ইউরোপেরও পশুত্ব ঘুচিবে না। এসিয়া তাহার প্রাচীন সভ্যতা, উন্নত নীতি ও ধৰ্ম্মের দ্বারা ইউরোপের চিকিৎসা করিতে পারে বটে, ইউরোপীয় সভ্যতাকে পূর্ণতা দিতে পারে বটে, কিন্তু ইউরোপ প্রভু, এসিয়া দাস। প্রভু দাসের কাছে ধৰ্ম্মেীপদেশ শুনিবে না, কেই কখনও শুনে না । একবার আমেরিকার একটী সভায় একজন বাঙ্গালী নেশা করার বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেন । তাহাতে একজন মার্কিন রমণী তাহার স্বদেশবাসীদিগকে এই বলিয়া উদ্বুদ্ধ করিয়াছিলেন যে একজন ভারতবাসী তাহাদিগকে উপদেশ দেয় ইহ त्मं ।