পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা । ] বলখক দেবমন্দির ভয় করিয়া উপাদান সংগ্রহ করেন এবং তদ্বারা বহুসংখ্যক মসজেদ নিৰ্ম্মিত করিয়া, বিজয়কীৰ্ত্তি সংস্থাপিত করেন। সুতরাং এত কালের পর দেবমন্দিরের চিহ্ন দর্শনের আশা নাই । কিন্তু দেবমন্দিরের ইষ্টকপ্রস্তর ভাঙ্গিয়া লইয়া বক্তিয়ার যে সকল মস্জেদ নিৰ্ম্মিত করিয়াছিলেন, সেই সকল পুরাতন মসজিদই বা এখন কোথায় চলিয়া গিয়াছে ? কেবল সাগরদীঘির অনতিদূরে দুইটি মসজেদ দেখিতে পাওয়া যায়। তাহ মস্জেদের ধ্বংসাবশেষ মাত্র । তাহাও সমধিক পুরাতন নহে;—অপেক্ষাকৃত আধুনিক। তাহারই একটির নাম • ঝুনঝুনিয়া মস্জেদ। গঠনগৌরবে এই মসজেদ পর্য্যটকগণের চিত্তাকর্ষণ করিয়া থাকে। ইষ্টকপ্রস্তরে সুগঠিত,—মুদৃঢ় বলিয়া এখনও ইহা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় নাই । বাহিরের ইষ্টক সজ্জা এবং ভিতরের প্রস্তরস্তম্ভ গৌড়ীয় গঠনপ্রণালীর বিশেষত্ব সুচিত করিতেছে । তাহার প্রধান প্রশংসার বিষয়— রচনাসামঞ্জস্য । মিনার, প্রবেশদ্বার, গম্বুজ পরস্পরের সহিত সামঞ্জস্ত রক্ষা করিতেছে; অভ্যন্তরের খিলান, স্তম্ভ এবং কক্ষগুলিও সেইরূপ। উপরে তৃণগুন্মের অত্যাচারে গম্বুজ ক্ষতিগ্রস্থ হইতেছে ; সুদৃঢ় বলিয়াই এখনও মসজেদটি দণ্ডায়মান আছে। এখানে পর্বোপলক্ষে এখনও জনসমাগম দেখিতে পাওয়া যায় । চতুর্দিকে বিজন বন, তাহার মধ্যে এই বিচিত্র মন্দির,— ফলকলিপি ভিন্ন তাহার আর কোন ইতিহাস প্রাপ্ত হইবার উপায় নাই। ফলকলিপি মস্জেদের প্রবেশদ্বারের শিরোভাগে সংযুক্ত আছে। তাছা “তোগ্রা” অক্ষরে খোদিত। সংক্ষিপ্ত বলিয়, ফলকলিপি পর্যটকের সকল কৌতুহল চরিতার্থ করিতে পারে না । ইতিহাস লেখকের নিকট এই মসজেদ নানা কারণে বহুমূল্য বলিয়া সুপরিচিত। ইহ কোন রাজা বা রাজপুরুষের কীৰ্ত্তি নহে ;–নাগরিকের কীৰ্ত্তি –একটি সম্রাস্ত মুসলমান মহিলার দান • হোসেন শাহ বাদশাহের পুত্ৰ মাহমুদ শাহের শাসনসময়ে হিজরী লক্ষণাবর্তী।

  • Its builder is a lady, may she live long, and may God continue her high position tris rarsffota चष्ट्रवांग । । -

. »8७ همه **مه همه مهوه هاه ৯৪১ শৰে (రి-5 శt) এই মসজিদ নিশিত হইবার কথা ফলকলিপিতে লিখিত আছে। তাহাতে মুসলমান মহিলার নাম নাই ;–কেবল “মহিলা নিৰ্ম্মিত” বলিয়া উল্লেখ আছে। জনশ্রুতি সেই ধৰ্ম্মপ্রাণ মুসলমানমহিলার নামানুসারে অস্থাপি ইহাকে “ঝুনঝুনিয়া-মসজেদ” বলিয়া ব্যক্ত করিয়া আসিতেছে। সেকালে গৌড়ের নাগরিক ঐশ্বৰ্য্য কিরূপ ছিল, মহিলা নিৰ্ম্মিত মস্জেদ দৰ্শন করিলে, তাহার আভাস প্রাপ্ত হওয়া যায়। নাম গোত্রের উল্লেখ না করিয়া নীরবে নিঃস্বার্থভাবে এরূপ বহুমূল্য মস্জেদ নিৰ্ম্মিত করিয়া যে মুসলমানমহিলা ইহলোক পরিত্যাগ করিয়া গিয়াছেন, তাহার কথা জানিবার জন্ত স্বভাবতই কৌতুহল প্রবল হইয় উঠে। সে কৌতুহল চরিতার্থ করিবার উপায় নাই। এই মস্জেদ পারিবারিক উপাসনালয় নহে ; সাধারণের ব্যবহারার্থ উৎসর্গীকৃত “জুমা মস্জেদ"। সে কথা ফলকলিপিতে উল্লিখিত আছে। যে দিন এই সুরচিত সাধারণ উপাসনালয়ে ভক্ত উপাসকগণ প্রথমবার শ্রেণীবদ্ধ হইয়া পরমেশ্বরের পবিত্র নামে সমবেত হইয়াছিলেন, সেদিন গৌড়ের পূর্ব সৌভাগ্য পূর্ণ মাত্রায় বর্তমান ছিল ; মস্জেদের সম্মুখে প্রাঙ্গণ, প্রাঙ্গণের বাহিক্ষর প্রাচীর, প্রাচীরে খিলানযুক্ত প্রবেশ দ্বার, তাহার বাহিরে রাজপথ,—এখন তাহ ধীরে ধীরে ধ্বংসমুখে অগ্রসর হইতেছে! নিকটে জনমানবের বসতি নাই ; কিন্তু সেকালে ঘন বসতি বর্তমান ছিল । নচেৎ এরূপ বহুমূল্য মসজেদের প্রাঙ্গণ সংকীর্ণ হইত না । এখন এখানে ব্যাঘ্রভীতি;—স্থানে স্থানে হলচালনার স্বত্রপাত হইলেও, ব্যাঘ্রভীতি বিদূরিত হয় নাই। শিকারীগণ এখানে আসিয়া বিপৰ্য্যস্ত হইয় পড়েন;--ব্যাঘ্র একবার সাগর দীঘির পাহাড়ের নিবিড় বনে পলায়ন করিলে, তাহার অনুসরণ করা অসম্ভব। এই মসজেদের নিকটেই আর একটি মস্জেদ। তাহা ঠিক মসজিদ নহে, তাহ মকৃদুম আখি সিরাজুদ্দীনের সমাধিমন্দির। প্রাঙ্গণ আছে, প্রাচীর অাছে, প্রবেশদ্বার আছে, পর্বোপলক্ষে জনসমাগমেরও অভাব নাই –কিন্তু সকলই কেমন ঐহীন হইয়া পড়িয়াছে। সংস্কারাভাবে সমাধিমন্দির জরাজীর্ণ হইয় পড়িতেছে । চারিদিকে বৃক্ষলতা প্রশ্রয়লাভ