পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ጎx% বাবুকে শশব্যস্ত হইয়া সংবাদ দিতে গেল হরলাল তখন তাহার শোবার ঘরে মেজের উপর বসিয়া টাকা মিলাইয়া লইতেছিল। বেণু সেই ঘরেই প্রবেশ করিল। আজ তাহার বেশ কিছু নূতন ধরনের। সেখীন ধুতি চাদরের বদলে নধর শরীরে পার্সি কোট ও প্যাণ্টলুন আ টিয়া মাথায় ক্যাপ পরিয়া আসিয়াছে। তাহার দুই হাতের আঙ্গুলে মণিমুক্তার আংটি ঝক্‌মক্‌ করিতেছে। গলা হইতে লম্বিত মোটা সোনার চেনে আবদ্ধ ঘড়ি বুকের পকেটে নিবিষ্ট। কোটের আস্তিনের ভিতর হইতে জামার হাতায় হীরার বোতাম দেখা যাইতেছে। হরলাল টাকা গোনা বন্ধ করিয়া আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিল, একি.ব্যাপার ? এত রাত্রে এ বেশে যে ? বেণু কহিল—পশু বাবার বিবাহ । তিনি আমার . কাছে তাহা গোপন করিয়া রাখিয়াছেন কিন্তু আমি খবর পাইয়াছি। বাবাকে বলিলাম আমি কিছু দিনের জন্ত আমাদের বারাকপুরের বাগানে যাইব । শুনিয়া তিনি ভারি খুসি হইয়া রাজি হইয়াছেন। তাই বাগানে চলিয়াছি ; ইচ্ছা হইতেছে আর ফিরিব না। যদি সাহস থাকিত তবে গঙ্গার জলে ডুবিয়া মরিতাম । বলিতে বলিতে বেণু কঁাদিয়া ফেলিল । হরলালের বুকে যেন ছুরি বিধিতে লাগিল। একজন অপরিচিত স্ত্রীলোক আসিয়া বেণুর মার ঘর, মার খাট, মার স্থান অধিকার করিয়া লইলে বেণুর স্নেহস্থতিজড়িত বাড়ি যে বেণুর পক্ষে কি রকম কণ্টকময় হইয় উঠিবে তাহ হরলাল সমস্ত হৃদয় দিয়া বুঝিতে পারিল । মনে মনে ভাবিল পৃথিবীতে গরীব হইয়া না জন্মিলেও দুঃখের এবং অপমানের অন্ত নাই। বেণুকে কি বলিয়া যে সাস্তুনা দিবে তাহা কিছুই ভাবিয়া ন পাইয়া বেণুর হাতখানা নিজের হাতে লইল । লইবামাত্র একটা তর্ক তাহার মনে উদয় হইল। সে ভাবিল এমন একটা বেদনার সময় বেণু কি করিয়া এত সাজ করিতে পারিল ! হরলাল তাহার আংটির দিকে চোখ রাখিয়াছে দেখিয়া বেণু যেন তাহার মনের প্রশ্নটা আঁচিয়া লইল । সে বলিল এই জাংটি গুলি আমার মায়ের। শুনিয়া হরলাল বহুকষ্টে চোখের জল সাম্‌লাইয়া লইল । কিছুক্ষণ পরে কহিল, বেণু খাইয়া আসিয়াছ ? প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । বেণু কহিল, ই,—আপনার খাওয়া হয় নাই ? হরলাল কছিল, টাকা গুলি গণিয়া আয়রণ চেষ্টে না, তুলিয়া ঘর হইতে বাহির হইতে পারিব না। বেণু কহিল, আপনি খাইয়া আনুন, আপনার সঙ্গে অনেক কথা আছে । আমি ঘরে রহিলাম, মা আপনার थांसांद्र आहेम्नां वनिम्नां श्रांtझन । হরলাল একটু ইতস্ততঃ করিয়া কহিল, আমি চট করিয়া থাইয়া আসিতেছি । হরলাল তাড়াতাড়ি খাওয়া সারিয়া মাকে লইয়া ঘরে প্রবেশ করিল। বেণু তাহাকে প্রণাম করিল, তিনি বেণুর চিবুকের স্পর্শ লইয়া চুম্বন করিলেন। হরলালের কাছে সমস্ত খবর পাইয় তাহার বুক যেন ফাটিয়া যাইতেছিল। নিজের সমস্ত স্নেহ দিয়াও বেণুর অভাব তিনি পূরণ করিতে পারিবেন না এই তাহার দুঃখ । চারিদিকে ছড়ানে টাকার মধ্যে তিনজনে বসিয়া বেণুর ছেলেবেলাকার গল্প হইতে লাগিল । মাষ্টর মশায়ের সঙ্গে জড়িত তাহার কত দিনের কত ঘটনা । তাহার মাঝে মাঝে সেই অসংযত স্নেহশালিনী মার কথাও আসিয়া পড়িতে লাগিল । এমনি করিয়া রাত অনেক হইয়া গেল। হঠাৎ এক সময়ে ঘড়ি খুলিয়া বেণু কছিল, আর নয় দেরি করিলে গাড়ি ফেল করিব । হরলালের মা কহিলেন—বাবা আজ রাত্রে এইখানেই থাক না, কাল সকালে হরলালের সঙ্গে এক সঙ্গেই বাহির হইবে । বেণু মিনতি করিয়া কহিল--ন মা এ অনুরোধ করিবেন না, আজ রাত্রে যে করিয়া হউক আমাকে যাইতেই হইবে। হরলালকে কহিল-মাষ্টার মশায়, এই আংটি ঘড়ি গুলা বাগানে লইয়া যাওয়া নিরাপদ নয়। আপনার কাছেই রাখিয়া যাই, ফিরিয়া আসিয়া লইয়া যাইব । আপনার দরোয়ানকে বলিয়া দিন আমার গাড়ি হইতে চামড়ার হ্যাণ্ডব্যাগটা আনিয়া দিক্ । সেইটের মধ্যে এগুলা রাখিয়া, हेि । 魏 জাপিসের দরোয়ান গাড়ি হইতে ব্যাগ, লইয়া আসিল ।