পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা। ] ভাবে সংশোধন করা তিনি আবশুক মনে করিলেন, যাহাতে সেই আইনের বলে পুনৰ্ব্বিবাহিত বিধবার স্বত্বাধিকার অক্ষুণ্ণ থাকে। এমন কোন উপায় উদ্ভাবন করা আবশ্বক, যাহাতে পুনৰ্ব্বিবাহিত বিধবা জাতিচু্যত হইতে না পারে। ম্যালাবারী জাতির বিরুদ্ধে, পরিবারের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় চাছিলেন। ইংরাজ সরকার মনে করিলেন, এই কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিবার পক্ষে তাহদের কোন গুরুতর আপত্তি নাই । কিন্তু কাজে তাহারী কিছুষ্ট করিলেন না,— র্তাহারা বলিলেন,—“যথেষ্ট সংখ্যক লোক যখন ইহার জন্য প্রার্থনা করিবে, তখনই আমরা কার্যে প্রবৃত্ত হইব।” ইঙ্গভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোন কাজের পরিচালক বা প্রথম প্রবর্তক হইবার অভিমান রাখেন না—তাহারা শুধু লোকমতের অমুসরণ করেন । সংস্কার কার্য্যে ইংরাজ-সরকার নিশ্চয়ষ্ট বহুকাল অপেক্ষ করিয়া থাকিবেন । কেন না, এদেশে, লোকমত বড়ষ্ট মন্থরগামী । চিরপ্রথা ও চির সংস্কারের প্রভাবে এখানকার অধিকসংখ্যক লোকই বিধবাবিবাহের . বিরোধী পক্ষ । পক্ষান্তরে যাহারা সংস্কারকার্য্যে সাহসপূৰ্ব্বক সৰ্ব্বাপেক্ষ অগ্রসর তাহারা সমাজবিপ্লবকারী । কংগ্রেসের সংস্কারক দল কি চাহেন ? সামাজিক-মন্ত্রণা-পরিষৎ এখন কি চাহেন ? পতিকে না জানিয়াও পতি-বিয়োগে যাহাদিগকে চিরজীবন শোক-চিন্তু ধারণ করিতে হয় কেবল সেই বাল-বিধবাদের বিবাহ যাহাতে অনুমোদিত হয়—তাহারা শুধু ইহাই চাহেন। পাতিব্ৰত্যধৰ্ম্ম সম্বন্ধে কি অপূৰ্ব্ব ধারণা ! কিন্তু সব কথা এখানে বলা আবগুক এ স্থলে ধৰ্ম্মের সহিত মানব স্বার্থ জড়িত । বিধবারাও যদি বিবাহের প্রার্থী হয়, তাহা হইলে এ দেশে যত না গ্রাহক তাহ অপেক্ষ মালের আমদানী বেশী হইয় পড়ে। বর্তমান অবস্থায়, বিবাহ-বাজারে কুমারীদের পুরাপুরী লাভ । r. বাল্যবিবাহই যত অনিষ্টের মূল। কোন পরিবারের কোলের শিশুরও বিবাহ দেওয়া হয়-ইহাতে নিজের মুখ-সুবিধা ছাড়া আর কাহারও স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য করা হয় না । এই স্থলে পারিবারিক স্বার্থই সৰ্ব্বোপরি প্রভূত্ব করে। পরিবারের কর্তৃপক্ষ আপনার ইচ্ছা অনুসারে, সমসাময়িক ভারত । খৃষ্টাব্দে যে বিধবাবিবাহের আইন हर, ભરે आहेन રે ミ>> আপনার স্বার্থ অনুসারে যেমন একদিকে নবজাত কষ্ঠা সস্তানকে হত্যা করেন, বিধবাকে চিতানলে দগ্ধ করেন, সেইরূপ বালিকারও বিবাহ দিয়া থাকেন। * আমি পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, ১৮৯১ খ্ৰীষ্টাব্দের আদমসুমারির হিসাব-অঙ্ক, নীরব জলস্ত ভাষায় সমস্ত গৃঢ় কথা প্রকাশ করিয়াছে। দশ বৎসরের কম বয়সের ২০ লক্ষ বিবাহিত বালিকা ; তন্মধ্যে ৬২,০ ০ • বালিকা বিধবা হয়। ৫ বৎসরের কম বয়সের ৫-১৯ পুং-শিশুর বিবাহ হয়। এইসব অপরিপক বিবাহের পরিণাম অতীব বীভৎস । আমরা দেখিয়াছি কতক সংখ্যক ক্ষুদ্র বালিকা চিরবৈধব্য ভোগ করে এবং আর কতকগুলির জন্ত আইনসঙ্গত বলাৎকার নির্দিষ্ট! আকৃবর অপরিপক্ক পাত্রের বিবাহ নিষেধ করিয়াছিলেন । হিন্দুধৰ্ম্মের বক্ষের মধ্যেই, সুসংস্কৃত ধৰ্ম্মসম্প্রদায়সকল বাক্য ও দৃষ্টান্তের দ্বারা ইহার বিষময় পরিণামের কথা প্রচার করিয়াছেন। বিশেষতঃ বঙ্গদেশে রামমোহন রায় যে ব্রাহ্মসমাজ সংস্থাপন করেন এবং যেখানে রামমোহন রায়ের অন্তরগত মূল-ভাবটি বহুকাল যাবৎ অক্ষুণ্ণ ছিল, সেই ব্রাহ্মসমাজের চেষ্টায়, বিবাহ-যোগ্য বয়সের নিম্নতম সীমা, পুরুষের জন্য ১৮ বৎসর ও স্ত্রীলোকের জন্য ১৪ বৎসর নিৰ্দ্ধারিত হইলু। এস্ মেন্‌ সাহেব এই আইনের পাণ্ডুলিপি ব্যবস্থাপক সভায় উপস্থিত করেন । এই ছঃসাহসিক উন্নতিসাধক প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রাচীন সম্প্রদায় হইতে তীব্র প্রতিবাদ সমুখিত হইল। এই প্রতিবাদে সরকার বাহাদুর আবার একটু পিছাইয়া গেলেন। এই আইন ব্রাহ্মদের মধ্যেই বদ্ধ রহিল। কিন্তু ১৮৯০ খ্ৰীষ্টাব্দে একটি নববিবাহিত বালিকা, তাহার নির্লজ্জ পতির হস্তে আঁকালে সমপিত হওয়ায়, বলাৎকারের ফলে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। স্ত্রীস্বত্বসমর্থক মালাবারি, এই কলঙ্ককাহিনী চারিদিকে খুব ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত করিয়া তুলিলেন। ১৮৯২ খ্ৰীষ্টাব্দের জাতীয় মন্ত্রণা-সভা, বালিকার বিবাহ-যোগ্য বয়সের নিম্নতম সীমার বৃদ্ধি করিবার জন্য প্রার্থী হইলেন। সাধারণের ধৰ্ম্মজ্ঞান এইবার মৰ্ম্মাহত হওয়ায়, ইংরাজ সরকার বাধ্য হইয়া বিবাহের চরম-পরিণতির নিম্নতম সীমা বাড়াইয়া দ্বাদশবর্ষ নিৰ্দ্ধারিত করিলেন। চতুর্দশ সামাজিক মন্ত্রণাসভা—যাহার অধিবেশনে ১৯• • খ্ৰীষ্টাব্দে ডিসেম্বরের শেষে আমি উপস্থিত ছিলাম—সেই