পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8० সম্বন্ধ পাতাইতে গেলে ক্ষুদ্রব্যক্তির কাছেও তাহা বিস্বাদ ৰোধ হয়—সে উদেণ্ড খুব বড় হইতে পারে, হউক তাহার মাম “বয়কটু” বা “স্বরাজ”, দেশের উন্নতি বা আর কিছু। মানুষ বলিয়া শ্রদ্ধাবশত ও স্বদেশী বলিয়া স্নেহবশত আমরা যদি সহজেই দেশের জনসাধারণকে ভাল বাসিতাম, ইংরেজি শিক্ষায় আমাদের পরম্পরের মধ্যে বিচ্ছেদ না ঘটাইয় মিলনকে যদি দৃঢ় করিতে পারিত—তাহাদের মাঝখানে থাকিয় তাহাদের আপন হইয় তাহীদের সর্বপ্রকার হিতসাধনে যদি আমাদের উপেক্ষ বা অলিন্ত না থাকিত তবে আজ বিপদ বা ক্ষতির মুখে তাহাদিগকে ডাক পাড়িলে সেটা অসঙ্গত শুনিতে হইত না । হিন্দু মুসলমান এক হইলে পরস্পরের কত সুবিধা একদিন কোন সভায় মুসলমান শ্রোতাদিগকে তাহাই বুঝাहे? বলা হইতেছিল । তখন আমি এই কথাটি না বলিয়া থাকিতে পারি নাই যে, সুবিধার কথাটা এস্থলে মুখে আনিবার নহে ; দুই ভাই এক হইয়া থাকিলে বিষয়কৰ্ম্ম ভাল চলে কিন্তু সেইটেই দুই ভাই এক থাকিবার প্রধান হেতু হওয়া উচিত নহে । কারণ, ঘটনাক্রমে সুবিধার গতি পরিবর্তন হওয়াও আশ্চৰ্য্য কর নহে। আসল কথা, আমরা । একদেশে এক সুখদুঃখের মধ্যে একত্রে বাস করি, আমরা মানুষ, আমরা যদি এক ন হই তবে সে লজ্জা, সে অধৰ্ম্ম ; আমরা উভয়েই এক দেশের সন্তান—আমরা ঈশ্বরকৃত সেই ধৰ্ম্মের বন্ধনবশত শুধু সুবিধা নহে অসুবিধাও একত্রে ভোগ করিতে প্রস্তুত যদি না হই তবে আমাদের মনুষ্যত্বে ধিক্ ! আমাদের পরস্পরের মধ্যে, সুবিধার চর্চা নহে, প্রেমের চর্চা, নিঃস্বার্থ সেবার চর্চা যদি করি তবে সুবিধা উপস্থিত হইলে তাহ পুরা গ্রহণ করিতে পারিব এবং অসুবিধা উপস্থিত হইলেও তাহাকে বুক দিয়া ঠেকাইতে পারিব । এইজন্ত অস্তকার অত্যন্ত উত্তেজনার দিনেও আমাকে একথা বলিতে হইতেছে যে স্পৰ্দ্ধা করিবার লড়াই করিবার দিন আজ আমাদের নহে। পদ্ধ করাটা শক্তিমানের পক্ষে একটা বিলাসের স্বরূপ হইতে পারে কিন্তু অশক্তের পক্ষে তাৰ দেউলে হইবার পন্থা। যে শক্তি তাহাতে অপব্যয় হয় তাহ খরচ করিবার সম্বল আমাদের আছে কি ? শুধু ভাই নয়, যে হিসাবের উপর নির্ভর করিয়া আমরা এতটা প্রবাসী । [ १ञ छांनं । আস্ফালন করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছি সে হিসাবটা কি ভালরূপ পরীক্ষা করিয়া দেখা হইয়াছে ? যে নৌকায় কোনোমতে ভর সন্ন মাত্র সে নৌকায় নৃত্য করিতে সুরু করিলে যদি তাহার ফাটগুল দিয়া জল উঠিতে থাকে তবে সেটাকে আমরা এমন অভাবনীয় বলিয়া মনে করি কেন ? এই নৃত্যব্যাপারে আমি আপত্তি করিতে চাই না কিন্তু ইহাই যদি আমাদের অভিপ্রায় থাকে তবে একটু সৰুর করিয়া অন্তত ঐ ফাটাগুলো সারাইয়া লইতে হইবে ত –তাহার্তে বিলম্ব হইবে । তা হইবে বটে কিন্তু জগতের মধ্যে আমরা এমন পুণ্য করি নাই যে ভাঙা আসবাব লইয়া কাজও করিব, দুর্লভ ধনলাভও করিব, অথচ বিলম্বও ঘটবে না ।" । তবে করিতে হইবে কি ? আর কিছু নয়, স্বদেশ সম্বন্ধে স্বদেশীর যে দায়িত্ব আছে তাহা সৰ্ব্বসাধারণের কাছে স্পষ্টরূপে প্রত্যক্ষ করিয়া তুলিতে হইবে । পুরাতন দলই হউন আর নূতন দলই হউন যিনি পারেন একটা কাজের আয়োজন করুন। প্রমাণ করুন যে দেশের ভার তাহারা লইতে পারেন। তাহদের মত কি সে ত বারম্বার শুনিয়াছি, র্তাহাদের কাজ কি কেবল সেইটেই দেখা হইল না । দেশের সমস্ত সামর্থ্যকে একত্রে টানিয়া যদি তাহাকে একটা কলেবর দান করিতে না পারি, যদি সেইখান হইতে স্বচেষ্টায় দেশের অন্নবস্ত্র স্বাস্থ্য ও শিক্ষার একটা সুবিহিত ব্যবস্থা করিয়া তোলা আমাদের সকল দলের পক্ষেই অসম্ভব হয়, যদি আমাদের কোনো প্রকার কৰ্ম্মনীতি ও কৰ্ম্মসঙ্কল্প না থাকে তবে আজিকার এই আস্ফালন কাল আমাদিগকে নিষ্ফল অবসাদের মধ্যে ধাক্কা দিয়া ফেলিয়া দিবে। যদি সকলে মিলিয়া একটা কাজেসময়োজন গড়িয়ঃ তুলিবার শক্তি আজও আমাদের না হইয়া থাকে তৰে অগত্যা আমাদিগকে নিভৃতে নিঃশব্দে ব্যক্তিগত চেষ্টায় প্রবৃত্ত হইতে হইবে । কিন্তু যদি আমরা অসময়ে ঔদ্ধত্য করিতে থাকি সেই বিচ্ছিন্ন চেষ্টার ক্ষেত্র একেবারে নষ্ট হয় । গর্ভিণীকে সমস্ত অপঘাত হইতে নিজেকে বঁাচাইয়t সাবধানে চলিতে হয়—সেই সতর্কত ভীরুত নহে, তাহী তাহার কর্তব্য। \ - আজও আমাদের দেশ সম্মিলিত কৰ্ম্মচেষ্টায় জাসিয়া পৌছিতে পারে নাই, একক চেষ্টার যুগে অাছে, একথা ৰখন: