পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা । ] , সকলের চেয়ে কঠিন সমস্ত নহে ; অথবা সকলের চেয়ে কঠিন সমস্ত যে কোনটী তাহ বলা যায় না। -ছাত্রদের উপর উৎপীড়ন করিয়া তাহাদিগের পশ্চাতে গোয়েন্দা লাগাইয়া তাহাদিগকে সম্পূর্ণরূপে কাপুরুষ করিবার আয়োজন সৰ্ব্বত্র হইতেছে। যে অধ্যাপক ও শিক্ষকদিগকে তাহারা পিতৃতুল্য মনে করিয়া ভক্তি করিবে, সেই পূজনীয় ব্যক্তিগণকেই তাঁহাদের পশ্চাতে গোয়েন্দার কাজ করিতে হইতেছে! কোন কোন অধ্যাপক ও শিক্ষক ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতের পুতুলস্বরূপ ইষ্টয়া এই ঘৃণিত কাজ করিতেছে। ধিক তাহাদিগকে ! গবর্ণমেণ্ট সৰ্ব্বত্র যে ছাত্রাবাসবিশিষ্ট কলেজ ও স্কুলের জঙ্গ এত ব্যগ্রতা দেখাইতেছেন, তাহা ছাত্রদের মঙ্গলের জন্ত নয় ; তাহাদিগকে সৰ্ব্বদা দাগী বদমায়েসের মত নজরবন্দী রাথিবীর জন্য । এই গোয়েন্দার নাগপাশ হইতে তাহাদিগকে রক্ষা করিতে না পারিলে তাহাঁদের প্রকৃত শিক্ষা কেমন করিয়া হইবে, ভবিষ্যতে দেশের কাজ করিবার জন্য লোকই বা কোথায় পাওয়া যাইবে ? অতএব, আমাদের ছাত্রদের সুশিক্ষার বন্দোবস্ত আমাদিগকে করিতে হইবে । চাকরী ও ওকালতী, জীবিকার এই দুষ্ট পথই স্বাধীন শিক্ষায় বন্ধ হইবে । সুতরাং অন্ততঃ প্রথম প্রথম স্বাধীন বৃত্তিশিক্ষা স্বাধীন শিক্ষার প্রধান অঙ্গ হওয়া চাই । হিন্দু-মুসলমানে, শিক্ষিতে অশিক্ষিতে, জমীদারে রায়তে, ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশবাসীর মধ্যে, গবর্ণমেণ্ট সৰ্ব্বপ্রযত্নে ঝগড়া বাধাইতেছেন, এবং বরাবর বাধাইবেন । কেন না, গবর্ণমেন্টের এই ভেদনীতিই প্রধান সম্বল। আমাদিগকে সৰ্ব্বপ্রকার বিদ্বেষবুদ্ধি ত্যাগ করিয়া পরস্পরের মধ্যে সদ্ভাব উৎপাদন করিতে হইবে। মুখের সদ্ভাব নহে,—চিস্তার, অন্তরের, হৃদয়ের সম্ভাব। কেন না, ভিতরে বিষ থাকিলে বাহিরে কুফল ফলিবেই। দেশের সর্বত্র অন্নাভাব, জলাভাব, স্বাস্থ্যের অভাব। পল্লীগ্রামগুলির দিকে সকলে দৃষ্টিপাত করুন। বিবিধ প্রসঙ্গ । ૨ જ নারীর অবস্থার উন্নতি একান্ত প্রয়োজন। কেবল পুরুষের উন্নতি সম্ভবও নয়, এবং সম্ভব হইলেও, তাহতে দেশের উন্নতি হইবে না ; কারণ নারী দেশের অধিবাসীর অৰ্দ্ধেক ৷ হইলেও, নারীর নিজের আত্মার জন্ত, উন্নতির, জ্ঞানলাভের, ধৰ্ম্মলাভের, মোক্ষলাভের সকল পথ মুক্ত থাকা চাই। বালবিধবার উষ্ণ নিশ্বাসে আমাদের সমুদয় আশাভরসা পুড়িয়া ছাই হইয়া যাইতেছে এবং পরে আরও যাইবে। তাহাদের অনেকে ত পাপপঙ্কে নিমগ্ন হইতেছে, অধিকন্তু জাতীয় চরিত্র হীন হইয়া যাইতেছে। o ঙ্গে স্বদেশপ্রেমিক, সকলদিকে দৃষ্টি রাখিয়া সকল বিষয়ে উন্নতির পথে অগ্রসর হউন। যিনি যে প্রকারে পারেন, সাধারণ নিরক্ষর লোকদের শিক্ষার বন্দোবস্ত করুন। প্রত্যেক শিক্ষিত লোকে অন্ততঃ একজন লোককেও শিক্ষাদান করুন । ভারতবর্ষের প্রজাদিগকে নিরস্ত্র করিয়া কাপুরুষ করা হইয়াছে। তাহার পর এক একটি করিয়া ভারতীয় জাতিকে সিপাহী হইবার অধিকার হইতে বঞ্চিত করা হইতেছে। অথচ সকলেরই এই অধিকার থাকা উচিত। বাঙ্গালী ও তেলেঙ্গ আগে সৈন্ত হইত ; এখন আর হইতে পায় না। মারাঠা ব্রাহ্মণ আর সৈন্ত হইতে পারে না। এইরূপে এখন যাহারা সিপাহী হয়, তাহাদিগকেও হয়ত সৈনিক বিভাগ হইতে তাড়ান হইবে। কারণ, ভারতবাসী ছাড়া এশিয়ার আর কোন কোন জাতি ও আফ্রিকার কোন কোন জাতিকে সৈন্ত করা যাইতে পারে, তাহার আলোচনা সরকার পক্ষ হইতে অনেকবার করা হইয়াছে। তা ছাড়া, যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র যে কামান, ভারতবাসীর তাহার সহিত কোন সম্পর্ক নাই। ভারতবাসী খুব ভাল গোলন্দাজ হইত। কিন্তু এখন কেহ গোলন্দাজ হইতে পায় না। ’ এই প্রকারে যে নানা উপায়ে ভারতবাসীকে পৌরুষ . হীন করা হইতেছে, ইহার উপায় কি ? যুগান্তরের সম্পাদক বাবু ভূপেন্দ্রনাথ দত্তের অকপটতা ও নির্ভীকতার আমরা মুক্তকণ্ঠে প্রশংসা করি। দেশের